
ছবি:সংগৃহীত
ক্যালসিয়ামের নাম শুনলেই আমাদের প্রথমে মনে আসে হাড়ের স্বাস্থ্য। কিন্তু শুধু হাড় নয় – আমাদের দাঁত, চুল এমনকি মগজের সুস্থতাও নির্ভর করে শরীরে পর্যাপ্ত ক্যালসিয়ামের উপস্থিতির উপর।
আর ক্যালসিয়ামের উৎস বলতে আমরা সাধারণত দুধের কথাই ভাবি। অথচ আমাদের আশেপাশে এমন অনেক খাবার আছে, যেগুলো থেকে আমরা দুধের চেয়েও বেশি ক্যালসিয়াম পেতে পারি। কিন্তু আফসোস, আমরা অনেকেই এই খাবারগুলোর সম্পর্কে জানি না।
আজকের ভিডিওতে আমরা এমন সাতটি সুলভ ও সহজলভ্য খাবার নিয়ে কথা বলব, যেগুলো ক্যালসিয়ামের দারুণ উৎস এবং প্রতিদিনের চাহিদা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
দৈনিক ক্যালসিয়ামের চাহিদা:
- সাধারণ প্রাপ্তবয়স্ক: ৮০০ মি.গ্রা.
- গর্ভবতী নারী: ১০০০ মি.গ্রা.
- দুগ্ধদানকারী নারী: ১২০০ মি.গ্রা.
- বয়স্ক ব্যক্তি: প্রায় ২০০০ মি.গ্রা.
জেনে রাখা ভালো, শরীরে ক্যালসিয়াম জমা হয় নির্দিষ্ট এক বয়স পর্যন্ত। তারপর আর নতুন করে জমা হয় না, বরং ধীরে ধীরে ক্ষয় হতে থাকে – যার ফলেই দেখা দেয় বিভিন্ন ব্যথা-বেদনা। তাই শুরু থেকেই আমাদের ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন ডি এর দিকে সচেতন থাকা দরকার।
১. সজিনা পাতা:
এই পাতাটি সারা বছরই সহজলভ্য। প্রতি ১০০ গ্রাম সজিনা পাতা থেকে পাওয়া যায় প্রায় ১৮৫ মি.গ্রা. ক্যালসিয়াম। সঙ্গে থাকে ভিটামিন এ, সি ও অ্যামিনো অ্যাসিড। ভর্তা, ডাল, সবজি বা বড়া যেভাবেই খান, উপকার পাবেনই।
২. চিয়া সিড:
দুই টেবিল চামচ চিয়া সিডেই রয়েছে ১৭৭ মি.গ্রা. ক্যালসিয়াম। এছাড়াও এতে ওমেগা-৩ ও ফাইবার থাকে। পানিতে ভিজিয়ে বা স্মুদি, ওটস, সালাদ ইত্যাদির সাথে খাওয়া যায়।
৩. কাঠবাদাম:
প্রায় ২৮ গ্রাম বাদামে থাকে ৭৬ মি.গ্রা. ক্যালসিয়াম। এটি হার্টের জন্যও উপকারী এবং কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।
৪. ইয়োগার্ট (দই):
এক কাপ (২৫০ গ্রাম) ইয়োগার্টে থাকে প্রায় ৪৫০ মি.গ্রা. ক্যালসিয়াম। পাশাপাশি, এটি প্রোবায়োটিক হিসেবে কাজ করে, হজমে সাহায্য করে।
৫. পালং শাক:
শীতকালীন এই সবজি থেকে এক কাপ রান্না করা পালং শাকে মেলে ২৪৫ মি.গ্রা. ক্যালসিয়াম। এর ভিটামিন ই দারুণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবেও কাজ করে।
৬. ঢেরস (ভেন্ডি):
এক কাপ রান্না করা ঢেরসে পাওয়া যায় ১২৩ মি.গ্রা. ক্যালসিয়াম। ফাইবার, ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর।
৭. ব্রোকলি:
এক কাপ ব্রোকলিতে রয়েছে প্রায় ৬২ মি.গ্রা. ক্যালসিয়াম। এটি স্যুপ, ফ্রাইড রাইস বা অন্যান্য ভেজি হিসেবে খাওয়া যায়।
ক্যালসিয়াম শোষণে সহায়ক খাবার:
যদিও ভিটামিন সি যুক্ত ফল (যেমন পেয়ারা, কমলা, স্ট্রবেরি) ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ নয়, তবুও এগুলো শরীরে ক্যালসিয়ামের শোষণ (absorption) বাড়ায়। তাই চেষ্টা করুন কম্বিনেশন করে খেতে – যেমন:
আমন্ড + অরেঞ্জ জুস
চিয়া পুডিং + স্ট্রবেরি
ইয়োগার্ট + কমলা
ভিটামিন ডি এবং ক্যালসিয়াম – এরা একে অপরের পরিপূরক। শরীরে যদি ভিটামিন ডি না থাকে, তাহলে ক্যালসিয়াম ঠিকভাবে কাজই করবে না। তাই রোদে থাকা, ভিটামিন ডি যুক্ত খাবার খাওয়া কিংবা প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শে সাপ্লিমেন্ট নেওয়াও জরুরি।
মারিয়া