
ছবি: প্রতীকী
ওজন কমানো অনেকের কাছেই এক দুরূহ কাজ। এটি যেমন পরিশ্রমসাধ্য, তেমনি দীর্ঘস্থায়ী চেষ্টা ও মনোবলের প্রয়োজন হয়। মাসের পর মাস, এমনকি বছরের পর বছর ধরে নিয়মিত ডায়েট ও ব্যায়াম বজায় রাখার পরই এর সুফল পাওয়া যায়। তবে সবার পক্ষে এই কঠিন সংগ্রাম ধরে রাখা সম্ভব হয় না।
বিশেষ করে কিছু নির্দিষ্ট ধরণের মানুষের জন্য ওজন কমানো প্রায় অসম্ভব হয়ে ওঠে— যদি না তারা নিজেকে পরিবর্তন করেন। নিচে এমনই পাঁচ ধরনের মানুষের কথা তুলে ধরা হলো, যাদের ওজন কখনোই কমবে না— যদি তারা নিজেদের অভ্যাস ও মানসিকতা না বদলান।
১. অতিরিক্ত ভোজনরসিক মানুষ
ওজন কমানোর ক্ষেত্রে ৮০ ভাগ গুরুত্ব খাদ্য নিয়ন্ত্রণের, আর মাত্র ২০ ভাগ ব্যায়ামের ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু কিছু মানুষ আছেন, যারা খাওয়া থামাতে পারেন না— সেটা স্বাস্থ্যকর হোক বা অস্বাস্থ্যকর। অতিরিক্ত স্বাদের পেছনে ছুটতে গিয়ে বা মানসিক স্বস্তির খোঁজে তারা বারবার খাওয়ায় মগ্ন হন। এমনকি পেট ভরলেও থামেন না। এতে অতিরিক্ত ক্যালোরি জমে গিয়ে ওজন ক্রমশ বাড়তেই থাকে।
২. অলস জীবনযাপনকারী
শুধু খাবার নিয়ন্ত্রণ করলেই চলবে না, শরীর সচল রাখতে ব্যায়াম জরুরি। যারা অলসভাবে সময় কাটান কিংবা ব্যায়াম করতে চান না, তাদের শরীর সহজেই চর্বি জমিয়ে রাখে। ফলে ওজন কমানো তাদের জন্য প্রায় অসম্ভব হয়ে ওঠে।
৩. আবেগপ্রবণ খাদক
যারা মানসিক চাপে ভোগেন, তারা প্রায়শই উচ্চ ক্যালোরিযুক্ত খাবার খেয়ে সাময়িক স্বস্তি পাওয়ার চেষ্টা করেন। এ ধরনের খাওয়ার অভ্যাসের পেছনে কাজ করে কর্টিসল নামক হরমোন, যা পেটের চারপাশে চর্বি জমাতে সাহায্য করে। এতে করে ওজন কমার পরিবর্তে আরও বাড়ে।
৪. 'সেট পয়েন্ট'-এ আটকে যাওয়া ব্যক্তি
শরীরের একটি স্বাভাবিক ওজনসীমা থাকে, যাকে বলে “সেট পয়েন্ট”। এক সময় শরীর সেট পয়েন্ট রক্ষা করতে ক্ষুধা বাড়িয়ে দেয় ও বিপাকক্রিয়া কমিয়ে ফেলে, যাতে ওজন আর না কমে। এ অবস্থায় নিজেকে চ্যালেঞ্জ করে অভ্যাস বদলানো না গেলে ওজন কমানো কঠিন।
৫. বিভ্রান্ত ডায়েট অনুসারী
অনেকে মনে করেন শুধু স্বাস্থ্যকর খাবার খেলেই ওজন কমে যাবে। কিন্তু খাবারের পরিমাণ, সময়, পুষ্টির ভারসাম্য, ও পানীয় গ্রহণ— এসব বিষয় উপেক্ষা করলে কাঙ্ক্ষিত ফল মেলে না। এছাড়া বিরক্তি, মানসিক চাপ বা অন্যমনস্ক অবস্থায় অজান্তেই অতিরিক্ত খাবার খাওয়া হয়ে যায়, যা ডায়েটের পুরো প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দেয়।
ওজন কমাতে হলে শুধু খাবার বা ব্যায়ামের দিকে মনোযোগ দিলেই হবে না। দরকার পূর্ণ জীবনযাপনের পরিবর্তন— যার মধ্যে রয়েছে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত ব্যায়াম, মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ ও পর্যাপ্ত ঘুম। এই চারটি বিষয় একসাথে গুরুত্ব না দিলে ওজন কমানো দীর্ঘমেয়াদে সফল হবে না। এখনই নিজেকে বদলান— নইলে আপনি হয়তো এই পাঁচ ধরনের মানুষের একজন হয়ে থাকবেন, যাদের ওজন কোনোদিনই কমে না।
এম.কে.