প্রতীকী ছবি।
জীবন পরিচালনার জন্য কেউ কেউ নিজেই ব্যবসা শুরু করেন অথবা পারিবারিকভাবে পাওয়া ব্যবসায় মনোযোগী হয়ে উঠেন। তবে অধিকাংশ মানুষই আবার বেছে নেন চাকরি। এই সুবাদে একই প্রতিষ্ঠানে অনেক সময় দীর্ঘদিন কাজ করতে হয় আমাদের। এ সময় অফিসে বিভিন্ন ক্ষেত্রে ছোট ছোট কিছু সমস্যা দেখা দিয়ে থাকে। আবার অনেক সময় কাজের ভুল বা অন্য কোনো কারণে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা কটু কথা শুনিয়ে থাকেন।
এদিকে, সব মেনে নিয়েই কর্মস্থলে নিয়মিত কাজ করতে হয়। তবে এরইমধ্যে কেউ কেউ আবার কারো কটু কথা কিংবা দুর্ব্যবহার মেনে নিতে নারাজ। ফলে চাকড়ি ছেড়ে দেওয়ার মতো সিদ্ধান্ত নেন, যা প্রায় সময়ই ভুল সিদ্ধান্ত থাকে। তবে চাকরি ছেড়ে দেয়ার মতো উল্লেখযোগ্য কিছু কারণ রয়েছে, যার মুখোমুখি হলে আপনি চাকরি ছেড়ে দিতে পারেন।
কাজ নিয়ে দুশ্চিন্তা বোধ:
কর্মস্থলে নিজের ওপর অর্পিত কাজ নিয়ে যদি সর্বক্ষণ উদ্বিগ্ন থাকেন বা দুশ্চিন্তা বোধ করেন, তাহলে কাজে ভুল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে বেশি। সবসময় যদি মানসিকভাবে কাজের চাপ, ব্যর্থতার ভয় বা সহর্কমীরা অসহনশীল আচরণ করবে কিনা তা ভাবেন তাহলে কাজে প্রভাব পড়বে। আবার অফিসে কী করছেন, সেই কাজের ওপর নিয়ন্ত্রণ না থাকা, চাকরির নিরাপত্তাহীনতা না থাকাও উদ্বেগ বাড়িয়ে তুলতে পারে আপনার। এসব যদি ক্রমশ আপনার ওপর ভর করতে থাকে, তাহলে কর্মস্থল ও নিজের মানসিক সুস্থতার জন্য প্রতিষ্ঠান ছেড়ে দেয়ার বিষয়টি বিবেচনা করা উচিত।
সবসময় ক্লান্তি বোধ:
শারীরিক ও মানসিকভাবে যদি সবসময় ক্লান্তি অনুভব করেন, তাহলে আপনার চাকরি ছেড়ে দেয়ার বিষয়টি ভাবার সময় হয়েছে। এ অবস্থায় কর্মস্থলে আপনার উৎপাদনশীলতায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলার পাশাপাশি স্বাস্থ্য, সম্পর্ক এবং সামগ্রিক সবকিছু ক্ষতির মুখে ফেলতে পারে। এ জন্য সর্বক্ষণ ক্লান্তি কাজ করলে শিগগিরই চাকরি ছাড়ার সময় হয়েছে আপনার।
তিক্ত পরিবেশ:
কর্মস্থল যদি আপনার কাছে তিক্ত কিংবা বিষাক্ত মনে হয়, যেখানে কাজের থেকে গসিপিং, বিশৃঙ্খলা ও রাজনীতি হয়, তাহলে চাকরি ছেড়ে দেয়া উচিত। কাজের পরিবেশ এমনটা হলে শুধু প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি নয়, বরং একজন পেশাদার ব্যক্তি হিসেবে আপনার নিজেরও ক্ষতি। কর্মস্থলে কাজের সুষ্ঠু পরিবেশ না থাকলে আপনার উৎপাদনশীলতা হ্রাস পাবে। একইসঙ্গে ব্যক্তি দক্ষতায় ব্যাপক প্রভাব পড়বে।
ভারসাম্যহীন কর্মজীবন:
অফিসের কাজ যদি আপনার পুরো সময় কেড়ে নেয়, ব্যক্তিগত কর্মকাণ্ড, সম্পর্ক ও বিনোদনমূলক ক্ষেত্রে ব্যাপক প্রভাব ফেলে, তাহলে সেই কাজ আপনাকে হতাশা ও বিরক্তিকর করে তুলতে পারে। কর্মস্থলের এমন ভারসাম্যহীনতা ব্যক্তি ও কর্মজীবন এলোমেলো করে দেয়। আর স্বাভাবিকভাবেই দীর্ঘ সময় কাজ করলে কাজের মান এবং আপনার মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্য, সব ক্ষেত্রেই নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
অবমূল্যায়ন অনুভব:
কর্মস্থলে যদি মনে করেন আপনার কঠোর পরিশ্রমকে নিয়মিত অবজ্ঞা করা হয় বা পরিশ্রম অনুযায়ী পারিশ্রমিক প্রদান করা হয় না, তখন এটি স্পষ্ট আপনাকে মূল্যায়ন করা হচ্ছে না। আপনার অবদান বিবেচনা না করে, অতিরিক্ত কাজের পরও পদোন্নতির সময় আপনাকে উপেক্ষা করা হয় এবং পারিশ্রমিকও যথেষ্ট নয়, তাহলে শিগগিরই চাকরি ছাড়ার কথা ভাবুন। কেননা, আপনি একজন দক্ষ পেশাদার ব্যক্তি হওয়ার পর পরিশ্রম অনুযায়ী অর্থ, সম্মান আপনার জন্য প্রাপ্য ও গুরুত্বপূর্ণ।
এম হাসান