
ছবি: সংগৃহীত।
নিউইয়র্ক সিটির মিডটাউন ম্যানহাটনের একটি বহুতল ভবনে সোমবার সন্ধ্যায় এক বন্দুকধারী হামলা চালিয়ে এক পুলিশ কর্মকর্তাসহ চারজনকে গুলি করে হত্যা করে এবং আরও একজনকে গুরুতরভাবে আহত করে। পরে ওই বন্দুকধারী নিজেই আত্মহত্যা করে বলে জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ।
পুলিশ কমিশনার জেসিকা টিশ জানান, নিহতদের মধ্যে তিনজন ভবনের লবিতে গুলিবিদ্ধ হন, যেখানে বন্দুকধারী বেপরোয়াভাবে গুলি চালায়। চতুর্থজনকে সে ভবনের উপরের তলায় লিফটে উঠে হত্যা করে এবং পরে নিজেকে বুকে গুলি করে আত্মহত্যা করে।
ঘটনাটি ঘটে ৩৪৫ পার্ক অ্যাভিনিউ ভবনে, যেখানে আতঙ্কিত ভাড়াটিয়ারা তাৎক্ষণিক লকডাউনে চলে যায়। দিনের শেষে হঠাৎ ঘটে যাওয়া এই হামলায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে পুরো এলাকায়।
ভবনের এক কর্মচারী ড্যারিন লেইং বলেন, তিনি সন্ধ্যা ৬:৩০ মিনিটের দিকে এক সহকর্মীর সঙ্গে বাইরে খাবার নিতে বের হন। তখনই দ্রুতগতিতে প্রায় ২০টি গুলির শব্দ শুনতে পান। “আমার সহকর্মী জিজ্ঞেস করল, ‘এইটা শুনলে? এইটা শুনলে?’ আমি ঘুরে দেখি ভবনের ভেতর থেকে ধোঁয়ার মতো কিছু বের হচ্ছে।”
এরপর তিনি চিৎকার শুনতে পান এবং দেখেন, স্যুট-টাই পরিহিত নারী-পুরুষরা ছুটে বেরিয়ে আসছে এবং চারপাশে দিকভ্রান্তভাবে দৌঁড়াচ্ছে।
নিহত পুলিশ কর্মকর্তা হলেন দিদারুল ইসলাম, ৩৬ বছর বয়সী বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত নিউ ইয়র্ক পুলিশ বিভাগের একজন সদস্য, যিনি ভবনে নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন। তিনি তিন বছর ছয় মাস ধরে ডিপার্টমেন্টে কাজ করছিলেন। তার দুই সন্তান রয়েছে এবং স্ত্রী তৃতীয় সন্তানের গর্ভে।
মেয়র এরিক অ্যাডামস বলেন, “তিনি নিজের জীবন দিয়ে শহরের জন্য দেওয়া প্রতিশ্রুতিকে রক্ষা করেছেন।” অন্যান্য নিহতদের নাম এখনো প্রকাশ করা হয়নি, কারণ তাদের পরিবারদের এখনও জানানো হয়নি।
ঘটনাস্থলটি আরেকটি আলোচিত হামলার স্থান থেকে মাত্র ১৫ মিনিটের হাঁটার দূরত্বে। আট মাস আগে সেখানে একজন স্বাস্থ্য বীমা কর্মকর্তাকে হত্যা করা হয়েছিল, যার পেছনে ছিল স্বাস্থ্যব্যবস্থার অবিচার নিয়ে হামলাকারীর ক্ষোভ।
এ দিনের হামলাকারী হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে শেন ডেভন তামুরা, বয়স ২৭, যিনি লাস ভেগাসের বাসিন্দা। তার হামলার উদ্দেশ্য ও কেন ৩৪৫ পার্ক অ্যাভিনিউ টার্গেট করেছিল, তা তদন্তাধীন বলে জানানো হয়েছে।
এই ভবনটির মালিক নিউ ইয়র্কের অন্যতম বৃহৎ রিয়েল এস্টেট কোম্পানি রুডিন ম্যানেজমেন্ট। ভবনের ৩৩তম তলায় তামুরা শেষ হত্যাকাণ্ডটি চালায় এবং আত্মহত্যা করে।
ভবনের অন্যান্য ভাড়াটিয়াদের মধ্যে রয়েছে এনএফএল, ব্ল্যাকস্টোন গ্রুপ এবং কেপিএমজি। হামলার সময় এসব প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা প্রায় দুই ঘণ্টা ভীতিকর অবরুদ্ধ অবস্থায় ছিলেন।
সূত্র: নিউইয়র্ক টাইমস
মিরাজ খান