ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৪ জুলাই ২০২৫, ৮ শ্রাবণ ১৪৩২

অনাহারে একদিনে প্রাণ গেল ১৫ ফিলিস্তিনির

গাজায় দুর্ভিক্ষ ছড়িয়ে পড়ছে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ২১:১৬, ২৩ জুলাই ২০২৫

গাজায় দুর্ভিক্ষ ছড়িয়ে পড়ছে

গাজা উপত্যকায় একটি দাতব্য সংস্থার রান্না করা খাবার সংগ্রহ করছে ফিলিস্তিনিরা

গাজায় ব্যাপকভাবে দুর্ভিক্ষ ছড়িয়ে পড়ছে বলে সতর্ক করেছে ১০০টিরও বেশি আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থা এবং মানবাধিকার গোষ্ঠী। একই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সরকারগুলোকে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্যও চাপ দিচ্ছে গোষ্ঠীগুলো। বুধবার বিবিসির প্রতিবেদনে এ খবর জানানো হয়। এ বিষয়ে একটি চিঠিতে বলা হয়েছে, গাজায় প্রতিদিন গড়ে মাত্র ২৮টি ট্রাকে করে ত্রাণ ঢুকছে।

অথচ জাতিসংঘ এর আগে পরামর্শ দিয়েছে যে দুই মিলিয়ন জনসংখ্যার খাদ্য সরবরাহের জন্য প্রতিদিন কমপক্ষে ৬০০টি লরি প্রয়োজন। এদিকে ইসরাইলের অব্যাহত হামলা ও খাদ্যবাহী সহায়তা বন্ধের কারণে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় গত ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে অনাহারে মারা গেছেন ১৫ জন। মৃতদের মধ্যে মাত্র ছয় সপ্তাহ বয়সী এক নবজাতক শিশুও রয়েছে। খবর আলজাজিরার।
গোষ্ঠীগুলো আরও জানিয়েছে, গাজাজুড়ে ব্যাপক দুর্ভিক্ষ ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের সহকর্মীরা এবং গাজার মানুষ ক্লান্ত হয়ে পড়ছে। যুদ্ধবিরতি হওয়ার আগে ক্রসিং খুলে দেওয়া এবং জাতিসংঘের নেতৃত্বাধীন ব্যবস্থার মাধ্যমে পূর্ণ খাদ্য সরবরাহের আহ্বানও জানিয়েছে তারা। গোষ্ঠীগুলো অভিযোগ করছে, গুরুত্বপূর্ণ ত্রাণ সরবরাহের অ্যাক্সেস অস্বীকার করা হয়েছে এবং ইসরাইলের বিরুদ্ধে সাহায্য বৃদ্ধির পরিকল্পনার বিষয়ে মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দেওয়ার অভিযোগ করা হয়েছে যখন বাস্তবে কোনো পদক্ষেপই নেওয়া হয়নি।

এদিকে বুধবার ত্রাণ সরবরাহের সমন্বয়ের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত ইসরাইলি সামরিক সংস্থা কোগাট জোর দিয়ে বলেছে যে, ইসরাইল আন্তর্জাতিক আইন মেনে কাজ করছে। তারা দাবি করেছে, তারা ত্রাণ প্রবেশ করতে দিচ্ছে ঠিকই তা হামাসের কাছে পৌঁছায় না। এদিকে গ্রিসের সাইরস দ্বীপে বিক্ষোভের মুখে নোঙর করতে না পেরে গন্তব্য পরিবর্তন করতে বাধ্য হয়েছে একটি ইসরাইলি প্রমোদতরী। বুধবার ক্রাউন আইরিস নামের প্রমোদতরীটি সাইরসের এরমোপোলি বন্দরে ছয় ঘণ্টার যাত্রাবিরতির উদ্দেশ্যে পৌঁছায়। জাহাজটি ইসরাইলি শিপিং কোম্পানি মানো মেরিটাইম পরিচালিত এবং এতে প্রায় ১৬০০ যাত্রী ছিলেন।

যার মধ্যে অন্তত ৩০০-৪০০ শিশু ছিল। জাহাজটি পৌঁছানোর পর পরই বন্দর এলাকায় স্থানীয়দের একটি বড় বিক্ষোভ শুরু হয়। শুরুতে জাহাজ কর্তৃপক্ষ ধারণা করেছিল, বিক্ষোভকারীরা অল্প সময়েই সরে যাবে এবং সামান্য দেরি শেষে যাত্রীরা নেমে পড়তে পারবেন। কিন্তু বিকেল ৩টা পার হলেও পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় জাহাজটিকে অবশেষে সাইরস না ভেড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় এবং এটি সাইপ্রাসের লিমাসল বন্দরের উদ্দেশে যাত্রা করে। অন্যদিকে গাজায় যুদ্ধবিরোধী ও ফিলিস্তিনিদের পক্ষে বিক্ষোভে অংশ নেওয়ায় প্রায় ৮০ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার, কোর্স থেকে সাময়িক স্থগিত ও ডিগ্রি বাতিলের মতো কঠোর শাস্তি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়।

কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটি অ্যাপার্থাইড ডাইভেস্ট (সিইউএডি) নামের এক ছাত্র-অধিকার গোষ্ঠী জানায়, যারা বিশ্ববিদ্যালয়কে ইসরাইলের সঙ্গে সব ধরনের আর্থিক সম্পর্ক ছিন্ন করতে আহ্বান জানিয়েছিল তাদের অনেক সদস্যকেই এক বছরের বেশি সময়ের জন্য স্থগিত কিংবা চূড়ান্তভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। বুধবার কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় এক বিবৃতিতে জানায়, এই সর্বশেষ শাস্তিগুলো মূলত বাটলার লাইব্রেরি দখল এবং ২০২৪ সালের অ্যালামনাই উইকেন্ডে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট।

বিশ্ববিদ্যালয় জানায়, একাডেমিক কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটানো বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিমালার লঙ্ঘন। এ ধরনের লঙ্ঘনের পরিণতি অবশ্যই হবে। সিইউএডির মতে, এই শাস্তিগুলো অতীতের অন্যান্য শিক্ষামূলক বিক্ষোভ বা অরাজনৈতিক আন্দোলনের তুলনায় নজিরবিহীন। তারা আরও বলেছে, আমরা ভীত নই। ফিলিস্তিনি মুক্তির আন্দোলনে আমরা অটল।

প্যানেল হু

×