
আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (ICJ) প্রথমবারের মতো জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে একটি পরামর্শমূলক মতামত প্রকাশ করতে যাচ্ছে, যা আন্তর্জাতিক আইন ব্যবস্থায় এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
ভানুয়াতুর নেতৃত্বে আনা এই মামলাটি জলবায়ু ন্যায়বিচারের ভবিষ্যৎ রূপরেখা নির্ধারণে একটি মাইলফলক হতে যাচ্ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আসা সহস্রাধিক লিখিত দলিল পর্যালোচনা ও দুই সপ্তাহব্যাপী মৌখিক শুনানি শেষে, ১৫ জন বিচারক বুধবার নেদারল্যান্ডসের পিস প্যালেসে বিকেল ৩টায় (বাংলাদেশ সময় রাত ৭টায়) তাদের রায় ঘোষণা করবেন।
এই রায়ের মূল লক্ষ্য হলো আন্তর্জাতিক আইনের বিভিন্ন শাখা যেমন পরিবেশ আইন, মানবাধিকার আইন ও সাগর সম্পর্কিত আইন সমন্বয় করে জলবায়ু পরিবর্তন প্রতিরোধে দেশগুলোর আইনগত দায়বদ্ধতা স্পষ্ট করা।
মামলার প্রেক্ষাপট
দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপরাষ্ট্র ভানুয়াতু ও কয়েকটি ক্ষতিগ্রস্ত দেশ আদালতের কাছে মূলত দুটি প্রশ্ন উত্থাপন করেছে:
-
জলবায়ু পরিবর্তন প্রতিরোধে দেশগুলোর কী আইনগত দায়িত্ব রয়েছে?
-
যেসব দেশ এই দায়িত্ব পালন করেনি, তাদের জন্য কী পরিণতি হওয়া উচিত?
কেন গুরুত্বপূর্ণ এই রায়?
বিশ্বের বড় বড় জীবাশ্ম জ্বালানিনির্ভর দেশগুলো বলছে, জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তন চুক্তি (UNFCCC) যথেষ্ট এবং আদালতের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন নেই। কিন্তু জলবায়ু কর্মীরা মনে করেন, শুধুমাত্র UNFCCC যথেষ্ট নয়, বরং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ও সাগর আইনের দৃষ্টিকোণ থেকেও দেশগুলোর দায়িত্ব নির্ধারণ জরুরি।
ভানুয়াতু আদালতের কাছে আবেদন করেছে যেন “আন্তর্জাতিক আইনের সম্পূর্ণ কাঠামো বিবেচনায় নিয়ে” এই মতামত প্রদান করা হয়। তাদের যুক্তি, ICJ-ই একমাত্র আন্তর্জাতিক সংস্থা যার সকল আইন শাখায় সাধারণ এখতিয়ার রয়েছে।
কী আশা করা হচ্ছে?
এই পরামর্শমূলক মতামতটি আইনি দৃষ্টিকোণ থেকে বাধ্যতামূলক না হলেও, ভবিষ্যতে জলবায়ু বিষয়ক মামলা ও আন্তর্জাতিক আলোচনায় এটি গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত হয়ে উঠতে পারে। এটি জাতিসংঘ, আঞ্চলিক আদালত ও জাতীয় আদালতগুলোর দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতেও ভূমিকা রাখতে পারে।
Jahan