
ছবি: সংগৃহীত
বুকভরা উত্তেজনা, আকাশজুড়ে দাউ দাউ আগুন, ছিন্নভিন্ন মাটি—পাক-ভারত সীমান্তে গত এপ্রিলে সংঘটিত সামরিক সংঘর্ষ যেন এক জীবন্ত রহস্যকাহিনি হয়ে উঠেছে। সম্প্রতি হোয়াইট হাউজে রিপাবলিকান আইনপ্রণেতাদের সঙ্গে নৈশভোজে অংশ নিয়ে মার্কিন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, “পাঁচটা, চারটা বা পাঁচটা… আমার মনে হয় পাঁচটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত হয়েছিল।” তবে তিনি স্পষ্ট করেননি, যুদ্ধবিমানগুলো কোন দেশের ছিল।
ট্রাম্পের এই বক্তব্য নতুন করে আলোচনায় এনেছে ভারতের 'অপারেশন সিদুর'। গত ২২ এপ্রিল জম্মু-কাশ্মীরের বেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় অন্তত ২৬ জন নিহত হওয়ার পর ভারত পাকিস্তানের ভূখণ্ডে এই অভিযানের সূচনা করে। এরপর ৭ মে রাতে উভয় দেশের মধ্যে চার দিনের টানা বিমান, ক্ষেপণাস্ত্র এবং স্থল হামলা চলে।
পাকিস্তানের দাবি অনুযায়ী, তারা ভারতের অন্তত তিনটি রাফালসহ একাধিক যুদ্ধবিমান গুঁড়িয়ে দিয়েছে এবং কয়েকজন পাইলটকেও আটক করেছে। যদিও এ দাবির পক্ষে কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারেনি ইসলামাবাদ। ভারতও আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষয়ক্ষতির নির্দিষ্ট পরিসংখ্যান প্রকাশ করেনি।
ভারতের চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ জেনারেল অনিল চৌহান স্বীকার করেছেন, “কিছু বিমান হারানো গেছে।” তবে তিনি জোর দিয়ে বলেন, “সংখ্যা নয়, গুরুত্বপূর্ণ হলো কেন সেগুলো ভূপাতিত হলো এবং এর পেছনের কৌশল।” তাঁর দাবি, ভারত পরে পাকিস্তানের অভ্যন্তরে ৩০০ কিলোমিটার পর্যন্ত গিয়ে সুনির্দিষ্টভাবে শত্রুপক্ষের ঘাঁটিতে আঘাত হেনেছে।
এই প্রেক্ষাপটে পাকিস্তানের দাবিকে সরাসরি “মিথ্যা” বলেছে রাফাল নির্মাতা ফরাসি প্রতিষ্ঠান ড্যাসল্ট। এর চেয়ারম্যান এরিক ট্রাপিয়ে নিশ্চিত করেছেন—“একটিও রাফাল ভূপাতিত হয়নি।”
ট্রাম্প আরও দাবি করেন, সংঘাত থামাতে মধ্যস্থতা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। তাঁর ভাষায়, “তারা দুজনই পারমাণবিক শক্তিধর। আমরা হস্তক্ষেপ না করলে বড় ক্ষতি হতে পারতো।” তবে এই দাবি নাকচ করে দিয়েছে ভারত। নয়াদিল্লির ভাষ্য, এই সংকট দুই দেশের মধ্যকার সরাসরি আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান হয়েছে।
বর্তমানে এ ঘটনাকে ঘিরে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে উত্তেজনার নতুন ঢেউ উঠেছে। কে সঠিক আর কে অতিরঞ্জিত করছে—তা এখনো সময়ের অপেক্ষা।
শেখ ফরিদ