
ছবিঃ সংগৃহীত
ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্যের পারভানি জেলায় চলন্ত বাসে মর্মান্তিক এক ঘটনা ঘটেছে।
মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) সকালে মাত্র ১৯ বছর বয়সী এক কিশোরী চলন্ত বাসে সন্তান প্রসব করেন এবং সদ্যোজাত শিশুটিকে জানালা দিয়ে বাইরে ছুঁড়ে ফেলেন, যার ফলে শিশুটির ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়।
ঘটনাটি ঘটে পুনে থেকে পারভানি যাওয়ার পথে পাঠারি সেলু রোড এলাকায়। ঘটনার সঙ্গে জড়িত ওই কিশোরী ঋতিকা ধেরে ও তার ২১ বছর বয়সী স্বামী আলতাফ শেখকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।
সকালে ব্যায়াম করতে বের হওয়া কয়েকজন ব্যক্তি রাস্তায় মৃত নবজাতক পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেন। তারা জানিয়েছেন, ৬টা ২০ মিনিটের দিকে তারা দেখতে পান একটি বাস থেকে কিছু একটা ছুঁড়ে ফেলা হয়েছে, এবং ঘটনাস্থলে গিয়ে নবজাতকের মরদেহ উদ্ধার করেন। সঙ্গে সঙ্গে পাঠারি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন তারা।
স্থানীয়রা যে বাসটি থেকে শিশুটিকে ফেলা হয়েছে বলে সন্দেহ প্রকাশ করেন, সেটি ছিল 'সন্ত প্রয়াগ ট্রাভেলস' নামক একটি বাস সার্ভিসের। পুলিশ দ্রুত ট্রাভেল এজেন্সির সঙ্গে যোগাযোগ করে পারভানির অফিসে গিয়ে বাসচালককে জিজ্ঞাসাবাদ করে। চালক জানান, তিনি জানালা দিয়ে একটি ব্যাগ ছুঁড়ে ফেলতে দেখে বাস থামান। তখন ওই যুগল বলেন, মেয়েটি বাসে বমি করেছিল, সেটিই নাকি ফেলা হয়েছে। পরে তিনি বাস চালানো চালিয়ে দেন।
পুলিশ জানায়, এই দম্পতি নিজেদের বিবাহিত দাবি করলেও তাদের কাছে কোনো বৈধ বিবাহের প্রমাণ নেই। তারা পুনেতে একসঙ্গে বসবাস করছিলেন। জিজ্ঞাসাবাদে তারা স্বীকার করেন, বাসেই সন্তান প্রসবের পর পরিচয় গোপন রাখতে সদ্যোজাতকে বাসের জানালা দিয়ে ফেলে দিয়েছেন।
এই নির্মম ঘটনার পর তাদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ধারা ৩১৭ (সন্তান পরিত্যাগ) এবং ২০১ (প্রমাণ লোপাট) অনুযায়ী মামলা দায়ের করা হয়েছে। এছাড়াও ৯৪ নম্বর ধারায় (গোপনে সন্তান প্রসব এবং মৃতদেহ গোপন করার প্রচেষ্টা) মামলা হয়েছে।
বর্তমানে কিশোরী মাকে চিকিৎসার জন্য একটি স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শিশুটির মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
এই হৃদয়বিদারক ঘটনা ইতোমধ্যেই ভারতজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও উঠেছে তীব্র নিন্দার ঝড়।
সূত্রঃ দ্যা ওয়াল
ইমরান