ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ০৪ জুলাই ২০২৫, ২০ আষাঢ় ১৪৩২

ইরান থেকে লাখো আফগানকে ফেরত পাঠানো হচ্ছে গুপ্তচর সন্দেহে, উদ্বেগে জাতিসংঘ

প্রকাশিত: ০১:২৪, ৪ জুলাই ২০২৫; আপডেট: ০১:২৪, ৪ জুলাই ২০২৫

ইরান থেকে লাখো আফগানকে ফেরত পাঠানো হচ্ছে গুপ্তচর সন্দেহে, উদ্বেগে জাতিসংঘ

ইসরায়েল-ইরান উত্তেজনার ছায়ায় এবার বিপদে পড়েছে লাখো আফগান শরণার্থী। তালেবান শাসনের সময় আফগানিস্তান ছেড়ে ইরানে আশ্রয় নেওয়া এই মানুষগুলোর অনেককেই এখন গুপ্তচর সন্দেহে জোরপূর্বক ফেরত পাঠাচ্ছে তেহরান সরকার। জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর এ নিয়ে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে।

ইরান দীর্ঘদিন ধরেই আফগান শরণার্থীদের জন্য একটি বড় আশ্রয়স্থল হিসেবে কাজ করে আসছিল। বিশেষ করে তালেবান পুনরায় ক্ষমতায় ফেরার পর ২০২২ সালে বিপুলসংখ্যক আফগান সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ইরানে প্রবেশ করে। ইরানি কর্তৃপক্ষের হিসাব অনুযায়ী, ২০২২ সালে প্রায় ২৬ লাখ আফগান নাগরিক বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই দেশটিতে বসবাস করছিলেন।

তবে সম্প্রতি ইসরায়েলের সঙ্গে উত্তপ্ত পরিস্থিতির জেরে নিরাপত্তাজনিত আশঙ্কায় এই শরণার্থীদের মধ্যে অনেককেই গুপ্তচর সন্দেহে চিহ্নিত করছে ইরানি কর্তৃপক্ষ। জাতিসংঘের তথ্যমতে, সংঘাত চলাকালে প্রতিদিন গড়ে ৩০ হাজারের বেশি আফগানকে ফেরত পাঠাচ্ছে ইরান, যা আগের সময়ের তুলনায় প্রায় ১৫ গুণ বেশি।

ইরানের পক্ষ থেকে এখনো পর্যন্ত এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি। সরকার মুখপাত্ররা গুপ্তচর শনাক্তের অভিযানের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি। একইভাবে আফগান সরকারের পক্ষ থেকেও কোনো প্রতিক্রিয়া আসেনি।

তবে এই আচরণকে মানবাধিকার লঙ্ঘন হিসেবেই দেখছে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর। সংস্থাটির মতে, জোর করে ফেরত পাঠানোর মাধ্যমে আফগান শরণার্থীদের বলির পাঠা বানানো হচ্ছে। অনিশ্চিত নিরাপত্তা পরিস্থিতির মধ্যে তাদের ফিরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত ভয়ংকর পরিণতি ডেকে আনতে পারে।

আফগানিস্তান এখনো সংঘাতের আশঙ্কা ও মৌলবাদী শাসনের চাপে একটি অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মধ্যে আছে। সেখানে এই বিপুলসংখ্যক শরণার্থীকে ফেরত পাঠানো শুধু আন্তর্জাতিক মানবিক নীতির বরখেলাপ নয়, এটি একটি গভীর মানবিক সংকটও তৈরি করতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

আফরোজা

আরো পড়ুন  

×