
ছবি: সংগৃহীত
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গাজার জন্য একটি "চূড়ান্ত" যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন। তিনি দাবি করেন, ইসরায়েল ইতিমধ্যে ওই প্রস্তাবের প্রয়োজনীয় শর্ত মেনে নিয়েছে। তবে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস জানিয়েছে, তারা এখনো প্রস্তাবটি পর্যালোচনা করছে এবং যুদ্ধ বন্ধ ও গাজা থেকে ইসরায়েলি বাহিনী প্রত্যাহারের নিশ্চয়তা চায়।
এক বিবৃতিতে হামাস বলেছে, কাতার ও মিশরের মধ্যস্থতায় প্রাপ্ত যুদ্ধবিরতির নতুন প্রস্তাবগুলো তারা পর্যালোচনা করছে। তবে তাদের লক্ষ্য হলো এমন একটি সমঝোতায় পৌঁছানো, যা যুদ্ধের স্থায়ী সমাপ্তি এবং গাজা থেকে ইসরায়েলি বাহিনীর প্রত্যাহার নিশ্চিত করবে।
এদিকে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ট্রাম্পের ঘোষণার পর তার প্রথম প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, “গাজায় আর কোনো হামাস থাকবে না, হামাস্তানও থাকবে না। এটা শেষ।” তিনি পুনরায় হামাসকে নিশ্চিহ্ন করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।
যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজার সাধারণ মানুষ ট্রাম্পের ঘোষণাকে সাময়িক আশার আলো হিসেবে দেখছে। গাজা সিটির বাসিন্দা কামাল বলেন, “যদি এই ৬০ দিনের জন্য হলেও যুদ্ধ বন্ধ হয়, তবে হাজার হাজার নিরীহ প্রাণ রক্ষা পাবে।” তবে অন্যরা ট্রাম্পের ঘোষণার স্থায়ীত্ব নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন। খান ইউনিসের বাসিন্দা আদনান আল-আসার বলেন, “আমরা চাই তিনি (ট্রাম্প) সিরিয়াস হোন, যেমনটা ইসরায়েল-ইরান যুদ্ধ বন্ধের সময় ছিলেন।”
ইরানে মার্কিন ও ইসরায়েলি হামলার পাশাপাশি গত মাসের ১২ দিনের সংঘর্ষের পর সম্মত হওয়া সাময়িক যুদ্ধবিরতি হামাসের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছে। এদিকে ইসরায়েলে যুদ্ধবিরতি নিয়ে জনমত বাড়ছে।
ইসরায়েলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিদেওন সার জানিয়েছেন, মন্ত্রিসভার অধিকাংশ সদস্য যুদ্ধবন্দিদের মুক্তির বিনিময়ে একটি চুক্তির পক্ষে। তিনি বলেন, “যদি এই সুযোগ থাকে, তাহলে তা হাতছাড়া করা যাবে না!” ইসরায়েলি বিরোধী নেতা ইয়াইর লাপিদও সমঝোতার পক্ষে অবস্থান নেন এবং সরকারের পতনের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব না আনার ঘোষণা দেন।
গাজায় ২১ মাস ধরে চলা যুদ্ধ, খাদ্য সংকট এবং মানবিক বিপর্যয়ের মধ্যে এই প্রস্তাব কিছুটা স্বস্তি নিয়ে এসেছে। তবে হামাসের মূল উদ্বেগ যুদ্ধের স্থায়ী সমাপ্তি নিয়ে। দুই পক্ষের দীর্ঘদিনের অবস্থান অপরিবর্তিত থাকায় আপাতত সমঝোতার বিষয়ে নিশ্চিত কিছু বলা যাচ্ছে না।
ফারুক