
ছবি: সংগৃহীত
তুরস্কে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত আনার অভিযোগে একটি স্যাটায়ার ম্যাগাজিনকে ঘিরে তীব্র বিতর্ক ছড়িয়ে পড়েছে। ইসলামের প্রিয়নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং হযরত মূসা আলাইহিস সালাম-এর ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশের অভিযোগে ইস্তাম্বুলসহ বিভিন্ন শহরে শুরু হয়েছে বিক্ষোভ। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে ম্যাগাজিনটির সম্পাদক ও দুই কার্টুনিস্টসহ মোট চারজনকে আটক করেছে নিরাপত্তা বাহিনী।
বিতর্কিত ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশ করে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এসেছে তুরস্কের স্যাটায়ার ম্যাগাজিন ‘লেমন’। ধর্মীয় মূল্যবোধে আঘাত হানার অভিযোগে দেশটির ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে তীব্র ক্ষোভ। ইস্তাম্বুলসহ বেশ কয়েকটি শহরে রাজপথে নামেন হাজারো মানুষ। বিক্ষোভে অংশ নেওয়া একজন বলেন,
“আমি এখানে এসেছি আমাদের নবীজিকে (সা.) নিয়ে করা ব্যঙ্গচিত্রের প্রতিবাদ জানাতে। তাদের ব্যাখ্যা পড়েছি, কিন্তু তা মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়।”
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান ঘটনাটিকে “উস্কানিমূলক ও ঘৃণামূলক অপরাধ” বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন,
“হাস্যরসের আড়ালে এটি একটি স্পষ্ট উস্কানি। মহানবী (সা.) এবং অন্যান্য নবীদের অবমাননা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না। যারা এমন করেছে, তাদের বিচারের আওতায় আনা হবে।”
তিনি আরও জানান, ম্যাগাজিনটি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে এবং অপরাধীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
‘লেমন’ ম্যাগাজিনের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, ব্যঙ্গচিত্রে যে ‘মুহাম্মদ’ চিত্রিত হয়েছে, তিনি মহানবী নন—বরং অন্য একজন ব্যক্তি। তবে এই ব্যাখ্যা প্রত্যাখ্যান করেছেন সাধারণ ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। তাদের মতে, এটি ইসলামবিদ্বেষী মনোভাবেরই বহিঃপ্রকাশ।
তুরস্কের বিচার বিভাগ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। গ্রেপ্তার হওয়া চারজনের মধ্যে রয়েছেন ম্যাগাজিনের সম্পাদক ও দুই কার্টুনিস্ট। তাদের বিরুদ্ধে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত, ঘৃণাপূর্ণ কনটেন্ট প্রচার এবং সমাজে উস্কানি ছড়ানোর অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
ধর্মীয় অনুভূতিকে পুঁজি করে ‘মুক্ত মত প্রকাশ’-এর নামে এমন কর্মকাণ্ড বরদাস্ত করা হবে না বলেই মত বিশ্লেষকদের। ঘটনাটি তুরস্কসহ গোটা মুসলিম বিশ্বে নতুন করে বিতর্ক এবং উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে।
ছামিয়া