
জার্মানিতে ইহুদি জনগোষ্ঠীকে লক্ষ্য করে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ ঘিরে ফের চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে বার্লিন ও তেহরানের মধ্যে। মঙ্গলবার ইরান সরকারের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ উত্থাপন করে বার্লিনে নিযুক্ত ইরানি রাষ্ট্রদূত মাজিদ নিলি আহমাদাবাদিকে তলব করেছে জার্মান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সাম্প্রতিক এক গোয়েন্দা তদন্তের পর ইরান-সম্পৃক্ত একটি গোয়েন্দা চক্রের মাধ্যমে বার্লিনে ইহুদি ব্যক্তি ও স্থাপনাগুলোর ওপর নজরদারি চালানোর প্রমাণ পাওয়ার পর রাষ্ট্রদূতকে ডেকে জার্মানির গভীর উদ্বেগ জানানো হয়।
এ বিষয়ে জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোহান ওয়াডেফুল ইউক্রেনের ওডেসা শহরের একটি সিনাগগ পরিদর্শনের সময় বলেন, “এই অভিযোগ প্রমাণিত হলে তা হবে একটি ঘৃণ্য অপরাধ এবং এতে আবারও প্রমাণিত হবে, বিশ্বব্যাপী ইহুদিদের জন্য ইরান একটি হুমকি। আমরা এর বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থান নেব।”
মঙ্গলবার জার্মান ফেডারেল প্রসিকিউটরের কার্যালয় এক বিবৃতিতে জানায়, এক ডেনিশ নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যিনি ইরানের একটি গোয়েন্দা সংস্থার পক্ষে বার্লিনে ইহুদি সম্প্রদায়ের নির্দিষ্ট কিছু ব্যক্তি ও স্থাপনার ওপর তথ্য সংগ্রহ করছিলেন।
আটক ওই ব্যক্তিকে ‘আলি এস.’ হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে। তাকে ডেনমার্কের আরহুস শহর থেকে জার্মান কর্তৃপক্ষের জারি করা গ্রেপ্তারি পরোয়ানার ভিত্তিতে আটক করা হয়। খুব শিগগিরই তাকে জার্মানিতে পাঠানো হবে এবং সেখানকার ফেডারেল কোর্ট অব জাস্টিসে এক তদন্তকারী বিচারকের সামনে হাজির করা হবে।
ফেডারেল প্রসিকিউটরের কার্যালয়ের ভাষ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের শুরুতে ইরানি গোয়েন্দা সংস্থা আলি এস.-কে বার্লিনে ইহুদি ব্যক্তি ও স্থাপনার তথ্য সংগ্রহের নির্দেশ দেয়। তদন্তে উঠে এসেছে, গত জুন মাসে তিনি তিনটি ভিন্ন ভিন্ন স্থানে নজরদারি চালান।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “এই নজরদারির উদ্দেশ্য ছিল জার্মানিতে সম্ভাব্য ভবিষ্যৎ গোয়েন্দা তৎপরতা এবং হয়তো ইহুদি লক্ষ্যবস্তুতে হামলার প্রস্তুতি নেওয়া।”
জার্মান অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থা বিএফভি-র সরবরাহ করা তথ্যের ভিত্তিতে এই তদন্ত শুরু হয় বলে নিশ্চিত করেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
ইহুদি সম্প্রদায়কে কেন্দ্র করে বিদেশি গোয়েন্দা তৎপরতার এই অভিযোগ বার্লিন ও তেহরানের মধ্যকার আগে থেকেই উত্তপ্ত কূটনৈতিক সম্পর্কে নতুন করে উত্তেজনা তৈরি করেছে। জার্মানি বিষয়টিকে জাতীয় নিরাপত্তা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের আশঙ্কাজনক ইঙ্গিত হিসেবে বিবেচনা করছে, যা ইরানের সঙ্গে ভবিষ্যৎ কূটনৈতিক সম্পর্কের ওপর সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলতে পারে। তদন্তের পরবর্তী ধাপে আরও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রকাশ হতে পারে বলে ধারণা করছে জার্মান প্রশাসন।
সূত্র:https://tinyurl.com/yw4t6y74
আফরোজা