
ছবি:সংগৃহীত
দক্ষিণ কলকাতা ল কলেজের এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে মনোজিত মিশ্র সহ আরও দুইজনের গ্রেপ্তারের পরে, ওই কলেজের এক অন্য ছাত্রী সামনে এসে দাবি করলেন — “মনোজিত মিশ্র ক্যাম্পাসে এক আতঙ্কের নাম ছিল। নারীরা ওকে এড়িয়ে চলতে চাইত।”
পূর্বে একাধিক অভিযোগ, কিন্তু রাজনৈতিক প্রভাবে ধামাচাপা
ওই ছাত্রীর অভিযোগ, “মিশ্রর বিরুদ্ধে আগে থেকেই একাধিক এফআইআর দায়ের করা হয়েছিল, কিন্তু তার রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। কেউ তাকে স্পর্শ করতে সাহস করত না।”
তিনি আরও বলেন, “২০১৯ সালে তিনি এক নারীকে কলেজ ক্যাম্পাসে যৌন হেনস্থা করেন এবং তার জামাকাপড় ছিঁড়ে দেন। ২০২৪ সালে কলেজের এক নিরাপত্তারক্ষীকে মারধর করে কলেজের সম্পত্তি ভাঙচুর করেন। এমনকি চুরির সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন।”
নারীদের গোপনে ছবি তুলে ছড়ানোর অভিযোগ
ছাত্রীটি জানিয়েছেন, “সে গোপনে মেয়েদের ছবি তুলত, সেগুলো এডিট করে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে ছড়িয়ে দিত। অনেক ছাত্রী ক্লাসে না এসে নিরাপদে থাকতেই পছন্দ করত, যাতে ওর সঙ্গে দেখা না হয়।”
এই বিষয়ে NDTV-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ওই ছাত্রী তার নাম প্রকাশ করতে চাননি। হিন্দুস্তান টাইমস স্বাধীনভাবে অভিযোগগুলোর সত্যতা যাচাই করতে পারেনি।
পরিবার থেকেও বিচ্ছিন্ন
ছাত্রীর আরও দাবি, “মনোজিতের বাবা কলকাতার কালীঘাট মন্দিরে পুরোহিত, কিন্তু তার পরিবার তাকে বহুদিন আগেই ত্যাগ করেছে।”
ঘটনাটি ছিল পূর্বপরিকল্পিত: পুলিশ
কলকাতা পুলিশ জানিয়েছে, মনোজিত মিশ্র ও অপর দুই অভিযুক্ত — প্রতিম মুখার্জি ও জায়েদ আহমেদ — এই নৃশংস ঘটনার পরিকল্পনা বহুদিন ধরেই করছিল। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযোগকারিণী ছাত্রী কলেজে ভর্তি হওয়ার প্রথম দিন থেকেই তাকে টার্গেট করা হয়।
এক পুলিশ অফিসার পিটিআই-কে বলেন, “এই অপরাধটি ছিল পরিকল্পিত। ভিক্টিমকে পরিকল্পিতভাবেই বেছে নেওয়া হয়েছিল।”
SIT-এর তদন্তে চাঞ্চল্যকর তথ্য
নয় সদস্যের বিশেষ তদন্তকারী দল (SIT) জানায়, অভিযুক্ত তিনজন আগেও বহুবার ছাত্রীদের যৌন হেনস্থা করেছে। তারা সেই ঘটনাগুলির ভিডিও রেকর্ড করে পরে ব্ল্যাকমেল করত। এই ভিডিওগুলি উদ্ধার করতে পুলিশ ইতিমধ্যেই প্রতিম ও জায়েদের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছে।
কলেজ থেকে বহিষ্কার
এই ঘটনার পরে দক্ষিণ কলকাতা ল কলেজ কর্তৃপক্ষ মনোজিত মিশ্র সহ অভিযুক্ত তিনজনকে কলেজ থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করেছে।
এই প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র আইনগত ও সামাজিক গুরুত্বে প্রচারিত হচ্ছে। ভুক্তভোগীদের নিরাপত্তা ও সম্মানের খাতিরে তাদের পরিচয় গোপন রাখা হয়েছে।
মারিয়া