
ছবি: সংগৃহীত
ইরানে মার্কিন ধনকুবের ইলন মাস্কের মালিকানাধীন উপগ্রহভিত্তিক ইন্টারনেট সেবা স্টারলিংক নিষিদ্ধ হতে চলেছে। দেশটির সংসদ মজলিস সম্প্রতি এক নতুন আইন পাস করেছে, যেখানে স্টারলিংকসহ সরকারি অনুমোদনবিহীন যেকোনো ধরনের ইলেকট্রনিক ইন্টারনেট ডিভাইস ব্যবহারকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। অপরাধের মাত্রা অনুযায়ী জরিমানা, কারাদণ্ড থেকে শুরু করে মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে।
গত ২৩ জুন এই আইনটি ইরানের পার্লামেন্টে অনুমোদিত হয় এবং ২৯ জুন তা জনসমক্ষে প্রকাশ করা হয়। ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা ইসনা জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র, ইসরাইল বা অন্য কোনো ‘শত্রু রাষ্ট্রের’ সঙ্গে সামরিক বা গোয়েন্দা সহযোগিতা করলে তা “পৃথিবীর সঙ্গে দুর্নীতির” শামিল* হিসেবে বিবেচিত হবে। এর জন্যও মৃত্যুদণ্ড এর বিধান রাখা হয়েছে।
সাম্প্রতিক ইসরাইল-ইরান যুদ্ধের পটভূমিতে এই আইন পাস করা হয়েছে। ইরানি সরকার আশঙ্কা করছে, স্টারলিংকের মতো মনিটরহীন ইন্টারনেট প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে ইসরাইলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ তেহরানের ভেতরে থাকা গুপ্তচরদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারে। ফলে এর ব্যবহারকে জাতীয় নিরাপত্তার প্রতি বড় হুমকি বলে মনে করছে ইরান।
নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও আনুমানিক ২০ থেকে ৪০ হাজার স্টারলিংক ডিভাইস এখনো সক্রিয় রয়েছে বলে দাবি করেছে দেশটির বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম। যুদ্ধ চলাকালীন সময় ইরানে এই ডিভাইসগুলো চোরাই পথে পাচার করা হয়েছিল, যাতে সরকার কর্তৃক ইন্টারনেট বন্ধ থাকা অবস্থায় জনগণ বিকল্প উপায়ে সংযোগ পায়।
এর আগেও ২০২২ সালে মাহসা আমিনির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে চলা গণআন্দোলনের সময়, ইরান সরকার ইন্টারনেট বন্ধ করে দেয়। সেই সময় স্টারলিংক টার্মিনাল পাচারের চেষ্টা হয়, যাতে বিক্ষোভকারীরা তথ্য আদান-প্রদান চালু রাখতে পারে। সেই সময়ে ইলন মাস্ক প্রকাশ্যে ঘোষণা দেন যে, তিনি ইরানে স্টারলিংক চালু রাখতে প্রস্তুত। এতে ইরান সরকার ক্ষুব্ধ হয় এবং এরপর থেকে স্টারলিংককে বিদেশি হস্তক্ষেপের প্রতীক হিসেবে দেখা শুরু করে।
নতুন আইনে বলা হয়েছে, কেউ যদি স্টারলিংক বা এর মতো অনুমোদনহীন ইন্টারনেট ডিভাইস আমদানি করে, তার জন্য ৬ থেকে ১০ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।
ছামিয়া