ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০২ জুলাই ২০২৫, ১৭ আষাঢ় ১৪৩২

আসাদের সম্প্রদায়ের ১৫শ’ জনকে মেরে ফেললো সিরিয়ার আল শারার বাহিনী?

প্রকাশিত: ১৯:২৭, ১ জুলাই ২০২৫

আসাদের সম্প্রদায়ের ১৫শ’ জনকে মেরে ফেললো সিরিয়ার আল শারার বাহিনী?

ছবি: সংগৃহীত

সিরিয়ায় সংখ্যালঘু আলাওয়াইট সম্প্রদায়ের উপর চালানো সামরিক অভিযানের নির্মম বাস্তবতা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে হতবাক করেছে। ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারার বাহিনী মাত্র তিন দিনের অভিযানে হাজারের বেশি বেসামরিক নাগরিককে হত্যা করেছে, যাদের অধিকাংশই আলাওয়াইট সম্প্রদায়ের সদস্য।

 

 

 

এই হত্যাযজ্ঞ সিরিয়ার পশ্চিমাঞ্চলের লাতাকিয়া, তারতুস ও অন্যান্য এলাকায় সংঘটিত হয়েছে, যেখানে আলাওয়াইটরা ঐতিহাসিকভাবে বসবাস করে আসছে। রয়টার্সের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে যে এই সহিংসতায় সরকারি বাহিনী ও সুন্নি মিলিশিয়া গোষ্ঠীগুলো সরাসরি জড়িত ছিল।

সাবেক প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের পতনের পর দেশটিতে শান্তি ফিরবে বলে আশা করা হচ্ছিল, কিন্তু বাস্তবে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। নতুন সরকার গঠনের তিন মাসের মধ্যেই এই সহিংসতা শুরু হয়, যখন আলাওয়াইট সেনারা বিদ্রোহ করে। প্রতিশোধ হিসেবে সরকারি বাহিনী আলাওয়াইট অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে ব্যাপক আক্রমণ চালায়। বাড়িঘরে ঢুকে পুরুষ, নারী ও শিশুদের নির্বিচারে হত্যা করা হয়েছে। মৃতদেহ কবর দিতেও বাধা দেওয়া হয়েছে, লাশ রাস্তায় ফেলে রাখা হয়েছে। এক নারী তার স্বামী ও দুই সন্তানকে হারানোর মর্মান্তিক অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে বলেছেন, "আমি যখন তার মরদেহ হাতে নিলাম, মগজগুলো বেরিয়ে এসেছিল। পুরো হাত রক্তে ভিজে গিয়েছিল।"

আলাওয়াইটরা সিরিয়ার মোট জনসংখ্যার প্রায় ১০% এবং বাশার আল-আসাদের শাসনামলে তারা সুবিধাভোগী গোষ্ঠী হিসেবে বিবেচিত হতো। আসাদের পতনের পর থেকেই সুন্নি সম্প্রদায়ের মধ্যে তাদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ বাড়তে থাকে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, নতুন সরকার আসাদের সমর্থক হিসেবে আলাওয়াইটদের দেখছে বলেই এই হামলা চালানো হয়েছে। যদিও সরকারি কমান্ডাররা দাবি করেছেন যে তারা বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্য করেননি, কিন্তু মাঠপর্যায়ের বাস্তবতা ভিন্ন কথা বলে।

 

 

এই সহিংসতার পর বহু আলাওয়াইট নাগরিক নিজেদের বাড়িঘর ছেড়ে রাশিয়ার বিমান ঘাঁটিতে আশ্রয় নিয়েছেন। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এখনও এই বিষয়ে স্পষ্ট অবস্থান নেয়নি। সিরিয়ার নতুন সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে এই হত্যাযজ্ঞের বিষয়ে কোনো মন্তব্য না করলেও প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা সহিংসতার নিন্দা জানিয়েছেন। তবে তিন মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো হত্যাকাণ্ড চলছে বলে রয়টার্সের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। এই ঘটনা সিরিয়ার সংকটকে আরও গভীর করে তুলেছে এবং দেশটিতে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার পথে নতুন বাধা সৃষ্টি করেছে।

ছামিয়া

আরো পড়ুন  

×