ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১৪ জুন ২০২৫, ৩১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ইরানের মাটিতে বিস্ফোরণ—দীর্ঘ পরিকল্পনার ফল ইসরায়েলি অভিযান?

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ২৩:৪০, ১৩ জুন ২০২৫

ইরানের মাটিতে বিস্ফোরণ—দীর্ঘ পরিকল্পনার ফল ইসরায়েলি অভিযান?

ছবি: সংগৃহীত

মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনার পারদ চড়ছে নতুন মাত্রায়। আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্স-এর বরাতে জানা গেছে, ইসরায়েল গভীর ইরানি ভূখণ্ডে মোসাদের বিশেষ কমান্ডো পাঠিয়ে একটি চমকপ্রদ ও কৌশলগত হামলা চালিয়েছে, যার লক্ষ্য ছিল ইরানের পরমাণু ও সামরিক অস্ত্র ব্যবস্থাকে ধ্বংস করা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইসরায়েলি নিরাপত্তা সূত্র দাবি করেছে, এই হামলার জন্য তারা বহু বছর ধরে পরিকল্পনা ও গোয়েন্দা তৎপরতা চালিয়েছে। মূল হামলার আগেই মোসাদ কমান্ডোরা ইরানের অভ্যন্তরে বিস্ফোরক ড্রোন ও অস্ত্র মজুত করে রাখে, যা পরে নির্দিষ্ট সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে ব্যবহার করা হয়। এর ফলে একাধিক পরমাণু বিজ্ঞানী ও বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর শীর্ষ কমান্ডার নিহত হন বলে দাবি করা হয়েছে।

হামলার সময় তেহরানের উপকণ্ঠে অবস্থিত একটি ভূমি থেকে ভূমিতে ক্ষেপণাস্ত্র ঘাঁটিতে মোতায়েন করা হয় বিস্ফোরক ড্রোন। একই সঙ্গে ইরানের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে অকার্যকর করতে নিখুঁতভাবে নির্ধারিত অস্ত্র দিয়ে হামলা চালানো হয়, যাতে ইসরায়েলি যুদ্ধবিমানগুলোর জন্য আকাশপথ নিরাপদ রাখা যায়।

ইসরায়েলি কর্মকর্তারা জানান, হামলার আগে তারা আন্তর্জাতিক মহলের চোখ এড়াতে এমন কৌশল নিয়েছিল, যাতে মনে হয় কোনো সামরিক পদক্ষেপ আসন্ন নয়। এমনকি সাংবাদিকদের মাধ্যমে জানানো হয় যে, মোসাদপ্রধান যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাচ্ছেন কূটনৈতিক আলোচনার উদ্দেশ্যে।

রয়টার্স জানায়, এই গোপন হামলা সংঘটিত হওয়ার পর বিশ্ববাজারে তেলের দাম উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যায়। যদিও সংস্থাটি স্বাধীনভাবে এই সব তথ্য যাচাই করতে পারেনি।

অন্যদিকে, ইরানের পক্ষ থেকে হামলাকে “অবৈধ ও কাপুরুষোচিত” বলে অভিহিত করা হয়েছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি জাতিসংঘকে দেওয়া এক চিঠিতে বলেন, ইসরায়েল সব ধরনের সীমা অতিক্রম করেছে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত এই আগ্রাসনের উপযুক্ত জবাব দেওয়া।

তবে হামলার বিষয়ে ইরান এখনো বিস্তারিত কিছু জানায়নি, শুধু জানিয়েছে, কঠোর প্রতিশোধ আসন্ন। জাতিসংঘে ইরানের মিশন এখনো এ বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া দেয়নি।

অন্যদিকে, ইসরায়েল জানিয়েছে, এটি ছিল তাদের দীর্ঘমেয়াদি প্রতিরোধ পরিকল্পনার অংশ, যার লক্ষ্য ইরানকে পরমাণু অস্ত্র অর্জন থেকে বিরত রাখা। তবে ইরান স্পষ্টভাবে জানিয়েছে, তাদের পরমাণু কর্মসূচি সম্পূর্ণভাবে বেসামরিক উদ্দেশ্যে পরিচালিত।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এই ঘটনাপ্রবাহ মধ্যপ্রাচ্যে একটি নতুন সংঘাতের আশঙ্কা বাড়িয়ে তুলেছে। একই সঙ্গে এটি যুক্তরাষ্ট্র-ইরান পারমাণবিক আলোচনার উপরও বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

Mily

×