
ছবি: সংগৃহীত
গাজা উপত্যকার ‘নিরাপদ’ ঘোষিত এলাকাগুলোতেও থেমে নেই ইসরায়েলি বিমান হামলা। গত ২৪ ঘণ্টায় গাজার বিভিন্ন হাসপাতালে কমপক্ষে ৭৯টি মৃতদেহ পৌঁছেছে বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। আহত হয়েছেন আরও ২১১ জন।
বিশেষ করে গাজার জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে একটি পরিবারকে লক্ষ্য করে চালানো বোমা হামলায় প্রায় ৫০ জন নিহত বা নিখোঁজ হয়েছেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা কাঁপা গলায় আল জাজিরাকে বলেছেন, “ইসরায়েলি বাহিনী যেন মজা করে সাধারণ মানুষ মারছে।”
এই ঘটনাগুলো ঘটছে এমন এক সময়, যখন গাজার প্রায় ৭০ হাজার শিশু চরম মাত্রার অপুষ্টির শিকার এবং সেখানে দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা ভয়াবহভাবে বাড়ছে। মানবিক সহায়তা প্রবেশের পথ প্রায় বন্ধ করে দেওয়ায় এই সংকট দিন দিন আরও গভীর হচ্ছে।
ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসেব অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি অভিযানে এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন কমপক্ষে ৫৩,৯০১ জন ফিলিস্তিনি এবং আহত হয়েছেন ১,২২,৫৯৩ জন। তবে গাজায় সরকারের মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, ধ্বংসস্তূপের নিচে পড়ে থাকা হাজারো মানুষকে মৃত ধরে তারা মৃত্যুর সংখ্যা ৬১,৭০০ ছাড়িয়ে গেছে বলে মনে করছে।
অন্যদিকে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের নেতৃত্বাধীন হামলায় ইসরায়েলে ১,১৩৯ জন নিহত হয় এবং ২০০-এর বেশি মানুষকে জিম্মি করা হয়।
গাজার পরিস্থিতি এখন এমনই বিপর্যস্ত যে, সেখানে শিশুদের জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্য, চিকিৎসা ও আশ্রয়ের ব্যবস্থা করতে ব্যর্থ হলে মানবিক বিপর্যয় ভয়াবহ রূপ নিতে পারে বলে আশঙ্কা করছে জাতিসংঘ ও অন্যান্য মানবাধিকার সংস্থা।
এই নিষ্ঠুরতা ও মানবিক সংকটের মধ্যে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নীরবতা নিয়ে ক্রমবর্ধমান ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করছেন সাধারণ ফিলিস্তিনিরা। "আমরা কোথাও নিরাপদ নই," বলছেন জাবালিয়ার এক বেঁচে যাওয়া নারী, "নিরাপদ অঞ্চল বলে কিছু নেই। প্রতিদিনই মৃত্যু আমাদের দরজায় কড়া নাড়ে।"
এসএফ