ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২১ মে ২০২৫, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

এক মন্তব্যেই পদত্যাগ জাপানের কৃষিমন্ত্রী তাকু এতো’র

প্রকাশিত: ১২:৩৮, ২১ মে ২০২৫; আপডেট: ১২:৪৬, ২১ মে ২০২৫

এক মন্তব্যেই পদত্যাগ জাপানের কৃষিমন্ত্রী তাকু এতো’র

ছবি :সংগৃহীত

জাপানের কৃষিমন্ত্রী তাকু এতো সম্প্রতি তার বিতর্কিত মন্তব্যের পর পদত্যাগ করেছেন। গত সপ্তাহে তিনি একটি তহবিল সংগ্রহের অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, "আমাকে কখনও চাল কিনতে হয়নি, কারণ সমর্থকেরা উপহার হিসেবে চাল দেন।" এ মন্তব্যটি দেশে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয়, কারণ জাপানে চালের দাম বর্তমানে ইতিহাসের সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে, আর এটি সাধারণ মানুষের জন্য বড় এক চাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এই মন্তব্যের পর থেকেই প্রচুর ক্ষোভ তৈরি হয় এবং তা প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবার সরকারকেও চাপে ফেলে। উল্লেখযোগ্য যে, দেশটির কৃষিমন্ত্রী পদে থাকাকালীন তার মন্তব্য জনগণের দুঃখ-দুর্দশা সম্পর্কে অজ্ঞতার পরিচয় দিয়েছে বলে মনে করা হয়। এছাড়া, কৃষিমন্ত্রীর এই পদত্যাগের মাধ্যমে ইশিবা সরকারের সংকট আরও তীব্র হয়েছে, কারণ দেশটির মুদ্রাস্ফীতি এবং চালের দাম বেড়ে যাওয়ায় মানুষের জীবনযাত্রা অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়েছে।

বুধবার (২১ মে) তিনি পদত্যাগ করেছেন।সরকার সূত্র জানায়, তার স্থলাভিষিক্ত হতে পারেন সাবেক পরিবেশমন্ত্রী শিনজিরো কোইজুমি।

এ ঘটনার প্রেক্ষিতে বিরোধী দলগুলো প্রধানমন্ত্রী ইশিবার বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা করেছে এবং পার্লামেন্টে অনাস্থা প্রস্তাব আনতে হুমকি দিয়েছে। সরকারও প্রথমে মন্ত্রীকে বরখাস্ত করতে অনীহা প্রকাশ করেছিল, তবে পরবর্তীতে ইশিবা নিজেই এতো’র পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেন। রবিবার কিওডো নিউজের একটি জরিপে দেখা গেছে, ইশিবার সমর্থন ২৭.৪% এ নেমে এসেছে, যা তার সর্বনিম্ন রেকর্ড। এ ছাড়া, প্রায় ৯০% ভোটার সরকারের চালের দাম বৃদ্ধির প্রতি প্রতিক্রিয়া নিয়ে অসন্তুষ্ট।

গত বছরের তুলনায় চালের দাম দ্বিগুণ হওয়া জাপানিজদের জন্য একটি প্রধান চিন্তার বিষয় হয়ে উঠেছে, যাঁরা দীর্ঘ বছর ধরে মুদ্রাস্ফীতি-সংশ্লিষ্ট নিম্ন বেতনের ক্ষতিপূরণের অভ্যস্ত। সরকার মার্চ মাস থেকে তার জরুরি মজুত থেকে চাল বাজারে ছাড়ছে দাম নিয়ন্ত্রণের জন্য, তবে তাতে তেমন কোনো সুফল পাওয়া যায়নি।

সোমবার প্রকাশিত ডেটায় দেখা গেছে, ১১ মে পর্যন্ত সপ্তাহে খুচরা দামের আবারও বৃদ্ধি হয়েছে, ১৮ সপ্তাহ পর প্রথমবারের মতো দাম কমার পর। এর ফলে ক্রমেই খুচরা বিক্রেতা ও ভোক্তারা সস্তা বিদেশি চালের দিকে ঝুঁকছে।

টোকিওর হোসেই বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনৈতিক বিজ্ঞান অধ্যাপক হিরোশি শিরাতোরি বলেছেন, "এতো মন্ত্রীর পদত্যাগটি অনিবার্য ছিল, সেই ভুল মন্তব্যের পর থেকেই।"

 

 

সা/ই

×