
ভারত-পাকিস্তান সাম্প্রতিক যুদ্ধবিরতির সমালোচনা করে যেসব ভারতীয় নাগরিক বক্তব্য দিচ্ছেন, তাদের কড়া ভাষায় আক্রমণ করেছেন ভারতের সাবেক সেনাপ্রধান ও অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল মনোজ নারাভানে। তিনি স্পষ্ট ভাষায় বলেন, “যুদ্ধ কোনো রোমান্টিক ব্যাপার নয় এবং এটি বলিউড সিনেমার মতো উপভোগ্যও নয়।”
পুনে জেলায় আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখতে গিয়ে জেনারেল নারাভানে বলেন, “সীমান্তবর্তী এলাকার মানুষজন প্রতিনিয়ত ভয় ও আতঙ্কে বসবাস করেন। যুদ্ধের ধ্বংসযজ্ঞ, প্রিয়জন হারানো এবং বাস্তুচ্যুত হওয়ার অভিজ্ঞতা তাদের জীবনভর তাড়িয়ে বেড়ায়।”
তিনি জানান, “পোস্ট ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডার (পিটিএসডি) নামক মানসিক সমস্যায় ভোগেন যুদ্ধপ্রত্যক্ষকারী মানুষরা। এ ধরনের ট্রমা কখনও কখনও ২০ বছর পর্যন্ত স্থায়ী হয় এবং অনেককে মানসিক চিকিৎসারও শরণাপন্ন হতে হয়।”
সাবেক সেনাপ্রধান আরও বলেন, “সরকার নির্দেশ দিলে আমি আজও যুদ্ধে যেতে প্রস্তুত। তবে আমার ব্যক্তিগত মত হলো— যুদ্ধ নয়, কূটনীতিই হোক প্রথম পছন্দ। যুদ্ধ শুধুমাত্র সেই সময়ই গ্রহণযোগ্য, যখন কূটনৈতিক সব পথ ব্যর্থ হয়ে যায়।”
তিনি যোগ করেন, “প্রধানমন্ত্রীও বলেছেন— এখন যুদ্ধের সময় নয়। কিন্তু কিছু নির্বোধ ব্যক্তি অকারণে যুদ্ধের জন্য উস্কানি দিচ্ছেন, যা মোটেও সমর্থনযোগ্য নয়।”
মনোজ নারাভানে বলেন, “মানবিকতা ও কূটনীতির চর্চা শুধু আন্তর্জাতিক পর্যায়েই নয়, ব্যক্তিগত জীবনেও হওয়া উচিত। সহিংসতা কখনও কোনো টেকসই সমাধান এনে দিতে পারে না।”
উল্লেখ্য, গত ২২ এপ্রিল জম্মু-কাশ্মিরের অনন্তনাগ জেলার পেহেলগামের বৈসরন উপত্যকায় এক সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন পর্যটক নিহত হন। হামলাকারীরা স্বয়ংক্রিয় রাইফেল দিয়ে নির্বিচারে গুলি চালায়। নিহতদের সবাই পুরুষ এবং অধিকাংশই হিন্দু ধর্মাবলম্বী ছিলেন।
দুই দেশের মধ্যে চলমান এই উত্তেজনার মধ্যেই গত মঙ্গলবার পাকিস্তানের অধিকৃত কাশ্মিরসহ বিভিন্ন এলাকায় ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামে এক সংক্ষিপ্ত সেনা অভিযান পরিচালনা করে ভারতের প্রতিরক্ষা বাহিনী। নয়াদিল্লির তথ্য অনুযায়ী, এ অভিযানে ৭০ জন পাকিস্তানি সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে। তবে পাকিস্তানের দাবি, নিহত হয়েছে ৩১ জন এবং আহত হয়েছে ৫৭ জন।
সূত্রঃ এনডিটিভি
রিফাত