ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ০৫ মে ২০২৫, ২২ বৈশাখ ১৪৩২

সিন্ধু চুক্তি স্থগিতের পর জলবিদ্যুৎ প্রকল্প শুরু ভারতের

প্রকাশিত: ২১:১৩, ৫ মে ২০২৫

সিন্ধু চুক্তি স্থগিতের পর জলবিদ্যুৎ প্রকল্প শুরু ভারতের

কাশ্মীরে সালাল ও বাগলিহার জলবিদ্যুৎ প্রকল্পে জলাধারের ধারণক্ষমতা বাড়াতে কাজ শুরু করেছে ভারত। পাকিস্তানের সঙ্গে সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিতের পর এই পদক্ষেপ নিয়েছে নয়াদিল্লি। তিনটি সূত্রের বরাতে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে। পহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার জেরে দুই দেশের মধ্যে চলমান উত্তেজনার মধ্যেই এই প্রকল্পের কাজ শুরু করলো ভারত।
১৯৬০ সালের সিন্ধু পানি চুক্তির আওতায় এতদিন এই প্রকল্পগুলোতে নির্দিষ্ট সীমাবদ্ধতার মধ্যে থেকেই কাজ করত ভারত। তবে সম্প্রতি কাশ্মীরে হামলার ঘটনায় পাকিস্তানি সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ তুলে নয়াদিল্লি চুক্তিটি একতরফা স্থগিত করে।
সূত্রগুলো জানায়, ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত বিদ্যুৎ সংস্থা এনএইচপিসি ও জম্মু-কাশ্মীরের প্রশাসন গত ১ মে থেকে তিন দিনব্যাপী জলাধার ‘ফ্লাশিং’ প্রক্রিয়া চালিয়েছে। এতে নদীর তলদেশের পলিমাটি পরিষ্কারের জন্য জলাধার প্রায় খালি করে দেওয়া হয়, যার ফলে নিচের দিকে হঠাৎ পানির প্রবাহ বেড়ে যায় এবং পরে তা কমে আসে। এই প্রথম এমন কার্যক্রম চালানো হলো এবং এটি টারবাইনের ক্ষতি ঠেকাতে ও বিদ্যুৎ উৎপাদনের দক্ষতা বাড়াতে সহায়তা করবে বলে জানিয়েছেন এক কর্মকর্তা। তবে পাকিস্তানকে এই কার্যক্রম সম্পর্কে পূর্বে কিছু জানানো হয়নি। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বৃহস্পতিবার থেকে শনিবার পর্যন্ত সালাল ও বাগলিহার বাঁধ থেকে একযোগে পানি ছাড়া হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার হওয়া ভিডিওতেও চেনাব নদীর কিছু অংশে পানির প্রবল প্রবাহ ও কিছু অংশে পলি জমে থাকার চিত্র দেখা গেছে।
চুক্তি স্থগিতের মাধ্যমে ভারত এখন নিজস্ব জলবিদ্যুৎ প্রকল্পে স্বাধীনভাবে কাজ চালাতে পারবে বলে মন্তব্য করেছেন ভারতের কেন্দ্রীয় পানি কমিশনের সাবেক প্রধান কুশভিন্দর ভোরা। তিনি বলেন, এখন আমরা নিজেদের ইচ্ছামতো প্রকল্প এগিয়ে নিতে পারব।
পাকিস্তান অবশ্য এই পদক্ষেপকে যুদ্ধ ঘোষণার সঙ্গে তুলনা করে বলেছে, পাকিস্তানের পানির প্রবাহ থামানো বা অন্যদিকে ঘোরানোর যে কোনো প্রচেষ্টা যুদ্ধের কাজ বলে বিবেচিত হবে। দেশটি আন্তর্জাতিক আইনি ব্যবস্থার আশ্রয় নেওয়ার হুমকিও দিয়েছে।
উল্লেখ্য, ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ উপনিবেশ থেকে স্বাধীনতা লাভের পর ভারত ও পাকিস্তান কাশ্মীর নিয়ে তিনটি যুদ্ধ ও বহুবার সংঘাতে জড়িয়েছে। তবে এতদিন সিন্ধু চুক্তিটি দুই দেশই মেনে চলেছে। এখন সেই স্থিতাবস্থা ভেঙে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

প্যানেল

×