ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ১০ আগস্ট ২০২৫, ২৬ শ্রাবণ ১৪৩২

নীরব ঘাতক কিডনি রোগ উপেক্ষা করলে হতে পারে স্থায়ী ক্ষতি, জেনে নিন ৭টি সতর্ক সংকেত

প্রকাশিত: ২০:৪২, ৯ আগস্ট ২০২৫

নীরব ঘাতক কিডনি রোগ উপেক্ষা করলে হতে পারে স্থায়ী ক্ষতি, জেনে নিন ৭টি সতর্ক সংকেত

মানবদেহের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ কিডনি প্রতিদিন প্রায় প্রতি মিনিটে আধা কাপ রক্ত ছেঁকে মূত্র তৈরি করে। শুধু বর্জ্য পদার্থ ও অতিরিক্ত পানি বের করাই নয়, কিডনি শরীর থেকে অ্যাসিড অপসারণ, পানি, লবণ ও খনিজের ভারসাম্য রক্ষা এবং গুরুত্বপূর্ণ হরমোন তৈরির মতো নানা কাজও করে থাকে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে অধিকাংশ মানুষ কিডনির যত্ন নেন না, যতটা নেওয়া উচিত।

কিডনি রোগের প্রাথমিক লক্ষণগুলো প্রায়ই নীরব থাকে। বিশেষজ্ঞদের মতে, নিচের সাতটি সতর্ক সংকেত দেখা দিলে অবহেলা করা বিপজ্জনক হতে পারে।

প্রথমত, বুদবুদযুক্ত প্রস্রাব কিডনির ক্ষতির অন্যতম সাধারণ ইঙ্গিত। প্রস্রাবের রং, ঘনত্ব বা পরিমাণ পরিবর্তিত হতে পারে, এতে ফেনা বা বুদবুদ দেখা দিতে পারে, এমনকি রক্তও মিশতে পারে।

দ্বিতীয়ত, শরীরে ফোলা। ন্যাশনাল কিডনি ফাউন্ডেশনের মতে, কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হলে প্রস্রাবে প্রোটিন লিক হয়, যার ফলে চোখের চারপাশে ফোলাভাব দেখা দেয়। এছাড়া সোডিয়াম জমে পা ও গোড়ালিতে ফোলা সৃষ্টি হতে পারে।

তৃতীয়ত, অবসাদ বা ক্লান্তি। কিডনি কাজ হারালে রক্তে বিষাক্ত পদার্থ জমে যায়। এতে রক্তাল্পতা দেখা দিতে পারে, যার ফলে শরীরে লোহিত কণিকার সংখ্যা কমে যায় এবং দুর্বলতা ও অতিরিক্ত ক্লান্তি দেখা দেয়।

চতুর্থত, নিয়মিত চুলকানি। উন্নত পর্যায়ের কিডনি রোগে খনিজ ও হাড়ের রোগ দেখা দেয়, যা শুষ্ক ও চুলকানিযুক্ত ত্বক হিসেবে প্রকাশ পায়। ঘামগ্রন্থি সঙ্কুচিত হওয়া এবং শরীরের নিজস্ব প্রদাহ এ অবস্থার কারণ হতে পারে।

পঞ্চমত, ইউরেমিয়া। কিডনির কার্যকারিতা কমে গেলে রক্তে বর্জ্য জমে থাকে। এতে মুখের স্বাদ পরিবর্তিত হয় এবং মুখে দুর্গন্ধসহ অন্যান্য সমস্যা দেখা দেয়।

ষষ্ঠত, শ্বাসকষ্ট। ক্ষতিগ্রস্ত কিডনি অতিরিক্ত তরল ফিল্টার করতে না পারলে ফুসফুসে তা জমা হয়। রক্তাল্পতার সঙ্গে মিলিয়ে এটি শ্বাস নিতে কষ্টের কারণ হতে পারে।

সপ্তমত, পেশিতে খিঁচুনি। কিডনি ক্ষতির কারণে শরীরে ইলেক্ট্রোলাইটের ভারসাম্য নষ্ট হয়। ক্যালসিয়ামের ঘাটতি বা ফসফরাসের অনিয়ন্ত্রণ পেশিতে ব্যথাযুক্ত খিঁচুনির কারণ হতে পারে।

যা করবেন
যদি এই লক্ষণগুলোর যেকোনো একটি বা একাধিক দেখা যায়, বিশেষ করে যদি ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ বা পরিবারে কিডনি রোগের ইতিহাস থাকে, তবে দেরি না করে নেফ্রোলজিস্টের পরামর্শ নিন। প্রয়োজনে ডাক্তার রক্ত ও প্রস্রাব পরীক্ষা (যেমন ক্রিয়েটিনিন, জিএফআর, এসিআর) এবং আল্ট্রাসাউন্ড বা সিটি স্ক্যানের মতো ইমেজিং টেস্ট করাতে বলতে পারেন। পাশাপাশি কিডনিবান্ধব জীবনযাপন গড়ে তুলুন সুষম খাদ্য, নিয়মিত ব্যায়াম এবং পর্যাপ্ত পানি পান নিশ্চিত করুন।

কিডনি রোগ যত নীরবেই শুরু হোক না কেন, সময়মতো শনাক্ত ও যত্ন নিলে তা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। তাই সতর্ক সংকেতগুলো অবহেলা না করাই সুস্থ জীবনের মূল চাবিকাঠি।



 

সূত্র: https://tinyurl.com/mwy9jbh

আফরোজা

×