ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৩ জুলাই ২০২৫, ৭ শ্রাবণ ১৪৩২

কম বয়সেই স্ট্রোক! হাভার্ডের গবেষণায় চিহ্নিত ১৭ নিঃশব্দ ঘাতক, সতর্ক থাকুন আজই

প্রকাশিত: ২২:২৮, ২২ জুলাই ২০২৫; আপডেট: ২২:২৯, ২২ জুলাই ২০২৫

কম বয়সেই স্ট্রোক! হাভার্ডের গবেষণায় চিহ্নিত ১৭ নিঃশব্দ ঘাতক, সতর্ক থাকুন আজই

ছবিঃ সংগৃহীত

আজ World Brain Day বা বিশ্ব মস্তিষ্ক দিবস। দিবসটি প্রতিবছর ২২ জুলাই স্নায়ুবিক ব্যাধি সম্পর্কে জনসচেতনতা বাড়াতে পালিত হয়। দিনটিকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি প্রকাশিত হার্ভার্ড অনুমোদিত ম্যাস জেনারেল ব্রিগহ্যামের এক বিশ্লেষণে চিহ্নিত হয়েছে ১৭টি এমন নীরব কারণ, যেগুলো ধীরে ধীরে আমাদের মস্তিষ্ককে আক্রান্ত করছে, যার ফল হতে পারে স্ট্রোক, স্মৃতিভ্রষ্টতা এমনকি মৃত্যুও।

বিশ্বজুড়ে আশঙ্কাজনক হারে তরুণদের মধ্যেই এই সব রোগের ঝুঁকি বেড়ে চলেছে। গবেষণায় দেখা গেছে, এখন অনেকেই ৩০ থেকে ৪০ বছর বয়সেই ডিমেনশিয়া, ব্রেন স্ট্রোক, দীর্ঘস্থায়ী মানসিক চাপ এবং স্নায়বিক দুর্বলতায় আক্রান্ত হচ্ছেন। এসব রোগ সাধারণত একদিনে হয় না, বরং দীর্ঘ সময় ধরে শরীরে গোপনে বাসা বাঁধে।

🧠 মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যহানির ১৭টি নীরব কারণ (Harvard Brain Risk List):

১. উচ্চ রক্তচাপ: ছোট ছোট রক্তনালী ক্ষতিগ্রস্ত হয়, বাড়ে স্ট্রোকের ঝুঁকি।
২. গুরুতর কিডনি রোগ: শরীরের টক্সিন ও তরল ভারসাম্য নষ্ট করে।
৩. ডায়াবেটিস ও প্রি-ডায়াবেটিস: শর্করার মাত্রা বাড়লে ক্ষতি হয় মস্তিষ্কের।
৪. অতিরিক্ত খারাপ কোলেস্টেরল (LDL): প্লাক তৈরি করে স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়।
৫. অতিরিক্ত ওজন ও পেটের চর্বি: নিউরনের ক্ষয় ঘটায়।
৬. নিকোটিন গ্রহণ: মস্তিষ্কে অক্সিজেন সরবরাহ কমায়, রক্তনালীর ক্ষতি করে।
৭. অতিরিক্ত মদ্যপান: ব্রেনের গ্রে ম্যাটার কমায়, স্মৃতি ও আবেগ নিয়ন্ত্রণ দুর্বল করে।
৮. অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস: মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা কমায়।
৯. বসে বসে কাজ করা: কমে যায় রক্তসঞ্চালন, বাড়ে ঝুঁকি।
১০. ঘুমের ঘাটতি: মস্তিষ্কের পুনরুদ্ধার বাধাগ্রস্ত হয়।
১১. দীর্ঘস্থায়ী মানসিক চাপ: স্মৃতিশক্তি ও আবেগ ক্ষতিগ্রস্ত করে।
১২. শ্রবণশক্তি হ্রাস: মনোযোগ ও চিন্তার ক্ষমতা কমে।
১৩. দীর্ঘস্থায়ী মাথাব্যথা: মনোযোগ ও কাজের দক্ষতা কমায়।
১৪. সামাজিক বিচ্ছিন্নতা: ডিপ্রেশন ও ডিমেনশিয়ার আশঙ্কা বাড়ায়।
১৫. জীবনের লক্ষ্যহীনতা: মানসিক অবক্ষয়ের সম্ভাবনা বাড়ায়।
১৬. অপ্রতিবৃষ্ট মানসিক স্ট্রেস: চিকিৎসা না নিলে স্ট্রোকের সম্ভাবনা বাড়ে।
১৭. মাঝেমধ্যেই স্নায়বিক সমস্যাকে হালকা ভাবে নেওয়া: বিলম্বে চিকিৎসা মস্তিষ্কে দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি ডেকে আনে।

কী করণীয়?

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মস্তিষ্ক সুস্থ রাখতে চাইলে নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম, পর্যাপ্ত ঘুম, স্বাস্থ্যকর খাবার এবং মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ জরুরি। সেই সঙ্গে নেশা ও ধূমপান থেকে বিরত থাকতে হবে।

উপসংহার:

মস্তিষ্কের অসুখকে কখনোই হালকা করে দেখার সুযোগ নেই। গবেষণা বলছে, এই সমস্যাগুলো দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে তরুণদের মধ্যেই। তাই আজ থেকেই যদি আপনি এই ১৭টি নিঃশব্দ ঘাতকের দিকে নজর দেন, তবে হয়তো বাঁচানো যাবে অমূল্য স্মৃতিশক্তি, আবেগ ও জীবন।

ইমরান

আরো পড়ুন  

×