
বয়স ৪০ পার হলে শরীরের যত্ন নেওয়া শুধু গুরুত্বপূর্ণ নয়, অপরিহার্য। বিশেষ করে হাড়ের স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতন হওয়া জরুরি। কারণ এই বয়সের পর থেকেই হাড়ের খনিজ ঘনত্ব কমতে থাকে, বাড়ে অস্টিওপরোসিস বা হাড় ভেঙে যাওয়ার ঝুঁকি। অথচ প্রতিদিন আমাদের খাবার তালিকায় কিছু এমন জিনিস থাকে, যা হাড়ের ক্ষতি ডেকে আনে জানতেও পারি না।
চলুন জেনে নেওয়া যাক কোন কোন খাবার আপনার হাড়কে দিনে দিনে দুর্বল করে তুলছে।
১. কোল্ড ড্রিংক বা কার্বনেটেড পানীয়
কোলা বা ফিজি পানীয় সাময়িক সতেজতা দিলেও এটি হাড়ের শত্রু। এতে থাকা ফসফরিক অ্যাসিড শরীরে ক্যালসিয়ামের ভারসাম্য নষ্ট করে। ফলে শরীর হাড় থেকে ক্যালসিয়াম টেনে নেয় ক্ষতিপূরণ করতে, যা হাড়কে ভঙ্গুর করে ফেলে।
২. অতিরিক্ত ক্যাফেইনযুক্ত পানীয়
চা, কফি, এনার্জি ড্রিংক এসব থেকে অতিরিক্ত ক্যাফেইন শরীর থেকে ক্যালসিয়াম বের করে দেয় প্রস্রাবের মাধ্যমে। ক্যালসিয়ামের এই ধীরে ধীরে হ্রাস হাড়ের ঘনত্ব কমিয়ে দেয়, যা নারীদের ক্ষেত্রে বিশেষভাবে ঝুঁকিপূর্ণ বিশেষ করে মেনোপজ-পরবর্তী সময়ে।
৩. পরিশোধিত চিনি
চকলেট, ক্যান্ডি, বেকড ফুডস এসবের অতিরিক্ত চিনি শরীরে ইনসুলিন প্রতিরোধ ও প্রদাহ বাড়ায়। এতে হাড় গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় হরমোনে ভারসাম্যহীনতা দেখা দেয়। চিনি ম্যাগনেসিয়াম ও ক্যালসিয়ামের শোষণ বাধাগ্রস্ত করে, যা হাড়কে দুর্বল করে তোলে।
৪. অতিরিক্ত লবণযুক্ত খাবার
স্ন্যাকস, চিপস, ফাস্টফুড এইসব অতিরিক্ত সোডিয়াম হাড় থেকে ক্যালসিয়াম বের করে দেয়। এতে অস্টিওপরোসিসের ঝুঁকি বাড়ে। WHO অনুযায়ী দৈনিক সোডিয়াম গ্রহণ ৫ গ্রামের মধ্যে রাখা উচিত।
৫. অ্যালকোহল ও ধূমপান
এই দুই অভ্যাস সরাসরি হাড়ের খনিজ ঘনত্ব কমিয়ে দেয়। হাড়ে রক্তপ্রবাহ কমে, ক্যালসিয়াম শোষণ ব্যাহত হয় এবং হাড়ের ক্ষয় দ্রুত হয়। তাই হাড় সুস্থ রাখতে এসব থেকে দূরে থাকাই শ্রেয়।
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ
হাড়ের স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে চাইলে আপনার খাদ্যতালিকায় রাখতে হবে:
- দুধ, দই, পনির (ক্যালসিয়ামসমৃদ্ধ)
- বাদাম, তিল, সামুদ্রিক মাছ
- ভিটামিন ডি (সূর্যের আলো)
- নিয়মিত ব্যায়াম ও পর্যাপ্ত বিশ্রাম
আমরা যা খাই, তা-ই আমাদের শরীরকে গড়ে তোলে অথবা ধ্বংস করে। হাড়ের সুস্থতা ধরে রাখতে কিছু খাবারকে সীমিত করতে হবে, আবার কিছু উপকারী খাবারকে প্রতিদিনের অভ্যাসে পরিণত করতে হবে। সচেতন থাকুন, সুস্থ থাকুন।
মিমিয়া