ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২৯ জুন ২০২৫, ১৬ আষাঢ় ১৪৩২

ঘণ্টার পর ঘণ্টা ফেসবুক স্ক্রল করছেন? মস্তিষ্কে কী ঘটছে জানলে আশ্চর্য হবেন!

প্রকাশিত: ০০:০৭, ২৯ জুন ২০২৫; আপডেট: ০০:১০, ২৯ জুন ২০২৫

ঘণ্টার পর ঘণ্টা ফেসবুক স্ক্রল করছেন? মস্তিষ্কে কী ঘটছে জানলে আশ্চর্য হবেন!

ছবি: সংগৃহীত

আপনি হয়তো ভাবছেন, “আর একটু দেখি, তারপরই বন্ধ করব”—কিন্তু মিনিট গড়িয়ে ঘণ্টা পেরিয়ে যাচ্ছে! ফেসবুকে একটার পর একটা পোস্ট, ভিডিও, রিল, কমেন্টে চোখ আটকে যাচ্ছে। এই অভ্যাসটা শুধু সময় নষ্টই করছে না, আপনার মস্তিষ্কে ঘটিয়ে দিচ্ছে নীরব বিপর্যয়।

ফেসবুক বারবার নতুন কনটেন্ট দেখায়। আপনি যতবার নতুন কিছু দেখেন, ততবার ‘ডোপামিন’ নামক আনন্দের হরমোন নিঃসরণ হয়। এই সাময়িক আনন্দ আপনাকে আসক্ত করে ফেলে। ফলাফল—আপনার মন আর নিজে থেকে স্ক্রল থামাতে চায় না।

দীর্ঘ সময় স্ক্রলিংয়ের প্রভাব:
মনোযোগে ঘাটতি: বারবার নোটিফিকেশন, ভিডিও, পোস্ট—মস্তিষ্কের মনোযোগ নষ্ট করে দেয়।
তথ্য জট: অতিরিক্ত ইনফরমেশন ব্রেইনের উপর চাপ ফেলে, গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মুখস্থ রাখতে সমস্যা হয়।
ঘুম নষ্ট: রাতে স্ক্রল করার সময় স্ক্রিনের নীল আলো (blue light) ঘুমের হরমোন মেলাটোনিন কমিয়ে দেয়।
আত্মসম্মানবোধে প্রভাব: অন্যদের “সফলতা” ও “ভালো জীবন” দেখে নিজের জীবনকে তুচ্ছ মনে হতে পারে।
মানসিক চাপ ও উদ্বেগ: “কী মিস করলাম?” এই FOMO (Fear of Missing Out) অনুভূতি তৈরি হয়।

আপনি কি আসক্ত?
দিনের ২ ঘণ্টার বেশি সময় ফেসবুকে কাটান
না দেখলে অস্থিরতা অনুভব করেন
ঘুমানোর আগে ফেসবুক না দেখলে ঘুম আসে না
কাজের সময়েও বারবার অ্যাপ খুলে ফেলেন

সমাধান কী?
ডেইলি স্ক্রিন টাইম নির্ধারণ করুন
ফেসবুক নোটিফিকেশন বন্ধ রাখুন (বিশেষ করে রাতে)
বিছানায় ফোন নেওয়া বাদ দিন
স্ক্রলিংয়ের বিকল্প হিসেবে বই পড়া বা হাঁটাহাঁটি করুন
সাপ্তাহিক ‘ডিজিটাল ডিটক্স’ দিন নির্ধারণ করুন

যুক্তরাষ্ট্রের নিউরোসায়েন্স রিসার্চ ইনস্টিটিউটের গবেষণা অনুযায়ী, দীর্ঘ সময় সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারে মস্তিষ্কের প্রিফ্রন্টাল কর্টেক্স দুর্বল হয়ে পড়ে, যা সিদ্ধান্ত নেওয়া, মনোযোগ এবং আবেগ নিয়ন্ত্রণের সঙ্গে যুক্ত।

ফেসবুক একসময় যোগাযোগের মাধ্যম ছিল, এখন হয়ে উঠেছে সময় খাওয়ার ফাঁদ। আপনি যদি নিজের ফোকাস, ঘুম, ও মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি চান—তবে সময় এখনই। স্ক্রল নয়, জীবনকে দিন স্ক্রিনমুক্ত গুরুত্ব।

ফারুক

×