তামার না স্টিলের বোতল—কোনটায় পানি পান করলে বেশি উপকার?

"পানির অপর নাম জীবন"—শুধু কথার কথা নয়, শরীরকে সুস্থ রাখার পেছনে পানির ভূমিকা অনস্বীকার্য। পানি কম পান করলে শরীর ক্লান্ত লাগে, হজমে সমস্যা হয়, এমনকি নানা ধরনের জটিল রোগও পিছু নিতে পারে। এ কারণেই অনেকেই এখন নিয়ম মেনে সময়মতো পানি পান করার অভ্যাস গড়ে তুলেছেন।

তবে এখানেই আসে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন—পানি কোন বোতলে রাখা সবচেয়ে ভালো?
অনেকেই দ্বিধায় পড়েন, স্টিল না তামার বোতলে পানি পান করলে বেশি উপকার মিলবে?

বিশেষজ্ঞরা কী বলছেন?

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, স্টিল এবং তামা—এই দুটি ধাতুই নিরাপদ। দুটোরই নিজস্ব সুবিধা রয়েছে। তবে তামার বোতলে সংরক্ষিত পানি মাঝে মাঝে পান করলে শরীরের জন্য কিছু বাড়তি উপকার পাওয়া যায়।

তামা একটি প্রয়োজনীয় খনিজ, যা শরীরে ছোট পরিমাণে থাকলে রোগপ্রতিরোধে সহায়তা করে। এর মধ্যে রয়েছে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য, যা রোগজীবাণু ধ্বংসে সাহায্য করে।

তবে তামার বোতলের উপকার পেতে গেলে কিছু গুরুত্বপূর্ণ নিয়ম মেনে চলা আবশ্যক।

তামার বোতলের পানি পান করার ৫টি সঠিক নিয়ম

১. গরম বা বরফ ঠান্ডা পানি নয়:
তামার বোতলে অতিরিক্ত গরম বা অত্যন্ত ঠান্ডা পানি রাখা ঠিক নয়। এতে তামা বেশি পরিমাণে পানিতে মিশে গিয়ে শরীরের ক্ষতি করতে পারে।

২. নিয়মিত নয়, মাঝে মাঝে পান করুন:
প্রতিদিন তামার বোতলের পানি পান করলে শরীরে অতিরিক্ত তামা জমে গিয়ে লিভার সমস্যা বা পেটের গ্যাস্ট্রিক হতে পারে। তাই মাঝে মাঝে খাওয়া ভালো।

৩. সারা রাত পানি রেখে খাবেন না:
অনেকেই রাতে পানি রেখে সকালে খান। কিন্তু তামার বোতলে দীর্ঘ সময় পানি রেখে খাওয়া ক্ষতিকর হতে পারে।

৪. পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা জরুরি:
তামার বোতল প্রতিদিন ভালোভাবে ধুয়ে ব্যবহার করা উচিত। না হলে এতে জমে থাকা অক্সিডেশন বা দাগ শরীরের ক্ষতির কারণ হতে পারে।

৫. খাঁটি ও মানসম্পন্ন বোতল ব্যবহার করুন:
বাজারে নানা রকম কম দামের তামার বোতল পাওয়া যায়, তবে বিশ্বস্ত ব্র্যান্ড থেকে কেনাই নিরাপদ।

তামার বোতলের পানি মাঝে মাঝে খাওয়া শরীরের জন্য ভালো—তবে অন্ধভাবে নয়। সঠিক নিয়ম মেনে চললে উপকার মিলবে, অন্যথায় ক্ষতির আশঙ্কাও রয়েছে। তাই সচেতন হয়ে প্রতিদিনের পানির সঙ্গী বেছে নিন।