ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২৯ জুন ২০২৫, ১৬ আষাঢ় ১৪৩২

অধিনায়কত্ব ছাড়লেন শান্ত

শাকিল আহমেদ মিরাজ

প্রকাশিত: ০০:০০, ২৯ জুন ২০২৫

অধিনায়কত্ব ছাড়লেন শান্ত

কলম্বোতে সংবাদ সম্মেলনে শান্ত

বাংলাদেশের প্রথম অধিনায়ক হিসেবে গলে ড্র টেস্টের দুই ইনিংসে সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে ইতিহাস গড়েছিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। কলম্বো টেস্টের পর সেই তিনিই হয়ে গেলেন সাবেক অধিনায়ক! সিংহলিজ স্পোর্টস ক্লাব গ্রাউন্ডে দ্বিতীয় টেস্টে শনিবার চতুর্থদিনে ইনিংস ও ৭৮ রানের বড় হারে ১-০ ব্যবধানে সিরিজ খুইয়েছে বাংলাদেশ। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়কের দায়িত্ব থেকে ইস্তফার ঘোষণা দেন শান্ত। জানান, ব্যক্তিগত কোনো মান-অভিমান নয়, দলের স্বার্থেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেনে তিনি। 
সফরের ঠিক আগে কোনোরকম আলোচনা না করে শান্তকে ওয়ানডের নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে দায়িত্ব দেওয়া হয় মেহেদি হাসান মিরাজকে। বিষয়টা মোটেই ভালোভাবে নিতে পারেননি ২৬ বছরের এ ক্রিকেটার। গুঞ্জন ওঠে শ্রীলঙ্কা সফরেই দায়িত্ব ছাড়তে যাচ্ছেন তিনি। শেষ পর্যন্ত সেটিই সত্যি হলো। ২০২৩ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিলেট টেস্ট দিয়ে সাদা পোশাকে নেতৃত্বে অভিষেক হয় শান্তর। এ পর্যন্ত ১৪ টেস্টে নেতৃত্ব দিয়েছেন বাংলাদেশের হয়ে, যা পঞ্চম সর্বোচ্চ। 
‘আমি বাংলাদেশ দলের অধিনায়কের পদ থেকে সরে দাঁড়াচ্ছি। আমি টেস্ট সংস্করণে আর এই দায়িত্ব পালন করতে চাই না। সবাইকে পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, এটা ব্যক্তিগত কোনো কিছু নয়। পুরোপুরি দলের ভালোর জন্য আমি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি এবং আমি মনে করি, এটাতে দলের ভালো কিছু হবে। এই ড্রেসিংরুমে কয়েক বছর ধরে, লম্বা সময় ধরে আমার থাকার সুযোগ হয়েছে। এটা আমার ব্যক্তিগত মতামত যে, তিনজন অধিনায়ক দলের জন্য সমস্যা হতে পারে। দলের ভালোর জন্য এখান থেকে সরে আসছি। যদি ক্রিকেট বোর্ড মনে করে তিনজন অধিনায়কই রাখবে এটা তাদের সিদ্ধান্ত।’ 
সংবাদ সম্মেলনের একেবারে শেষদিকে বলেন শান্ত। সিদ্ধান্তটি যে ব্যক্তিগত আবেগ-অনুভূতি নিয়ে নয় সেটি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি আরও যোগ করেন, ‘আমি আশা করব, কেউ যেন এরকম না মনে করে যে, আমি ব্যক্তিগত কোনো কারণে বা রাগ থেকে সিদ্ধান্তটা নিয়েছি। এটা আমি নিশ্চিত করলাম এটা দলের ভালোর জন্য, এখানে ব্যক্তিগত কিছু নেই।’ পাশাপাশি বাংলাদেশের ক্রিকেটে তিন ফরম্যাটে তিন অধিনায়কের প্রয়োজন আছে বলেও মনে করেন না শান্ত। 
তবে সেই সিদ্ধান্তটা যে বিসিবির সেটিও বলেছেন তিনি। কিছুদিন আগে পর্যন্ত টেস্ট, ওয়ানডে ও টি২০- তিন সংস্করণেই বাংলাদেশের অধিনায়ক ছিলেন শান্ত। পরে তিনি স্বেচ্ছায় টি২০র দায়িত্ব ছাড়লে তার জায়গায় অধিনায়ক করা হয় লিটন কুমার দাসকে। এরপর গত ১২ জুন হুট করেই ওয়ানডে অধিনায়ক হিসেবে মিরাজের নাম জানায় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। 
এবার শান্ত নিজেই সরে গেলেন টেস্ট অধিনায়কত্ব থেকে। তবে বিসিবির একাধিক সূত্র জানিয়েছে, কলম্বো টেস্ট শেষেই যে এভাবে হুট করে ঘোষণা দেবেন কাউকেই সেটি জানাননি শান্ত। বিষয়টা আরও ভালোভাবে হতে পারত বলেও মনে করেন তারা। 
শনিবার বাংলাদেশের টেস্ট (স্ট্যাটাসের ২৫ বছর) রজতজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে রংপুরে ছিলেন বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল। বোর্ডের কিছু করার ছিল কি না? এ প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘বোর্ড প্রেসিডেন্ট একজন পরিচালক। এককভাবে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় না, যা সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় সেটা বোর্ডের একক সিদ্ধান্ত ও নীতিগত সিদ্ধান্ত।’ 
বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান টেস্টে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিয়েছেন ১৪ ম্যাচে। যেখানে বাংলাদেশ জিতেছে ৪টি, হেরেছে ৯টি ম্যাচ। আর শ্রীলঙ্কা সিরিজে গলে প্রথম টেস্টে পাওয়া ড্র-ই শান্তর অধিনায়কত্বে বাংলাদেশের একমাত্র ড্র। এ সময়ে বাংলাদেশ পাকিস্তান ও নিউজিল্যান্ডের মতো দলের বিপক্ষেও টেস্ট জিতেছে। অধিনায়ক হিসেবে তার প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ হারিয়েছিল নিউজিল্যান্ডকে। গত বছর রাওয়ালপিন্ডিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে ২-০তে সিরিজ জিতে বাংলাদেশ। বাকি জয়টা এ বছরই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে।

×