ক্যানসার এখন আর কেবল একটি রোগ নয়, বরং এক গভীর আতঙ্কের নাম। এই রোগ শুধু রোগীকেই নয়, তার পরিবারের সদস্যদেরও ফেলে দেয় চরম মানসিক চাপে। চিকিৎসা বিজ্ঞানে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সত্ত্বেও এখনো অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ক্যানসার শনাক্ত হয় তৃতীয় বা চতুর্থ ধাপে, যেখানে চিকিৎসা প্রক্রিয়া হয়ে ওঠে অনেক বেশি জটিল ও ব্যয়বহুল।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, আমাদের দৈনন্দিন অভ্যাস—যেমন খাওয়া-দাওয়া, শারীরিক কার্যক্রমের অভাব, মানসিক চাপ এবং দূষিত পরিবেশ—এই সবকিছুই ক্যানসারের সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়। স্তন, ফুসফুস, কোলন, প্রস্টেট ও অগ্ন্যাশয়ের ক্যানসারের হার আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে।
তবে আশার কথা হলো—জীবনধারায় কিছু সহজ পরিবর্তনের মাধ্যমেও ক্যানসারের ঝুঁকি অনেকটাই কমানো সম্ভব। হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির একদল গবেষক জানাচ্ছেন, দামি ওষুধ বা সাপ্লিমেন্ট নয়, বরং প্রতিদিন তিনটি সহজ ঘরোয়া পানীয় খাওয়ার অভ্যাসেই শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো সম্ভব এবং এতে ক্যানসারের ঝুঁকিও হ্রাস পায়।
তাদের সুপারিশকৃত সেই তিন পানীয় হলো—
১. মাচা গ্রিন টি
মাচা চা-তে থাকে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট, পলিফেনল ও অ্যামাইনো অ্যাসিড, যা শরীরের ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করে। এটি রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়, প্রদাহ কমায় এবং কিছু উপাদান ক্যানসার কোষের বিকাশও প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। নিয়মিত মাচা চা পান করলে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়।
২. সবুজ স্মুদি
বিভিন্ন শাকসবজি দিয়ে তৈরি এই স্মুদি ফাইবারে সমৃদ্ধ এবং এতে থাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, সি, ই এবং খনিজ যেমন পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও আয়রন। এই উপাদানগুলো শরীরের প্রতিরোধ ব্যবস্থা জোরদার করে এবং প্রতিদিন এক গ্লাস সবুজ স্মুদি খেলে শরীর নিজেই বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে সক্ষম হয়ে ওঠে।
৩. হলদি দুধ
হলুদের প্রধান উপাদান কারকিউমিন ক্যানসার প্রতিরোধে বিশেষভাবে কার্যকর। এর সঙ্গে সামান্য দারচিনি ও গোলমরিচ মিশিয়ে খেলে তা আরও বেশি শক্তিশালী প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে। এই পানীয় প্রদাহ কমায়, শরীরকে ডিটক্স করে এবং কোষের ক্ষতি প্রতিরোধ করে।
গবেষকরা বলছেন, ক্যানসারের মতো প্রাণঘাতী রোগ থেকে বাঁচতে হলে এখনই সচেতন হওয়া প্রয়োজন। প্রতিদিনের খাবার তালিকায় এই তিনটি পানীয় যুক্ত করা যেতে পারে একটি সহজ কিন্তু কার্যকর পদক্ষেপ হিসেবে। তাতে শরীর যেমন রোগ প্রতিরোধে সক্ষম হবে, তেমনি মানসিকভাবেও তৈরি হবে ইতিবাচক এক আত্মবিশ্বাস।
রিফাত
