ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২৯ জুন ২০২৫, ১৫ আষাঢ় ১৪৩২

৪০ বছরেও মাথা গোঁজার ঠাঁই মেলেনি বিধবা মমেনার

মারুফুর রহমান, শেরপুর

প্রকাশিত: ০৮:৪৮, ২৯ জুন ২০২৫

৪০ বছরেও মাথা গোঁজার ঠাঁই মেলেনি বিধবা মমেনার

পঁচিশ বছর বয়সে স্বামীকে হারিয়ে শুরু হয়েছিল এক নারীর একাকী সংগ্রাম। এরপর কেটে গেছে চার দশক। কিন্তু তবু ঘর হয়নি, হয়নি ঠিকানার নিশ্চয়তা। শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার নলকুড়া ইউনিয়নের গোমড়া গ্রামের বিধবা মমেনা বেগম এখনও গৃহহীন। আজও তার আশ্রয় অন্যের ঘরে, আতঙ্কে-অস্থির, কবে আবার বের করে দেয়!

স্বামী ফজল মিয়া ছিলেন দিনমজুর, ছিলেন ঘরহীনও। মমেনারও জীবন কেটেছে অন্যের বাড়িতে। স্বামীর মৃত্যুর পর তিন ছেলে সংসার পেতেছে আলাদা, কিন্তু মায়ের ভাগ্যে জোটেনি একটি আশ্রয়। নদী থেকে মাছ ধরে বিক্রি করে অথবা দিনে-দিনে শ্রম দিয়ে চলে তার জীবনযুদ্ধ। বয়সের ভারে নুয়ে পড়লেও থামেনি লড়াই।

সম্প্রতি এক বাড়ি থেকে বিতাড়িত হয়ে আশ্রয় নিয়েছেন আরেক গৃহহীন নারী আঙ্গুরি বেগমের ঘরে। তবুও অজানা ভয় তাড়া করে ফেরে, এই আশ্রয়ও হয়তো চিরস্থায়ী নয়।

সবচেয়ে বেদনাদায়ক সত্য হলো, গোমড়া গুচ্ছগ্রামে তৈরি ৩০টি ঘরের বেশ কয়েকটি বছরের পর বছর তালাবদ্ধ। কেউ কেউ ঘর বরাদ্দ নিয়েও সেখানে থাকেন না, কেউ আবার বিক্রি করে দিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। অথচ প্রকৃত গৃহহীন মমেনা বেগম একবারের জন্যও পাননি কোনো সরকারি সহায়তা, বরাদ্দ হয়নি একটি ঘর।

মমেনা বেগম জানান, জনপ্রতিনিধিদের দ্বারে বহুবার গেছেন, প্রতিশ্রুতি শুনেছেন, কিন্তু ঘর পাননি। শুধু স্বপ্ন দেখেছেন, একদিন নিজের মতো করে এক কোণা হবে, একটুকু শান্তি মিলবে।

এ বিষয়ে ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশরাফুল আলম রাসেল জানান, বিষয়টি তদন্ত করে দেখবেন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন। বিধবা মমেনা বেগমের সেই একবেলা শান্তির আশ্রয় কি আদৌ মিলবে? নাকি গুচ্ছগ্রামের তালাবদ্ধ ঘরগুলোর সামনে দাঁড়িয়ে তার দীর্ঘশ্বাস আরও ভারী হয়ে উঠবে!

আঁখি

×