
গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর আরও এক দফা ভয়াবহ হামলায় অন্তত ৮১ ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন। আহত হয়েছেন চার শতাধিক মানুষ। ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, শনিবার (২৮ জুন) দুপুর পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় গাজার বিভিন্ন এলাকায় এসব হামলার ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও আল-শিফা হাসপাতালের কর্মীদের বরাত দিয়ে জানানো হয়, গাজা নগরীর একটি স্টেডিয়ামের কাছাকাছি এলাকায় চালানো এক বোমা হামলায় অন্তত ১১ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে শিশুও রয়েছে। ওই স্টেডিয়ামে হাজার হাজার উদ্বাস্তু ফিলিস্তিনি তাঁবু গেড়ে আশ্রয় নিয়েছিলেন। হামলার পর পরই মানুষ খালি হাতে মাটি খুঁড়ে মরদেহ উদ্ধারে ছুটে যান।
প্রত্যক্ষদর্শী আহমেদ কিশাউই বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘আমরা কয়েকজন একসঙ্গে বসে ছিলাম। হঠাৎ পাশের রাস্তায় বিকট বিস্ফোরণের শব্দ শুনি। পুরো এলাকা তাঁবুতে ভরা ছিল, এখন সবই বালির নিচে চাপা পড়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘এখানে কোনো সন্ত্রাসী ছিল না। তবু সাধারণ মানুষ ও শিশুদের প্রতি বিন্দুমাত্র দয়া দেখানো হয়নি।’
গাজার আল-মাওয়াসি এলাকায় আরও এক হামলায় আবাসিক ভবন ও তাঁবু লক্ষ্য করে বোমাবর্ষণ করে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে আরও অন্তত ১৪ জন নিহত হন, যাদের মধ্যে কয়েকটি শিশুও রয়েছে। নিহতদের স্বজনরা বলেন, হামলার সময় তাঁরা শিশুদের নিয়ে ঘুমিয়ে ছিলেন।
এছাড়া গাজা নগরের তুফাহ এলাকায় জাফা স্কুলের কাছাকাছি একটি স্থানে বিমান থেকে বোমা ফেলে ইসরায়েলি বাহিনী। ওই এলাকাতেও আশ্রয় নিয়েছিলেন শত শত উদ্বাস্তু। এই হামলায় অন্তত আটজন প্রাণ হারিয়েছেন, যাদের মধ্যে পাঁচজনই শিশু।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে চলমান ইসরায়েলি আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত গাজায় প্রাণ হারিয়েছেন ৫৬ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি। নিহতদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।
তবে ইসরায়েলি দৈনিক হারেৎজ শুক্রবার এক গবেষণার বরাতে জানায়, গাজায় ইসরায়েলি হামলায় প্রকৃতপক্ষে প্রায় এক লাখ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। গবেষণাটি পরিচালনা করেছেন ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনের হোলোওয়ে কলেজের অর্থনীতিবিদ ও সংঘাতজনিত মৃত্যুর আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত গবেষক অধ্যাপক মাইকেল স্পাগাট।
রিফাত