ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২৯ জুন ২০২৫, ১৫ আষাঢ় ১৪৩২

সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছেন? জানুন এর কারণ ও মুক্তির উপায়

প্রকাশিত: ০৮:২১, ২৯ জুন ২০২৫

সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছেন? জানুন এর কারণ ও মুক্তির উপায়

ছ‌বি: প্রতীকী

আমাদের অনেকেরই জীবনে এমন সময় আসে, যখন কোনও সিদ্ধান্ত নিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয়। কেউ কেউ দীর্ঘদিন ধরেই এই সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন। তারা সমাজে গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকলেও, দায়িত্বশীল অবস্থানে থেকেও, সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না। এই সিদ্ধান্তহীনতা শুধু ব্যক্তির স্বভাবের উপর নির্ভর করে না, এর পেছনে থাকতে পারে মানসিক নানা সমস্যা।

বিশেষজ্ঞদের মতে, সিদ্ধান্ত নিতে না পারার অন্যতম কারণ হচ্ছে মানসিক চাপ, উদ্বেগ ও দুশ্চিন্তা। যখন কেউ অতিরিক্ত উদ্বেগে বা স্ট্রেসে থাকেন, তখন তার চিন্তা করার সামর্থ্য প্রভাবিত হয়। এমন অবস্থায় ঠান্ডা মাথায় পরিস্থিতি মূল্যায়ন করা, ভবিষ্যৎ ভেবে সিদ্ধান্ত নেওয়া কঠিন হয়ে পড়ে।

আরেকটি বড় কারণ হলো বিষণ্নতা। বিষণ্নতায় আক্রান্ত ব্যক্তি নিজের সম্পর্কে নেতিবাচকভাবে ভাবেন। তার আত্মবিশ্বাস কমে যায়, চিন্তার গতি ধীর হয়ে যায় এবং আবেগও ক্ষীণ হয়ে পড়ে। ফলে তিনি নিজের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়— চাকরি, ব্যবসা, শিক্ষা বা পারিবারিক বিষয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না। এমনকি অনেক সময় ভুল সিদ্ধান্ত নেন, যার মূল্য তাকে অর্থনৈতিক, সামাজিক ও ব্যক্তিগতভাবে দিতে হয়।

বিশেষজ্ঞরা আরও জানান, হর্ষবিষাদ উন্মত্ততা বা ম্যানিক ডিপ্রেসিভ সাইকোসিস-এ আক্রান্ত ব্যক্তিরাও সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগেন। অতিরিক্ত উত্তেজনার সময় তারা হঠাৎ করেই বড় সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন, যার পরিণতিতে পরে পস্তাতে হয়। আবার বিষণ্ন অবস্থায় গিয়েও সিদ্ধান্ত নেওয়া কঠিন হয়ে পড়ে।

এছাড়াও বাস্তব জ্ঞান ও অভিজ্ঞতার অভাব, বা অতি হিসেব-নিকেশের প্রবণতা থেকেও মানুষ সিদ্ধান্তহীনতায় পড়তে পারে।

তবে ভালো খবর হলো এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, যারা দীর্ঘদিন ধরে সিদ্ধান্ত নিতে সমস্যায় ভুগছেন, তারা যেন একজন মনোরোগ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন। একটি গাইডলাইন বা চেকলিস্ট মেনে চললে, যে কোন সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় কী কী বিবেচনা করতে হবে, তা পরিষ্কার হয়ে যায়। ফলে ভুল সিদ্ধান্তের সম্ভাবনা অনেকটাই কমে আসে।

নিজেকে বুঝতে শিখুন, পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করতে শিখুন, এবং প্রয়োজনে সাহায্য নিতে পিছপা হবেন না। তাহলেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা আগের চেয়ে অনেক বেশি সুসংহত ও কার্যকর হয়ে উঠবে।

ভিডিও দেখুন: https://youtu.be/sOxrsGc1Xck?si=x7LMoP5pkj6O1sPU

এম.কে.

×