দেরি করলে বুঝতে পারবেন না, স্মৃতিধারা হারানোর কারণ হতে পারে এই ৩ পানীয়!

আমাদের দৈনন্দিন জীবনের ছোট ছোট অভ্যাসগুলোই মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের ওপর বড় প্রভাব ফেলে। বিশেষ করে কিছু সাধারণ পানীয় আছে, যা নিয়মিত খেলে অ্যালঝেইমার বা স্মৃতিভ্রংশের ঝুঁকি বাড়তে পারে। নিউরোসায়েন্টিস্ট রবার্ট ডব্লিউবি লাভের গবেষণায় প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, এই তিনটি পানীয় মস্তিষ্কের জন্য ক্ষতিকর এবং এগুলো থেকে কীভাবে দূরে থাকা যায় তা এখানে তুলে ধরা হলো।

ডায়েট সোডা: “চিনি মুক্ত” পানীয়ের বিপদ
অনেকে চিনির বদলে ডায়েট সোডাকে স্বাস্থ্যকর বিকল্প মনে করেন। কিন্তু গবেষণায় দেখা গেছে, যারা নিয়মিত দিনে একবার বা তার বেশি আর্টিফিশিয়াল মিষ্টিকারকযুক্ত পানীয় পান করেন, তাদের স্ট্রোক এবং স্মৃতিভ্রংশসহ বিভিন্ন মস্তিষ্কজনিত রোগের ঝুঁকি প্রায় তিন গুণ বেড়ে যায়। ডায়েট সোডায় থাকা আসপারটেম ও সুক্রালোজ মস্তিষ্কের ইনসুলিন সংবেদনশীলতা নষ্ট করে এবং মস্তিষ্কে প্রদাহ সৃষ্টি করে, যা আলঝেইমারের কারণ হতে পারে।
বিকল্প: লেবু বা পুদিনা মিশিয়ে স্পার্কলিং পানি খেতে পারেন, যা স্বাদেও মনকে ভরিয়ে দেয় এবং মস্তিষ্কের পক্ষে উপকারী।

চিনি ভর্তি কফি
কফি অনেকের জন্য সকালে অথবা কাজের মাঝে একটি আনন্দদায়ক পানীয়। তবে অধিকাংশ বাণিজ্যিক কফিতে ৬০ গ্রাম পর্যন্ত চিনি থাকে, যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সুপারিশকৃত দৈনিক চিনি গ্রহণের দ্বিগুণ। চিনি ইনসুলিনের মাত্রা বাড়িয়ে মস্তিষ্কে ইনসুলিন প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করে, যা মস্তিষ্কের কোষের ক্ষতি করে এবং স্মৃতিভ্রংশের দিকে নিয়ে যায়।
বিকল্প: কালো কফি খান দারুচিনি বা হলুদের এক ফোঁটা মিশিয়ে। সামান্য মিষ্টতার জন্য কাঁচা মধু বা গুড় ব্যবহার করতে পারেন, তবে সংযমী হোন।

স্কিম মিল্ক (কম চর্বিযুক্ত দুধ)
স্কিম মিল্ক কম চর্বি থাকায় অনেকেই স্বাস্থ্যকর মনে করেন। কিন্তু চর্বি সরালে দুধ থেকে ভিটামিন এ, ডি, ই ও কে হারিয়ে যায়, যা মস্তিষ্কের সুরক্ষার জন্য অপরিহার্য। ভিটামিন ডি এর অভাব মস্তিষ্কের রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। তাছাড়া, কম চর্বিযুক্ত দুগ্ধজাত পণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ মস্তিষ্কের কোষ মেরামতে বাধা দেয়।
বিকল্প: পরিমিত পরিমাণে গোটা দুধ, বিশেষ করে অর্গানিক ও ঘাস খাওয়ানো গরুর দুধ পান করুন। ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ বাদাম বা ওট মিল্ক প্ল্যান্ট বেসড বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন।

মস্তিষ্কের যত্ন নেওয়া ছোট ছোট অভ্যাস থেকে শুরু হয়। প্রতিটি পানীয়ের প্রতিটি এক ফোঁটা মস্তিষ্কের সুস্থতায় প্রভাব ফেলে। তাই, ডায়েট সোডার বদলে লেবুর পানি, চিনি ভর্তি কফির বদলে কালো কফি বেছে নিন এবং মস্তিষ্ককে সুস্থ রাখুন।

অতিরিক্ত কিছু করণীয়:

• নিয়মিত ব্যায়াম করুন, যা মস্তিষ্কের জন্য জরুরি।

• মানসিক চাপ কমান, যা মানসিক রোগ প্রতিরোধ করে।

স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করুন, সুস্থ মস্তিষ্ক বজায় রাখুন!