
ছবি: সংগৃহীত
সোশ্যাল মিডিয়ায় এক ৭৩ বছরের মহিলার পেট থেকে 'স্টোন বেবি' (পাথরের শিশু) পাওয়ার দাবি ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। বলা হচ্ছে, এই ঘটনা ওই বৃদ্ধার CT স্ক্যানের মাধ্যমে সামনে আসে। হেল্থ এক্সপার্টদের মতে, এটি একটি অত্যন্ত বিরল মেডিকেল কন্ডিশন।
বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে কিছু ছবি, যাতে দাবি করা হয়েছে। ৭৩ বছরের ওই মহিলার পেটে ৩০ বছর আগে মৃত এক ভ্রূণ এখন পাথরের রূপ নিয়েছে। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, যখন মৃত ভ্রূণ দেহে দীর্ঘদিন থেকে যায় এবং সেটির চারপাশে ক্যালসিয়াম জমে পাথরের মতো কঠিন হয়ে যায়, তখন তাকে "লিথোপেডিয়ন" বা স্টোন বেবি বলা হয়।
২৫ জুন, 'Non Aesthetic Things' নামে একটি এক্স (X) অ্যাকাউন্ট থেকে CT স্ক্যানের কিছু ছবি শেয়ার করে লেখা হয়, "এই স্ক্যানটি এক ৭৩ বছরের মহিলার, যার দেহে ৩০ বছরের পুরনো ক্যালসিফায়েড ফিটাস পাওয়া গেছে।" এই পোস্ট দ্রুত ভাইরাল হয় এবং বহু মানুষ এর সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করে।
অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, একটি ভ্রূণ কীভাবে পাথর হয়ে মহিলার দেহে থেকে যেতে পারে? এর উত্তর দিতে গিয়ে হেল্থ এক্সপার্টরা জানান, এটি একটি বিরল অবস্থান, যেখানে গর্ভাশয়ের পরিবর্তে ভ্রূণ পেটে বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। যথাযথ রক্ত সঞ্চালন না থাকায় ভ্রূণ মারা যায় এবং শরীর সেটিকে 'ফরেন বডি' ধরে নিয়ে ক্যালসিয়াম জমিয়ে দেয়।
চিকিৎসকরা জানান, লিথোপেডিয়নের সময় শরীর সেই মৃত ভ্রূণকে বের করতে না পেরে নিজেদের প্রতিরক্ষা প্রক্রিয়া সক্রিয় করে। ফলে ভ্রূণের চারপাশে ক্যালসিয়ামের স্তর তৈরি হয়ে সেটি ধীরে ধীরে পাথরে পরিণত হয়। এরকমই একটি ঘটনা ২০১৩ সালে ABC নিউজে প্রকাশিত হয়, যেখানে ৮২ বছরের এক কলম্বিয়ান মহিলার পেটে ৪০ বছর ধরে থাকা একটি স্টোন বেবির সন্ধান মেলে।
যুক্তরাষ্ট্রের কেস মেডিকেল সেন্টারের গাইনোকলজিস্ট ডঃ কিম গার্সি জানান, “এই অবস্থা এতটাই বিরল যে, মেডিকেল সায়েন্সে এখনও পর্যন্ত মাত্র ৩০০টি ঘটনাই রেকর্ড করা হয়েছে।”
স্টোন বেবি বা লিথোপেডিয়ন সাধারণত তখন ধরা পড়ে, যখন কোনও মহিলা পেটের ব্যথা বা অস্বস্তির কারণে এক্স-রে, সিটিস্ক্যান বা আলট্রাসাউন্ড করান। বেশিরভাগ সময় এটি অনেক বছর পরে, বৃদ্ধ বয়সে হঠাৎ অসুস্থতার সূত্র ধরে ধরা পড়ে।
শহীদ