ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২৯ জুন ২০২৫, ১৫ আষাঢ় ১৪৩২

ইসরায়েলের হামলায় বিপাকে আফগান শরণার্থীরা, পালানোর আর কোনো পথ নেই!

প্রকাশিত: ০৫:৩৫, ২৯ জুন ২০২৫

ইসরায়েলের হামলায় বিপাকে আফগান শরণার্থীরা, পালানোর আর কোনো পথ নেই!

ছ‌বি: সংগৃহীত

ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধের উত্তাপে নতুন করে বিপাকে পড়েছেন ইরানে আশ্রয় নেওয়া হাজারো আফগান শরণার্থী। তালেবান শাসনের ভয়ে যারা আফগানিস্তান ছেড়েছিলেন নিরাপত্তার আশায়, তারা এখন তেহরানের আকাশে ইসরায়েলের ক্ষেপণাস্ত্র দেখে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।

৩৪ বছর বয়সী শামসি তেমনই একজন শরণার্থী। এক বছর আগে আফগানিস্তান থেকে পালিয়ে তিনি ইরানের উত্তর তেহরানে আশ্রয় নেন। একটি সেলাই কারখানায় কাজ করে কোনোমতে দিন কাটাচ্ছিলেন। কিন্তু গত শুক্রবার (১৩ জুন) যখন ইসরায়েল তেহরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়, তখন আবারও ভয়ের ছায়া নেমে আসে তার জীবনে।

শামসি জানান, হামলার দিন তিনি কারখানায় কাজ করছিলেন। হঠাৎ বিস্ফোরণের শব্দে ভীত হয়ে ছুটে যান বাসায়। বাড়ি ফিরে দেখেন, তার পাঁচ ও সাত বছর বয়সী দুই মেয়ে টেবিলের নিচে লুকিয়ে আছে। আতঙ্কিত গলায় তিনি বলেন, “তালেবান থেকে বাঁচতে আমরা ইরানে এসেছিলাম। ভাবিনি এখানেও বোমার নিচে পড়তে হবে। এখন কোথাও যাওয়ার উপায় নেই।”

শামসি এখনো ইরানে অনিবন্ধিত। তার হাতে বৈধ কোনো কাগজপত্র নেই, নেই কোনো সরকারি সুরক্ষা। ফলে এমন দুর্যোগে তিনি কোথাও আশ্রয় চাইতেও পারছেন না।

শুধু শামসি নন, ইরানে থাকা বহু আফগান শরণার্থী একই পরিস্থিতির মুখোমুখি। তালেবানের শাসন থেকে পালিয়ে তারা নিরাপত্তার আশায় ইরানে এসেছিলেন। কিন্তু মধ্যপ্রাচ্যের নতুন এই যুদ্ধ পরিস্থিতিতে তারাও হয়ে পড়েছেন সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ও অবহেলিত একটি জনগোষ্ঠী।

বিশ্লেষকরা বলছেন, যুদ্ধের ভয়াবহতা শুধু দুই রাষ্ট্রের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে না। এর আঁচ লাগে নিরীহ শরণার্থীদের জীবনেও। ইরান-ইসরায়েল সংঘাত যত বাড়বে, তত বাড়বে শরণার্থীদের দুর্ভোগও।

এখন শামসিদের প্রশ্ন— “আমরা কোথায় যাব?” এই প্রশ্নের উত্তর এখনও অজানা। যুদ্ধ যখন দোরগোড়ায়, তখন শরণার্থীদের কাছে সত্যিই পালানোর আর কোনো পথ নেই।

সূত্র: আল জাজিরা

এম.কে.

×