
ছবি: জনকণ্ঠ
পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ির মহালছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা. আকেইপ্রু চৌধুরী চিকিৎসা পেশার পাশাপাশি কৃষিক্ষেত্রে এক নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছেন। পার্বত্য এই জনপদের পাহাড়ি এলাকায় সফলভাবে রাম্বুটান চাষ করে তিনি যেমন নিজের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করেছেন, তেমনি অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন স্থানীয় উদ্যোক্তা এবং কৃষকদের।
মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও থাইল্যান্ডসহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার জনপ্রিয় ও সুস্বাদু ফল রাম্বুটান বাংলাদেশে এখনো তেমন পরিচিত নয়। কিন্তু পাহাড়ি অঞ্চলের অনুকূল জলবায়ুতে এই বিদেশি ফলের চাষ যে সম্ভব, তা প্রমাণ করেছেন এই চিকিৎসক।
স্থানীয় উদ্যোক্তা সাবাই মারমা বলেন, “চিকিৎসক আমাদের অনুপ্রেরণা। উনি আমাদের গর্ব। ওনাকে অনুসরণ করেই আগাচ্ছি আমরাও। খুব দ্রুত বাণিজ্যিকভাবে এ ফল বাজারজাত করবো।”
২০২১ সালে বিদেশে বেড়াতে গিয়ে তিনি প্রথমবার রাম্বুটান ফল খান। তখনই তার মনে হয়। সুস্বাদু এই ফলটি যদি আমাদের দেশে চাষ করা যায়, কেমন হয়। সেই চিন্তা থেকেই তিনি বিদেশ থেকে চারা নিয়ে আসেন। প্রথমে কিছু চারা পরীক্ষামূলকভাবে রোপণ করেন। দুই-তিন বছরের মধ্যেই গাছে ফল ধরতে শুরু করে। চার বছরে এসে এ বছর প্রচুর ফলন হয়েছে। আড়াই একর পাহাড়ি জমিতে ২২০টি গাছের মধ্যে ১৮০টি গাছে ভরপুর ফল ধরেছে।
তিনি আরও বলেন, “রাম্বুটান দেখতে যেমন আকর্ষণীয়, খেতেও সুস্বাদু। বাজারে এর ভালো চাহিদা রয়েছে। এই ফল বাজারজাত করার পাশাপাশি দেশের অন্যান্য জায়গাতেও সরবরাহ করা সম্ভব।”
তার এই উদ্যোগ ইতোমধ্যেই আশেপাশের অনেক উদ্যোক্তা ও কৃষকদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। অনেকেই তার বাগান দেখতে আসছেন, পরামর্শ নিচ্ছেন এবং বাণিজ্যিকভাবে চাষের চেষ্টাও করছেন।
মহালছড়ি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. সোহরাব হোসেন বলেন, “রাম্বুটান চাষে এ অঞ্চলে নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলেছে। এ ধরনের ফলের চাষ ছড়িয়ে পড়লে কৃষি অর্থনীতিতে বৈচিত্র্য আসবে। আমাদের পক্ষ থেকে ডা. আকেইপ্রুকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও সহায়তা দেওয়া হবে। পাশাপাশি স্থানীয় কৃষকদের নিয়ে একটি কর্মশালার আয়োজন করার পরিকল্পনাও রয়েছে।”
শহীদ