
ছবিঃ সংগৃহীত
একটি সুস্থ লিভার আমাদের শরীরের সামগ্রিক সুস্থতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি শুধু আমাদের রক্ত ফিল্টার করে না, বরং দেহের বিপাক প্রক্রিয়া, হরমোন নিয়ন্ত্রণ, ও বিষাক্ত পদার্থ দূর করতেও সাহায্য করে। তাই লিভারকে সুস্থ রাখতে আমাদের খাবারের তালিকায় কিছু পুষ্টিকর ফল নিয়মিত রাখা উচিত।
গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজিস্ট ডঃ জোসেফ সালহাব সম্প্রতি ইনস্টাগ্রামে একটি ভিডিওতে এমন ৫টি ফলের কথা বলেন, যেগুলি লিভারকে প্রাকৃতিকভাবে হাইড্রেট করে এবং এর কর্মক্ষমতা বাড়ায়। তিনি ব্যাখ্যা করেন, এই ফলগুলিতে এমন কিছু উপাদান রয়েছে, যা রক্তনালীগুলোকে শিথিল করে এবং লিভারে রক্তপ্রবাহ বাড়িয়ে দেয়। ফলে লিভার পর্যাপ্ত অক্সিজেন ও পুষ্টি পায়, যা তার কার্যক্ষমতা উন্নত করে।
১. ডালিম (Pomegranate)
ডালিমে রয়েছে শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যেমন পিউনিকাল্যাজিন ও এলাজিক অ্যাসিড, যা লিভারে প্রদাহ কমায় এবং কোষগুলোকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে। গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত ডালিম খেলে যাদের লিভার এনজাইম বেশি, বিশেষ করে স্থূলতা বা মেটাবলিক ডিজঅর্ডার রয়েছে, তাদের উপকার হয়।
২. বেরি জাতীয় ফল (Berries)
ব্লুবেরি, স্ট্রবেরি বা ব্ল্যাকবেরির মতো বেরিতে থাকে প্রোঅ্যান্থোসায়ানিডিনস, যা রক্তনালীকে শিথিল করে এবং রক্তপ্রবাহ বাড়ায়। এগুলি লিভারের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে এবং চর্বি জমা প্রতিরোধে সহায়ক।
৩. আঙুর (Grapes)
আঙুরে থাকে পলিফেনল, রেসভেরাট্রল ও ফ্ল্যাভোনয়েড, যা লিভার কোষকে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস থেকে রক্ষা করে। এটি রক্তপ্রবাহ বাড়ায়, ইনসুলিন সংবেদনশীলতা উন্নত করে এবং লিভারে চর্বি জমা কমায়। বিশেষ করে যাদের ডায়েটে চর্বি বেশি, তাদের জন্য আঙুর অত্যন্ত উপকারী।
৪. তরমুজ (Watermelon)
প্রায় ৯২% জল দিয়ে তৈরি তরমুজ দেহকে হাইড্রেট রাখে এবং লিভারকে পরিষ্কার করতে সাহায্য করে। এতে রয়েছে নাইট্রিক অক্সাইড উৎপাদনের উপাদান, যা লিভারের কার্যক্ষমতা বাড়ায় এবং লাইকোপেন, যা শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে।
৫. বিটরুট (Beetroot)
বিটরুটে রয়েছে প্রাকৃতিক নাইট্রেট, যা রক্তনালী সুস্থ রাখে এবং লিভারে রক্ত ও অক্সিজেন সরবরাহ বাড়ায়। এছাড়া এতে থাকে বিটালেইন ও বিটেইন, যা ফ্রি র্যাডিকেলের ক্ষতি থেকে লিভারকে রক্ষা করে এবং কোষ সুস্থ রাখে।
আরও কিছু পরামর্শ:
- এই ফলগুলি ফ্ল্যাক্স সিড বা চিয়া সিডের সাথে খেলে অতিরিক্ত ফাইবার পাওয়া যায়।
- দই বা কেফিরের সাথে খেলে প্রোবায়োটিক উপকার পাওয়া যায়।
- সবসময় ফল ফ্রেশ বা ফ্রোজেন খান, প্রসেসড নয়।
- যদি স্মুদি বানান, তাহলে ব্লেন্ড করুন – জুস করে ছেঁকে ফেললে অনেক উপকারী উপাদান নষ্ট হয়ে যায়।
- একটু হলুদ গুঁড়ো মেশালে লিভার-বুস্টিং প্রভাব আরও বাড়ে।
লিভারকে সুস্থ রাখতে শুধু ফল নয়, সুষম ও পুষ্টিকর খাদ্যাভ্যাস বজায় রাখা খুব জরুরি। প্রতিদিনের ডায়েটে এই ফলগুলো যুক্ত করুন এবং লিভারকে দিন একটুখানি বাড়তি যত্ন।
মারিয়া