
ছবি: সংগৃহীত
বর্তমান যুগে তরুণ ছেলেরা বিভিন্ন অভ্যাস ও জীবনযাত্রার কারণে হরমোনের ভারসাম্যহীনতায় ভুগছে। হরমোনের ভারসাম্যহীনতা শরীর ও মানসিক স্বাস্থ্যের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। আসুন জেনে নেই ছেলেরা কীভাবে তাদের হরমোন নষ্ট করছে এবং এর থেকে বাঁচার উপায়।
অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস
ফাস্টফুড, প্রক্রিয়াজাত খাবার, অতিরিক্ত চিনি ও চর্বিযুক্ত খাবার নিয়মিত খাওয়ার ফলে ইনসুলিন ও টেস্টোস্টেরনের মতো গুরুত্বপূর্ণ হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হয়। এসব খাবার শরীরে প্রদাহ সৃষ্টি করে এবং হরমোন উৎপাদনে বাধা দেয়।
সমাধান: সুষম খাদ্য গ্রহণ করুন, যেমন শাকসবজি, ফলমূল, চর্বিহীন প্রোটিন ও ওমেগা-৩ সমৃদ্ধ খাবার।
অতিরিক্ত স্ট্রেস
দীর্ঘস্থায়ী স্ট্রেস কর্টিসল হরমোনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়, যা টেস্টোস্টেরনের উৎপাদন হ্রাস করে। এতে মানসিক অবসাদ, ক্লান্তি ও যৌন স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটে।
সমাধান: নিয়মিত ধ্যান, যোগব্যায়াম ও পর্যাপ্ত ঘুমের মাধ্যমে স্ট্রেস নিয়ন্ত্রণ করুন।
ঘুমের অভাব
অপ্রতুল ঘুম শরীরের গ্রোথ হরমোন ও টেস্টোস্টেরন উৎপাদনে বাধা দেয়। এটি ক্লান্তি, মেজাজ পরিবর্তন ও ওজন বৃদ্ধির কারণ হতে পারে।
সমাধান: প্রতিদিন অন্তত ৭-৮ ঘণ্টা নিরবচ্ছিন্ন ঘুম নিশ্চিত করুন।
অ্যালকোহল ও ধূমপান
অতিরিক্ত অ্যালকোহল পান ও ধূমপান হরমোন উৎপাদনকারী গ্রন্থিগুলোর কার্যকারিতা নষ্ট করে। এতে লিভার ও কিডনির কার্যক্ষমতা কমে যায়, যা হরমোন ভারসাম্যহীনতার কারণ হয়।
সমাধান: অ্যালকোহল ও ধূমপান পরিহার করুন এবং স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়ে তুলুন।
অতিরিক্ত শরীরচর্চা বা অনিয়মিত ব্যায়াম
অতিরিক্ত ও ভারী শরীরচর্চা বা একেবারে ব্যায়াম না করা, উভয়ই হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করতে পারে। অতিরিক্ত ব্যায়াম শরীরে কর্টিসল বাড়িয়ে দেয়, আর ব্যায়াম না করলে টেস্টোস্টেরন কমে যায়।
সমাধান: সপ্তাহে ৩-৪ দিন নিয়মিত ও পরিমিত ব্যায়াম করুন।
প্লাস্টিকের ব্যবহার
খাবার গরম করার জন্য প্লাস্টিকের পাত্র ব্যবহার বা বোতলজাত পানীয় পান করার ফলে বিসফেনল-এ (BPA) শরীরে প্রবেশ করে, যা এন্ডোক্রাইন সিস্টেমে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
সমাধান: কাচ বা স্টিলের পাত্র ব্যবহার করুন এবং প্লাস্টিক এড়িয়ে চলুন।
পর্যাপ্ত সূর্যালোকের অভাব
ভিটামিন ডি-এর অভাব টেস্টোস্টেরনের মাত্রা হ্রাস করে, যা ক্লান্তি ও মানসিক চাপের কারণ হতে পারে।
সমাধান: প্রতিদিন অন্তত ১৫-২০ মিনিট সূর্যের আলোতে সময় কাটান বা ভিটামিন ডি সম্পূরক গ্রহণ করুন।
ছেলেদের হরমোনের ভারসাম্য রক্ষা করার জন্য স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন অত্যন্ত জরুরি। সুষম খাদ্য, নিয়মিত ব্যায়াম, মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ ও পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করে সহজেই হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখা সম্ভব।
তাবিব