ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৮ ভাদ্র ১৪৩১

স্বাস্থ্য ডিজির অপসারণসহ ২ দফা দাবিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ঘেরাও 

প্রকাশিত: ১৪:০৮, ১৩ আগস্ট ২০২৪

স্বাস্থ্য ডিজির অপসারণসহ ২ দফা দাবিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ঘেরাও 

অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে বিভিন্ন হাসপাতাল-স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত স্বাস্থ্য ক্যাডারের কর্মকর্তারা।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশিদ আলমসহ অধিদপ্তরের দুর্নীতিবাজ সকল কর্মকর্তার অপসারণসহ ২ দফা দাবিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ঘেরাও করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে বিভিন্ন হাসপাতাল-স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত স্বাস্থ্য ক্যাডারের কর্মকর্তারা। 

দ্রুততম সময়ে এসব দাবি মেনে না নিলে বৃহত্তর কর্মসূচিতে যাওয়ার হুমকিও দিয়েছেন তারা। 

মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) বেলা ১১টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ভবনে সরেজমিনে গিয়ে এই চিত্র দেখা গেছে। 

চিকিৎসকদের দাবি, গত ১৫ বছরের শাসনামলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে সীমাহীন অনিয়ম দুর্নীতি হয়েছে। কোটি কোটি টাকার বিনিময়ে কর্মকর্তারা বিক্রি হয়ে অবৈধ নিয়োগ-পদোন্নতি দিয়েছে। তাই আমরা বর্তমান ডিজিসহ সকল দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের অপসারণ চাই। 

চিকিৎসকদের দুই দফা দাবিগুলো হলো- স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডিজিসহ দুর্নীতিবাজ সকল কর্মকর্তাদের দ্রুততম সময়ে অপসারণ করতে হবে। অবৈধভাবে নিয়োগ, পদোন্নতি ও পদায়ন পাওয়া সবকিছু বাতিল করতে হবে। 

বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য সচিব ডা. উম্মে তানিয়া নাসরিন বলেন, এডহক কর্মকর্তাদের এডহক সার্ভিসে অবৈধ স্থায়ীকরণ বাতিলসহ এতোদিন আমরা ৬ দফা দাবিতে আন্দোলন করে আসলেও এখন আমাদের দফা দুইটি। 

প্রথম দফাই হলো দুর্বৃত্তদের চাপের মুখে একদিন পরই শতাধিক অবৈধ পদায়ন বাতিলের সিদ্ধান্ত স্থগিত করে আবারও তাদেরকে বৈধতা দেওয়া স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের পদত্যাগ। 

পাশাপাশি অধিদপ্তরের সকল দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের অপসারণ চাই। আমাদের দ্বিতীয় দাবি হলো, সকল ধরনের অবৈধ পদোন্নতি, নিয়োগ বাতিল করতে হবে। 

তিনি বলেন, দেশের প্রত্যন্ত ইউনিয়ন থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ চিকিৎসা সেবা কেন্দ্র পর্যন্ত পদায়ন হওয়া এই ক্যাডারের প্রায় ৩৫ হাজার কর্মকর্তা দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার মূল মেরুদণ্ড। ক্যাডার সার্ভিস গঠন হওয়ার পর থেকে বিগত প্রায় ৪০ বছর ধরে আমরা দেশের মানুষকে নিরবিচ্ছিন্নভাবে স্বাস্থ্য সেবা প্রদান করে আসছি এবং শত সীমাবদ্ধতা, বৈষম্য ও অপ্রাপ্তি স্বত্বেও আমরা দেশের জনগণকে সেবা প্রদানে কখনো পিছপা হইনি। 

সর্বশেষ দেশের কোভিড ক্রান্তিকালে ৩৯ বিসিএসের কর্মকর্তাসহ ৩৫ হাজার কর্মকর্তা চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত হয়ে প্রায় শতধিক ক্যাডার কর্মকর্তা নিজের জীবন বিলিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু বিগত কিছু বছর যাবত আমরা উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি, সরকারি চাকরীবিধির গুরুতর লঙ্ঘণ ঘটিয়ে ক্যাডার পদসমূহে ভিন্ন নিয়োগবিধির আওতায় নিয়োগপ্রাপ্ত এডহক ও প্রকল্প কর্মকর্তাদের পদায়ন ও পদোন্নতি দেওয়া শুরু করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের কিছু দুষ্কৃতিকারী কর্মকর্তা। 

শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এনেস্থিসিয়া বিভাগের চিকিৎসক ডা. কামরুজ্জামান বলেন, অদ্যবধি প্রায় সহস্রাধিক অবৈধ পদোন্নতি, জনপ্রশাসনের নির্দেশনা অমান্য করে প্রায় ৫ শতাধিক অবৈধ পদায়নসহ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে অনিয়ম-দুর্নীতি চরম আকার ধারন করেছে। আমরা দেখেছি একদল চাকরীজীবী যারা তাদেরই নিয়োগবিধির শর্ত পরীক্ষা ও প্রশিক্ষণ গ্রহন না করে স্থায়ী হয়েছিলো। 

অর্থাৎ তারা প্রথমবার প্রমার্জনা পেয়েছেন, যারা তাদের সমগ্র চাকরীজীবনে কখনো কোনো পরীক্ষা বা প্রশিক্ষণ নেয়নি, যারা বিসিএস অনুত্তীর্ন হয়েও ক্যাডার হয়েছে। এগুলো আমাদের স্বাস্থ্য ক্যাডারের সাথে চরমতম অন্যায়। এই অন্যায় ও জুলুম আমরা মানি না, মানবো না।

 এসআর

×