ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১

মাইগ্রেনের যন্ত্রণা থেকে মুক্তির উপায়

ডা. এস এম জহিরুল হক চৌধুরী 

প্রকাশিত: ০০:৪৬, ১৪ মে ২০২৪

মাইগ্রেনের যন্ত্রণা থেকে মুক্তির উপায়

অতিরিক্ত গরম, প্রখর রোদের তাপ মাইগ্রেনের সমস্যা আরও বাড়িয়ে দেয়

অতিরিক্ত গরম, প্রখর রোদের তাপ মাইগ্রেনের সমস্যা আরও বাড়িয়ে দেয়। যাদের প্রতিদিন রোদে বেরোতে হয়, তারা মাইগ্রেনের সমস্যায় বেশি ভোগেন। সেই সঙ্গেই গরমের কারণে ঘুম না হওয়া, মানসিক চাপ বেড়ে যাওয়া, ডিহাইড্রেশন আরও গুরুতর করে দেয় মাইগ্রেনের সমস্যাকে। তা ছাড়া শরীরে আয়রন, ম্যাগনেশিয়াম ও ভিটামিন ডি-র ঘাটতি হলেও মাইগ্রেনের সমস্যা বেড়ে যায়।
রোদ থেকে ফিরে একবার মাথার যন্ত্রণা শুরু হলে সহজে তো সারেই না, বরং চোখে ব্যথা, ঘাড়ে ব্যথা,৫ গা-বমি ভাব পরিস্থিতিকে আরও অসহনীয় করে তোলে। মাইগ্রেনের সমস্যা দূর করার সবচেয়ে ভালো উপায় হলো কেন মাথা যন্ত্রণা হচ্ছে, সেই কারণ খুঁজে বার করা। জেনে নিন কোন কোন অভ্যাসের কারণে মাইগ্রেনের আশঙ্কা বেড়ে যায়।
ঘুমে অনিয়ম
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দৈনিক অন্তত ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুমাতে হবে। অবশ্য গরমে সেই ঘুম হওয়ার সম্ভাবনা খুব কম। তাই একান্তই না পারলে অন্তত ৬ ঘণ্টা ঘুমান। এমনকি, দিনের পর দিন রাত জাগলে ঘুম কম হয়, এতেও মাইগ্রেনের সমস্যা বাড়বে।
অত্যধিক চিনি খাওয়া
আপনার যদি মাইগ্রেনের সমস্যা থাকে তবে চিনি আছে এমন খাবার এড়িয়ে চলুন। গরমে আমরা সবাই বাজারজাত ঠান্ডা পানীয় খেয়ে থাকি। যা একেবারেই ভালো নয়। কারণ, রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়লে মাইগ্রেনের যন্ত্রণাও বাড়তে পারে।
দীর্ঘ সময় পেট খালি রাখা
গরমে আমাদের খাওয়ায় অনীহা হয়ে থাকে। কিছু খেতেই ইচ্ছা করে না। এই সময় বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নির্দিষ্ট সময় অন্তর টুকটাক কিছু খেতে থাকুন। তবে, তা স্বাস্থ্যকর হতে হবে। দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকলে গ্যাস্ট্রিকের প্রকোপ শুরু হয়। মাইগ্রেন টেনে আনতে গ্যাস্ট্রিকেও দায়ী করা হয়। তাই গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা এড়াতে পেট খালি না রাখাই উচিত। সময়ে সময়ে জল খেতে হবে। স্বাস্থ্য সচেতন হতে হবে।
শরীরে পানির ঘাটতি
গরমের দিনে এমনিতেই ডিহাইড্রেশন সমস্যা হয়। তাই এই ডিহাইড্রেশনের সমস্যা থেকেও কিন্তু মাইগ্রেন হতে পারে। তাই বাইরে বের হলেই সঙ্গে জল রাখুন। জল ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের পানীয় যেমন ডাবের জল, টাটকা ফলের রস খেতে পারেন। তবে সোডাযুক্ত পানীয় এড়িয়ে চলুন।
একটানা কম্পিউটারের দিকে তাকানো
অনেকেই একটানা কম্পিউটারের সামনে বসে কাজ করেন। মাঝে মধ্যে বিরতি না নিলে কিন্তু মাইগ্রেনের সমস্যা বাড়বে। কাজের ফাঁকে ফাঁকে একটু চোখে-মুখে পানির ঝাপটা দিন। বারবার বসার জায়গা থেকে একটু উঠে হাঁটুন।
কীভাবে মাইগ্রেন প্রতিরোধ করবেন
১. মাইগ্রেনে আক্রান্ত ব্যক্তিদের পর্যাপ্ত পরিমাণে পানির পাশাপাশি তরল পান করতে হবে। যেমন, ডাবের পানি, আখের রস ও টাটকা ফলের রস ইত্যাদি।
২. প্রয়োজন ছাড়া রোদে বের হবেন না। তবে খুব দরকারে বের হলে টুপি এবং ছাতা ব্যবহার করতে হবে। এমনকি, সানগ্লাসও ব্যবহার করতে হবে।
৩. পর্যাপ্ত ঘুম মাইগ্রেন প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
৪. পাশাপাশি মেডিটেশন, শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম মানসিক চাপজনিত মাথাব্যথা কমাতে ভূমিকা রাখে। তাই শুরুতেই চিকিৎসক এর পরামর্শ ও সচেতন থাকলে ভালো। 

লেখক : অধ্যাপক (ক্লিনিক্যাল নিউরোলজি) 
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতাল, ঢাকা।
চেম্বার : পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার লি. শাখা-২ শ্যামলী, ঢাকা। ফোন : ০১৯২৭০৭৮৭৬৬, ০১৬৪৫৩০৫৭০৯

×