ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

জরায়ু ক্যানসারের নকল ভ্যাকসিন তৈরির সদস্য গ্রেফতার  

প্রকাশিত: ১৪:২৭, ১৭ মার্চ ২০২৩

জরায়ু ক্যানসারের নকল ভ্যাকসিন তৈরির সদস্য গ্রেফতার  

নকল ভ্যাকসিন তৈরির সদস্যরা

ভ্যাকসিনের তিনটি ডোজ নিলে কখনোই জরায়ু ক্যানসার হবে না- এমন প্রচারণা চালিয়ে গাজীপুরে ছয় হাজারের বেশি নারীর দেহে তিনটি করে নকল ভ্যাকসিনের ডোজ দেওয়া হয়েছে। এসব ভ্যাকসিন তৈরি করা হয়েছে আমদানি নিষিদ্ধ হেপাটাইটিস-বি’র ভ্যাকসিন থেকে।

বাংলাদেশে কয়েক বছর ধরে জরায়ু ক্যানসারের ভ্যাকসিন সেরাভিক্স আমদানি বন্ধ রয়েছে। আর এই সুযোগে হেপাটাইটিস-বি’র ভ্যাকসিনের অ্যাম্পল খুলে অন্তত ১০টি জরায়ু ক্যানসারের নকল ভ্যাকসিন বানিয়ে বিক্রি করেছে একটি অসাধু চক্র।
 
মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের তেজগাঁও বিভাগ রাজধানীসহ পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে বুধবার (১৫ মার্চ) এই প্রতারক চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার মো. হারুন অর রশীদ বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) তার কার্যালয়ে এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন- সাইফুল ইসলাম শিপন, ফয়সাল আহম্মেদ, আল আমিন, নুরুজ্জামান সাগর ও আতিকুল ইসলাম।
 
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার মো. হারুন অর রশীদ জানান, গ্রেফতারের সময় তাদের কাছ থেকে ১ লাখ ৯ হাজার টাকা মূল্যের ১২টি বক্সে মোট ১২০টি হেপাটাইসিস-বি ভাইরাসের টিকা, ২৫ লাখ ৬২ হাজার টাকা মূল্যের হেপাটাইসিস-বি ভাইরাসের টিকা দিয়ে তৈরি ১ হাজার ২৫টি জরায়ু ক্যানসারের নকল সার্ভারিক্স টিকা, একটি সার্ভারিক্স ভ্যাকসিনের অ্যাম্পল প্রস্তুত করার মেশিন, অ্যাম্পলের গায়ে সার্ভারিক্স লেখা লেভেল ৫০ পাতা (প্রতি পাতায় ৪৫টি লেভেল), খালি অ্যাম্পল ১০০টি, অ্যাম্পলের ছিপি ৫০০টি, অ্যাম্পলের কক ৩০০টি এবং একটি প্রাইভেট কার ও একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, মূলত হেপাটাইটিস-বি ভ্যাকসিন একটা নির্দিষ্ট পরিমাণে দেহে পুশ করার পর তা মানবদেহে ইমিউনিটি তৈরি করে। এক ভ্যাকসিন খুলে ১০টি ভ্যাকসিন বানালে এর কোনো কার্যকারিতা থাকে না। 

এছাড়া ভ্যাকসিনের অ্যাম্পল খুলে অন্য অ্যাম্পলে প্রবেশ করানোর সময় নতুন করে এসব ভ্যাকসিনে জীবাণু প্রবেশ করতে পারে। যা মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করছেন মেডিসিন বিশেষজ্ঞরা।

অতিরিক্ত কমিশনার মো. হারুন অর রশীদ বলেন, পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে চোরাই পথে হেপাটাইটিস-বির ভ্যাকসিন জিন ভ্যাক-বি নিয়ে আসে চক্রের সদস্যরা। চোরাইপথে এই ভ্যাকসিনের এক অ্যাম্পল বাংলাদেশে নিয়ে আসতে খরচ হয় ৩৫০ টাকা। একটি অ্যাম্পল খুলে ১০টি অ্যাম্পলে প্রবেশ করানো হয়। নতুন অ্যাম্পলগুলোতে লাগিয়ে দেওয়া হয় জরায়ু ক্যানসারের ভ্যাকসিন সেরাভিক্সের লেভেল।

এমএস

×