
ছবি: সংগৃহীত
পবিত্র ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে ঢাকার কেরানীগঞ্জ উপজেলায় ব্যস্ততা বেড়েছে কামার পল্লীতে। হাতুড়ি পেটানো টুং টাং শব্দে এখন মুখর কামাড় পল্লী। লোহা পুড়িয়ে লাল করে পিটিয়ে দিনরাত ধারালো দা, বটি, ছুরি, চাপাতি তৈরিতে ব্যস্ত কারিগররা।
মঙ্গলবার উপজেলার জিনজিরা ইউনিয়নের তাওয়াপট্টি কামার পল্লী ঘুরে দেখা যায়, কারিগরদের সারা শরীরে ঘাম। লোহা পুড়িয়ে লাল করে পিটিয়ে ধারালো অস্ত্র তৈরিতে ব্যস্ত তারা। কোনোদিকে তাকানোর তো দূরের কথা, খাওয়ার ফুরসতও নেই তাদের। এছাড়াও কোরবানির ঈদে কাজের চাপ বেশি হওয়ায় অনেক মৌসুমি কামারও অস্থায়ী দোকান বসিয়ে দা-ছুরি শান দেওয়ার কাজ করছেন। কামারদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বটি বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায়। আকৃতি ও লোহা ভেদে ৩০০ থেকে ৬০০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে দা। ছুরি প্রতিটি ৫০ থেকে ৩০০ টাকা। চাপাতি কেজি প্রতি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকায়, আর সাধারণ লোহার চাপাতি কেজি প্রতি ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও গরু জবাইয়ের ছুরি প্রতিটি ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা এবং ধার দেওয়ার স্টিল প্রতিটি ৫০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। পুরনো যন্ত্রপাতি শান দিতে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত নেওয়া হচ্ছে।
কারিগর নিতাই সরকার বলেন,"৪০ বছর ধরে এ পেশায় আছি। প্রতি বছরই এ সময়টায় অনেক ব্যস্ত থাকি। দিন যত গড়াবে ব্যস্ততা বাড়বে। এ সময় প্রতিদিন খুব সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কাজ করি। চলবে ঈদের আগের দিন পর্যন্ত। ঈদের আগের দিনে অনেক অর্ডার ফেরত দিতে হয়। কোরবানি ঈদের আগের এক সপ্তাহ ভালো আয় হয়।"
আরেক কামার মনোয়ার মিয়া বলেন,"যত কাজ ততটাকা। ভাত খাওয়ার সময় পাই না। ঈদের তিন দিন আগে থেকে বেশি ব্যস্ততা শুরু হয়।"
কামার সুজন কর্মকার বলেন,"খুব ছোট থেকেই এ কাজ করি। সারা বছর খুব একটা কাজ থাকে না। কোরবানি এলেই কাজ বেড়ে যায়। তাই এ সময়টাতে একটু বাড়তি আয়ের উদ্দেশ্যে দিনরাত পরিশ্রম করি।"
তবে ক্রেতাদের অভিযোগ, ঈদ মৌসুমে ক্রেতা সমাগম বেশি হওয়ায় কামাররা ইচ্ছেমতো দাম হাকাচ্ছেন। অন্য সময়ের তুলনায় প্রত্যেকটা সরঞ্জামের দাম ১০০ থেকে ১৫০ টাকা বেশি নিচ্ছেন।
আরমান