ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২১ মে ২০২৫, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

রাজশাহীর সন্তান ’তানভীর অপুর’ বিশ্বভ্রমণ

তানভীরুল আলম তোহা,কন্ট্রিবিউটিং রিপোর্টার, রাজশাহী

প্রকাশিত: ০০:৪৩, ২১ মে ২০২৫; আপডেট: ০০:৪৯, ২১ মে ২০২৫

রাজশাহীর সন্তান ’তানভীর অপুর’ বিশ্বভ্রমণ

ছবি: সংগৃহীত

অবশেষে স্বপ্ন হলো সত্যি, অ্যান্টার্কটিকা! এভাবেই প্রতিবেদককে নিজের আনন্দের কথা জনাচ্ছেন বিশ্ব পর্যটক তানভীর অপু। যিনি গত ১৯ বছর এই পৃথিবীর পথে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। এ পর্যন্ত ৭ টি মহাদেশ ৯২ টি দেশ ও ৯৩৭ টি শহর ঘুরেছেন এই সুন্দর পৃথিবীতে। 

রাজশাহীর ছেলে তানভীর অপু। ভ্রমণকে খুব ভালোবাসেন তিনি। এখন বসবাস করছেন ফিনল্যান্ডে। ফিনল্যান্ড থেকেই ভ্রমণের গল্প শুরু।

ছোটবেলা থেকেই তানভীর অপুর অন্যরকম একটি বাতিক ছিল। টাকা জোগাড় হতেই বেরিয়ে পড়তেন ঘুরতে। তারই ধারাবাহিকতায় তিনি এ পর্যন্ত ৯২টি দেশের ৯৩৭টি শহর ঘুরেছেন। শুনতে অবাক লাগছে, তাই না? মনে হতে পারে এত টাকা তিনি পান কোথায়? এ প্রশ্নের উত্তরটি সহজ হলেও তার মতো করে দেখানো কঠিন।

তানভীর পরিশ্রম করেন। তিনি খণ্ডকালীন বিভিন্ন পেশায় যুক্ত হন। কখনো পানশালায়, কখনো জাহাজের রেস্তোরাঁয় কাজ করেছেন। তবে কিছুদিন নিজেই একটি রেস্তোরাঁ খুলে বসেছিলেন। তা-ও একসময় গুটিয়ে নিয়েছেন। কারণ টাকা জোগাড় হলেই বেরিয়ে পড়েন ঘুরতে। ঘুরতে গিয়ে তিনি আয়েসী জীবন কাটান না। সেখানে সস্তা হোটেলে রাত কাটান, কম দামি খাবার খান, প্রচুর হাঁটেন।

তানভীর অপুর দেখা প্রথম দেশ এস্তোনিয়া। যেখানে তিনি গিয়েছিলেন বালটিক সাগর পাড়ি দিয়ে।এরপর যান সুইডেন। ২০০৬ সালে শুরু হয় তার যাত্রা। ইউরোপের বিভিন্ন দেশ ঘুরেছেন। এইতো তারপরেই আর পেছনে ফিরে তাকানোর সুযোগ নেই কারণ, ততদিনে ভ্রমণের নেশা বেশ ভালো মতোই ধরে বসেছিল তাকে। তখন ফুটবল বিশ্বকাপের আসর বসেছিল জার্মানিতে। গ্যালারিতে বসে খেলা দেখতে গিয়েছিলেন রুস্তভ শহরে। তখন থেকেই ভ্রমণযাত্রা শুরু, এখনো চলছে।

এত এত শহর ঘোরার পরও সুযোগ পেলেই বাংলাদেশে ছুটে আসেন তানভীর। কারণ বাংলাদেশেই তার শেকড়। ৪২ বছর বয়সী তানভীরের বেড়ে ওঠা রাজশাহীতে। মা মাহমুদা খাতুন সিদ্দিকা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসনিক পদে চাকরি করতেন। বাবা ইব্রাহীম আলী দেওয়ান ছিলেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী পরিচালক। দুই ভাই, এক বোনের মধ্যে সবার বড় তিনি।

উল্লেখ, গত বছরের ৬ ডিসেম্বর উশুয়াইয়াহ বন্দর থেকে ২৭ জন বাংলাদেশী পর্যটক গিয়েছিলেন অ্যান্টার্কটিকায়। তাদের মাঝে ছিলেন তানভীর অপুও। তারা ছিল প্রথম বাংলাদেশী যারা সাউথ জর্জিয়া হয়ে গিয়েছিলেন অ্যান্টার্কটিকায়।

তানভীরের ভ্রমণের মূল লক্ষ্য মানুষের জীবন দর্শন। শুধু দেখাই নয়, মনে-প্রাণে উপলব্ধি করা। জীবন ও শহর নিয়ে তিনি অনেক ছবি তুলেছেন। বাংলাদেশে সেসব ছবির প্রদর্শনীও হয়েছে। এছাড়া ইতোমধ্যে তার ভ্রমণ বিষয়ক একটি বইও বের হয়েছে।

তানভীর অপু বলেন, ‘যতদিন বেঁচে আছি ঘুরবো আর পৃথিবী তরুণদের জানাবো, যাতে তারাও ভ্রমণের প্রতি উৎসাহিত হয়। বিশ্বকে জানার আগ্রহ বাড়ে।’

আরমান

×