
ছবি: সংগৃহীত
গাইবান্ধা জেলার সাদুল্লাপুর উপজেলার ১নং রসুলপুর ইউনিয়নের বটতলার পশ্চিম পাশের ব্রিজের ঠিক পাশেই গড়ে উঠেছে এক মানবেতর সংসার লাভলু পাগলার পলিথিনের ঘর। এই সামান্য পলিথিনের আশ্রয়েই তার স্ত্রী ও তিন বছর বয়সী সন্তান নিয়ে কাটছে প্রতিটি দিন, প্রতিটি রাত। নিদারুণ কষ্টের মাঝে গড়ে ওঠা এই সংসার যেন মানবতার এক চরম পরীক্ষার প্রতিচ্ছবি।
এক চিলতে আশ্রয়ে অমানবিক জীবনযাপন
একটি পাতলা পলিথিন বিছিয়ে তার ওপরেই রাত কাটান লাভলু পাগলা, তার স্ত্রী ও শিশু সন্তান। শীতের হাড় কাঁপানো ঠান্ডা, গ্রীষ্মের তীব্র রোদ কিংবা বর্ষার অবিরাম বৃষ্টি—সব কিছুই তাদের প্রতিনিয়ত গ্রাস করছে। সামান্য ঝড়ো বাতাস এলেই উড়ে যাওয়ার ভয় থাকে তাদের এই সামান্য ঘর।
ভিক্ষাই একমাত্র অবলম্বন
দিনভর পথে পথে ভিক্ষা করেই চলে লাভলু পাগলার সংসার। কখনো দিনে চার-পাঁচ কেজি চাল জোটে, কখনোবা হাতে আসে দু-একশ টাকা। এই অনিশ্চয়তার মধ্যেই চলছে তাদের প্রতিটি দিন, যেখানে আগামীকাল কীভাবে কাটবে তার নিশ্চয়তা নেই।
শিশুটির ভবিষ্যৎ কি অন্ধকার?
লাভলু পাগলার তিন বছরের সন্তানটি এখনো বুঝতে শেখেনি জীবনের কঠিন বাস্তবতা। কিন্তু যে পরিবেশে সে বেড়ে উঠছে, সেখানে তার ভবিষ্যৎ কতটা নিরাপদ? লেখাপড়ার সুযোগ, সুস্থ জীবনযাপন—এসব যেন তার জন্য এক অলীক স্বপ্ন।
স্ত্রী মানসিক ভারসাম্যহীন, দায়িত্ব লাভলুর কাঁধে
লাভলু পাগলার স্ত্রী মানসিকভাবে অসুস্থ। ঠিকমতো কথা বলতে পারেন না, স্বাভাবিক জীবনযাপনও তার পক্ষে কঠিন। একদিকে সংসারের টানাপোড়েন, অন্যদিকে স্ত্রীর অসুস্থতা, সব মিলিয়ে লাভলুর জীবন এক অবিরাম সংগ্রামের গল্প।
একটু সহযোগিতায় বদলে যেতে পারে তাদের জীবন
এমন অমানবিক পরিস্থিতিতে লাভলু পাগলা ও তার পরিবার বেঁচে থাকার জন্য সমাজের সহানুভূতি ও সাহায্যের আশায় রয়েছে। একটি স্থায়ী ছাদের নিচে বাস করা, শিশুটির ভবিষ্যৎ গড়ে তোলা এবং স্ত্রীকে চিকিৎসা করানোর সুযোগ যদি তারা পায়, তবে হয়তো নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন দেখবে এই পরিবারটি।
এখনই সময় সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়ার, যাতে লাভলু পাগলার পরিবার অন্তত মাথার ওপর একটি নিরাপদ ছাদ পেতে পারে, আর তার সন্তান বেড়ে উঠতে পারে সুস্থ স্বাভাবিক পরিবেশে। মানবতার দায়বদ্ধতা থেকেই কি আমরা তাদের পাশে দাঁড়াতে পারি না?
আরমান