লাল সিংহ চড্ডা এবং রক্ষা বন্ধন
বয়কটের ডাক, আমির খানের বিরুদ্ধ মামলা, অদ্বৈত চন্দনকে হাজতে ভরার হুমকি। এসব প্রতিকূলতার মধ্যেও পাঁচ দিনে ‘লাল সিংহ চড্ডার’ বক্স অফিস আয় করেছে ৪৬.২৫ কোটি টাকা। ফলে থমকে গেছে ‘রক্ষা বন্ধন’র আয়। ৭০ কোটি টাকা বাজেটের ছবি স্রেফ গড়াগড়ি খেল বক্স অফিসে। পাঁচ দিনে ‘রক্ষা বন্ধন’র আয় হয়েছে ৩৩.৫ কোটি টাকা।
মুম্বাইয়ের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, আনন্দ এল রাই পরিচালিত ‘রক্ষা বন্ধন’ মুক্তির আগেই ৩৫ হাজার টিকিট আগাম বুক করা হয়েছিল। যার মূল্য ৬৯ লক্ষ টাকা। ফলে ভেবেছিল ছবিতে বিনিয়োগ করা টাকা দ্রুত উঠে আসবে। কিন্তু দ্বিতীয় দিন থেকেই বদলে যায় তাদের ধারণা, এক সপ্তাহে ছয় কোটির বেশি ওঠেইনি। আর ১৫ আগস্ট ঝুলিতে এসেছে ৬.৫ কোটি টাকা।
অন্যদিকে আমির খান প্রযোজিত ও অভিনীত ‘লাল সিংহ চড্ডা’ বক্স অফিসে ধরাশায়ী হলেও ‘রক্ষা বন্ধন’-এর চেয়ে এগিয়ে। এগিয়ে রয়েছে দর্শকের হৃদয়েও।
১৯৯৪ সালের অস্কারজয়ী ছবি ‘ফরেস্ট গাম্প’ অবলম্বনে তৈরি ‘লাল সিংহ চড্ডা’। পঞ্জাবি তরুণ লাল তার সরল মন, শারীরিক প্রতিবন্ধকতা নিয়েই একের পর এক অসাধ্য সাধন করে যায়। ছেলেকে ভরসা জোগায় স্নেহময়ী মা। যদিও প্রতিবাদ উঠেছে প্রতিবন্ধকতা নিয়ে সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়া নিয়ে। বাস্তবে যার ভিত্তি নেই বলে মনে করছেন অনেকে।
‘রক্ষা বন্ধন’-এর মূল সমস্যা চিত্রনাট্যেই বলে মনে করছেন সমালোচকরা। দৃষ্টিকোণ পুরুষতান্ত্রিক। রক্ষণশীল, নারীবিদ্বেষী সমাজব্যবস্থাকে ইন্ধন দিচ্ছে এই ছবি- এমন অভিযোগও উঠেছে। অক্ষয় অভিনীত লালা চরিত্র চার বোনের বড় ভাই। তার একটাই লক্ষ্য চার বোনকে ভালো কারো কাছে বিয়ে দেওয়া। এ দিকে বোনেদের বিয়ে আর হয় না। কালঘাম ছুটে যাচ্ছে লালার। সে নিয়েই কাহিনি চলতে থাকে। লালা তার বোনেদের স্বাস্থ্য নিয়ে টিটকিরি করে। এক জনকে বলে ‘ডাবল ডেকার’ আর এক বোনকে তার গায়ের রঙের জন্য ডাকতে শোনা যায় ‘অমাবস্যার রাত’ বলে। এতে দর্শকও বিরক্ত হয়েছেন। ছবিতে উঠে আসা নারীদের ‘খুঁত’, বিয়ের সময় পণপ্রথার মতো ‘আপত্তিকর’ বিষয় নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন এ কালের দর্শক।
পরিচালক আনন্দ এল রাইয়ের দাবি, এই অন্ধকার দিকগুলো চোখের আড়ালে চলে যাচ্ছে বলেই তিনি টেনে আনতে চেয়েছেন। দর্শকের যাতে অস্বস্তি হয়, তা-ই চেয়েছিলেন। যদিও প্রভাব পড়েছে ঠিক উল্টো।
এমএইচ
