
ছবিঃ সংগৃহীত
বাজেট সঠিকভাবে ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে উল্লেখ করে টাঙ্গাইলের মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ারুল আজীম আখন্দ বলেছেন, আমরা চলতি অর্থবছরে একটি উল্লেখযোগ্য বাজেট বরাদ্দ পেয়েছি। এর একটি বড় অংশ বেতন-ভাতাদির জন্য বরাদ্দ থাকবে। তবে অবশিষ্ট অংশটি যেন শিক্ষার্থীবান্ধব কার্যক্রমে যথাযথভাবে ব্যবহার করা হয়, সেদিকে আমরা অগ্রাধিকার দেব। আমরা চাই এই বাজেট থেকে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সবারই যেন সরাসরি উপকার হয় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক উন্নয়নে এটি কার্যকর ভূমিকা রাখে।
টাঙ্গাইলের মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের বাজেট পাশের পর সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেক্ষাপটে গবেষণায় বরাদ্দ যথেষ্ট কি না জানতে চাইলে অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ারুল আজীম আখন্দ বলেন, আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি এবং গতবারের তুলনায় এবার কিছুটা বেশি বাজেট বরাদ্দ পেয়েছি। এই অর্থ যেন সঠিকভাবে ব্যবহার হয়, তা নিশ্চিত করতে আমরা কাজ করব। যারা প্রকল্প প্রস্তাবনা তৈরি করেন, তাদের কিছু সম্মানী দেওয়া হয়, তবে এ বরাদ্দ আরও বাড়ানো গেলে ভালো হতো। কারণ, পর্যাপ্ত উৎসাহ ও প্রণোদনা ছাড়া নতুন উদ্ভাবন সম্ভব নয়। যদি আমরা আগামী প্রজন্মকে বিজ্ঞাননির্ভর করে গড়ে তুলতে না পারি, তাহলে ভবিষ্যতে আমরা পিছিয়ে পড়ব। তাই গবেষণা ও উদ্ভাবনে বিনিয়োগ বাড়ানো এখন সময়ের দাবি।
টাঙ্গাইলের মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরে মোট ১১৩ কোটি ৭ লক্ষ টাকার বাজেট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। মোট বাজেটের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব আয় ৬ কোটি ৩০ লক্ষ টাকা এবং বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (বিইউজিসি) কর্তৃক বরাদ্দ ১০৬ কোটি ৭৭ লক্ষ টাকা।
বাজেট বিশ্লেষণ করে দেখা যায় পূর্ববর্তী অর্থবছর (২০২৪-২০২৫) বাজেট বরাদ্দ ছিল ১০১ কোটি ৯৮ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা। ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরে নতুন বাজেট ১১৩ কোটি ৭ লক্ষ টাকা, অর্থাৎ মোট বাজেট বৃদ্ধি পেয়েছে ১০.৮৭%।
বাজেটে সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ বৃদ্ধি পেয়েছে প্রাথমিক যানবাহন বাবদ অনুদান খাতে। এই খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি পেয়েছে ৬৬.৬৭ শতাংশ। ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে এই খাতে বাজেট বরাদ্দ ছিল মাত্র ১ কোটি ৯৩ লক্ষ ২০ হাজার টাকা, যা এই অর্থবছরে বৃদ্ধি পেয়ে ৩ কোটি ২২ লক্ষ টাকায় উন্নীত হয়েছে। অর্থাৎ বরাদ্দ বেড়েছে ১ কোটি ২৮ লক্ষ টাকা।
গবেষণা অনুদান বৃদ্ধি পেয়েছে ১৪.৮৫ শতাংশ। ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে এই খাতে বরাদ্দ ছিল ২ কোটি ২৯ লক্ষ টাকা। বর্তমান অর্থবছরে বরাদ্দ হয়েছে ২ কোটি ৬৩ লক্ষ টাকা, অর্থাৎ ৩৪ লক্ষ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে।
পণ্য ও সেবা বাবদ সহায়তা (সাধারণ ও মেরামত) খাতে বরাদ্দ বেড়েছে ৬.২৩ শতাংশ। ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে এ খাতে বরাদ্দ ছিল ২৪ কোটি ৩২ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা। বর্তমানে বরাদ্দ হয়েছে ২৫ কোটি ৮৪ লক্ষ ৩৫ হাজার টাকা, অর্থাৎ ১ কোটি ৫১ লক্ষ ৫৫ হাজার টাকা বেশি।
মোট বেতন বাবদ সহায়তা খাতে বরাদ্দ বেড়েছে ৭.৮৮ শতাংশ। ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে ছিল ৩৮ কোটি ৮৯ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা। বর্তমান অর্থবছরে বরাদ্দ হয়েছে ৪১ কোটি ৯৬ লক্ষ টাকা। ভাতা বাবদ বরাদ্দ হয়েছে ২৯ কোটি ১৩ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা এবং পেনশন খাতে বরাদ্দ করা হয়েছে ১ কোটি ৪৬ লক্ষ টাকা। তবে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অনুদান খাতে ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে বরাদ্দ ছিল ১ কোটি ৪৫ লক্ষ টাকা, যা কমে বর্তমানে ১ কোটি ১৫ লক্ষ টাকায় নেমে এসেছে। অর্থাৎ ৩০ লক্ষ টাকা কম বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
যন্ত্রপাতি অনুদান খাতে বরাদ্দ বেড়েছে ১৯.১৩ শতাংশ। ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে এ খাতে বরাদ্দ ছিল ৩ কোটি ৫ লক্ষ টাকা, যা বর্তমানে বেড়ে হয়েছে ৩ কোটি ৬৩ লক্ষ ৩৫ হাজার টাকা।
প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা খাতে সহায়তা পূর্ববর্তী অর্থবছরে ছিল ৪৬ লক্ষ টাকা, যা বর্তমানে ১ লক্ষ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে ৪৭ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়েছে।
এই অর্থবছরে অন্যান্য অনুদান খাতে ১ কোটি ৭ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। অন্যান্য মূলধন অনুদানে বরাদ্দ করা হয়েছে ৫০ লক্ষ টাকা। এ বাজেটে শিক্ষার্থীপ্রতি ব্যয় ধরা হয়েছে ১ লাখ ৯৯ হাজার ৫২৪ টাকা।
ইমরান