ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১

নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় হবে নন্দন কানন

মো. আশিকুর রহমান

প্রকাশিত: ০০:৫৯, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩

নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় হবে নন্দন কানন

টিকোমা, উদাল, সিভিট কিংবা নাগেশ্বর

টিকোমা, উদাল, সিভিট কিংবা নাগেশ্বর। শদগুলো শুনে কি মনে হয়? এগুলো কিসের নাম? আগে কখনও শুনেছেন বা দেখেছেন কি? আদতে এগুলো গাছের নাম। আরও সুনির্দিষ্টভাবে বলতে গেলে বাংলাদেশের বিরল প্রজাতির কিছু গাছের নাম। এমনই বিভিন্ন প্রজাতির ৭৫৭টি গাছ রাপণের মাধ্যমে ক্যাম্পাসকে নন্দন কানন হিসেবে গড়ে তুলতে উদ্যোগ নিয়েছেন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর। তালিকায় আরও রয়েছে বুদ্ধ নারিকেল, সুলতান-চাঁপা, রক্তন, সুপারি, অশোক, নাগলিঙ্গম, কুরচি, লোহা, গর্জন, শিমুল, পলাশ, আমলকি,  বহেরা, হরতকি, পুত্রঞ্জীব, ঢাকি জাম, লাল সোনাইলের মতো গাছ। প্রশাসনের এই উদ্যোগের মধ্য দিয়ে সবুজ ক্যাম্পাস প্রতিষ্ঠায় বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের দীর্ঘদিনের স্বপ্নপূরণ হতে চলেছে। 

পরিকল্পিত এ বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির প্রতিপাদ্য রাখা হয়েছে ‘গাছ লাগাই, রক্ষা করি’। উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর বলেন, বঙ্গবন্ধু বৃক্ষ রক্ষার প্রতি গুরুত্ব দিয়ে ছিলেন। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘প্রত্যেকে একটি করে গাছ লাগিয়ে তার রক্ষণাবেক্ষণ করুন। আমরা তাঁর দেখানো পথ অনুসরণ করছি। তাঁর আহ্বান থেকেই আমরা এ স্লোগান গ্রহণ করেছি। 
বৃক্ষ রক্ষার প্রতি গুরুত্বারোপ করে উপাচার্য আরও বলেন, গাছ শুধু লাগালেই হবে না, সেগুলো রক্ষাও করতে হবে। কেননা, গাছ লাগানো এখন ফ্যাশনে পরিণত হয়েছে। গাছ লাগিয়ে সেগুলো পরিচর্যার মাধ্যমে রক্ষা করাই বড় চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জ আমাদের নিতে হবে। গাছ রক্ষা করে তাতে ফুল ফোটাতে হবে। নিসর্গপ্রেমী ছাড়া এটি অন্য কেউ ভালো ভাবে জানেন না। 
বৃক্ষরোপণ নিয়ে প্রশাসনের পরিকল্পনা তুলে ধরেন প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর বলেন, আমরা পরিকল্পনা নিয়েছি, এবার যে গাছগুলো লাগানো হবে, অন্তত ৫০ বছর সেই গাছগুলো বাঁচবে। ইটের রক্ষা বেষ্টনী তৈরি করা হচ্ছে, যাতে গাছগুলোকে বিরূপ-পক্ষের হাত থেকে বাঁচানো যায়। এ বিষয়ে সকলের বিশেষ করে ছাত্রছাত্রীদের সহযোগিতা কাম্য। 
তিনি আরও বলেন, আমরা অবয়বগত ও কাঠামোগতভাবে ক্যাম্পাসটিকে একটা নন্দন কানন হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। ভবনগুলোর মধ্যে নৈসর্গিক একটা ছাপ নিয়ে আসা হবে, যাতে প্রাকৃতিক যে বৈশিষ্ট্যগুলো- বৃক্ষ, লতা, গুল্ম, পাখি থাকে সেগুলোর পরিকল্পনা করা ও বাস্তবায়ন করা। বঙ্গবন্ধু স্কয়ার ও চারুদ্বীপ সংলগ্ন দুটো জলাধার নির্মাণ করা হবে, আর পুরোনো পুকুরটিকে দৃষ্টিনন্দন হেরিটেজ কর্নার হিসেবে ঘোষণা করব। আমরা বোটানিক্যাল গার্ডেন নির্মাণ করব। ক্যাম্পাসকে একটি সবুজ নন্দন কানন হিসেবে গড়ে তোলার অংশ হিসেবে পরিকল্পিতভাবে বৃক্ষরোপণ করা হচ্ছে।
বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির আওতায় ইতোমধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ রাসেল কেন্দ্রীয় খেলার মাঠের দক্ষিণ ও পূর্বপাশে বৃক্ষরোপণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রতিটি বৃক্ষ রক্ষার জন্য তৈরি করা হয়েছে ১২৫টি ইটের বেষ্টনী  যা ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে প্রশংসা কুড়িয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সৌন্দর্য বর্ধন কমিটির আহ্বায়ক ও প্রক্টর সঞ্জয় কুমার মুখার্জী জানান, সুপরিকল্পিতভাবে এত সংখ্যক বিরল প্রজাতির বৃক্ষরোপণ আমাদের ক্যাম্পাসে এবারই প্রথম। দীর্ঘমেয়াদী ও টেকসই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে আমরা ক্যাম্পাসজুড়ে বৈচিত্র্যময় গাছ লাগানোর এই কার্যক্রম শুরু হয়েছে। পরবর্তীতে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে এ পরিকল্পিত বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়কে নন্দন কানন হিসেবে গড়ে তুলতে আমরা বদ্ধ পরিকর।

×