ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

অসহায়দের সঙ্গে ঈদের খুশি ভাগাভাগি করলো শিশুরা

প্রকাশিত: ১৭:৫৮, ৩১ মার্চ ২০২৩

অসহায়দের সঙ্গে ঈদের খুশি ভাগাভাগি করলো শিশুরা

সেন্ট যাকোব স্কুলের উদ্যোগে ঈদের খুশি ভাগাভাগি করলো শিশুরা। 

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে সেন্ট যাকোব স্কুলের প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী ফাবিয়ান। অন্যদিনের মত আজ স্কুলে পড়তে আসেনি। মায়ের সঙ্গে এসেছে যারা একটু কষ্টে আছেন এবং আর্থিকভাবে দুর্বল তাদেরকে সাহায্য করতে। ভারি ব্যাগটি কোন রকম হাত ছুঁইয়ে তুলে দেয় সে অসহায়ের হাতে।

এমন অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে ফাবিয়ান বলে, মানুষদেরকে খাদ্য সামগ্রী দিতে পেরে অনেক ভাল লেগেছে। বড় হয়েও এভাবে দুঃখীদেরকে সাহায্য করতে চাই।

অভিভাবক মেহেরুননিসার কোলে ছোট্ট শিশু। সবেমাত্র এ বছর সে স্কুলে ভর্তি হয়েছে। এ বিষয়ে কোন অনুভূতি বোঝাতে না পারলেও তার হাবে ভাবে মুখচ্ছবিতে আনন্দ স্পষ্ট। 
অভিভাবক মেহেরুননিসা জানান, পবিত্র রমজানে এমন উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয়। শিশুদের হাত দিয়ে অসহায় মানুষের হাতে ঈদের ব্যাগ বিতরণ বাচ্চারা খুব উপভোগ করেছে।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে সেন্ট যাকোব স্কুলের উদ্যোগে অসহায় মানুষদের হাতে এভাবেই শিক্ষার্থীরা ঈদের ব্যাগ তুলে দিয়েছে। ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি ও মানবকল্যাণের সঙ্গে আত্মপরিচয় ঘটাতেই এমন অভাবনীয় উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বিদ্যালয়টির পক্ষ থেকে।

সে কারণে শুক্রবার (৩১ মার্চ) সকাল থেকেই স্কুল ফটকে অসহায় মানুষদের ভিড় দেখা গেছে। কেউ এসেছেন হুইল চেয়ারে। কারও হাতে আবার ঝুলি। সবার লক্ষ্য একটিই ঈদের ব্যাগ সংগ্রহ করা। শিশুদের থেকে এমন উপহারের ব্যাগ পেয়ে খুশি অসহায় মানুষগুলোও। প্রাণ ভরে এসব শিশুর জন্য দোয়া করেন। তারা বলেন, এই শিশুরা আরও বড় হোক। মানুষের মত মানুষ হোক।

বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা প্রিয়াংকা রোজারিও জানান, সেন্ট যাকোব একটি ইলিমেন্টারি (প্রাক্-প্রাথমিক) স্কুল। প্লে, নার্সারী, কেজি, প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণি মিলিয়ে ৫টি শ্রেণি আছে। সাড়ে তিন বছর বয়স থেকেই বাচ্চারা ভর্তি হয় এখানে। সব মিলিয়ে প্রায় ২ শতাধিক শিশু এখানে আসা- যাওয়া করে। মূলত ছোট বেলায় মানব কল্যাণে শিশুদের মধ্যে একটি মানস চিন্তার উন্মেষ ঘটাতেই এমন উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। প্রতিটি ব্যাগে ৫ কেজি চাল, ১ কেজি ডাল, ১ লিটার তেল, ১ কেজি চিনি, এক প্যাকেট সেমাই ছাড়াও কিছু ব্যাগে নগদ টাকাও দেয়া হয়েছে।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ মি. ওয়াটসন হালদার বলেন, এটি শুধু মানব সেবা নয়। শিক্ষার্থীদের জন্য একটি প্রশিক্ষণের অংশ। মূলত বাচ্চারাই তাদের অভিভাবকদের থেকে অর্থ নিয়ে অসহায়দের জন্য চাল, ডাল, তেল,  সেমাইসহ আরও অনেক পণ্য কিনে দিয়েয়ে। এর সঙ্গে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও সকল শিক্ষকও আর্থিক সহযোগীতায় এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

মি, ওয়াটসন বলেন, শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য হলো শিক্ষার্থীর মাঝে নৈতিকতা ও মূল্যবোধ জাগ্রত করা। অন্যকে সাহায্য করার মনোভাব শিশুদের মধ্যে গড়ে উঠতে সেই শিক্ষা ছোটবেলা থেকেই শুরু করতে হয়। শুধুমাত্র পুঁথিগত বিদ্যার মধ্যেই সীমা বদ্ধ না থেকে বাস্তব জীবনে তারা প্রতিফলন ঘটাতে পারে সেই লক্ষ্যেই প্রতিবছর এমন কর্মসূচির আয়োজন করা হচ্ছে। 
 

এমএম

×