ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

পাঁচ শিক্ষকের দোষ খুঁজে পেয়েছে তদন্ত কমিটি

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ১৭:২০, ১৮ নভেম্বর ২০২২; আপডেট: ১৭:২২, ১৮ নভেম্বর ২০২২

পাঁচ শিক্ষকের দোষ খুঁজে পেয়েছে তদন্ত কমিটি

প্রশ্নে সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ

উচ্চ মাধ্যমিকের (এইচএসসি) বাংলা প্রথম পত্রের পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে ‘সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ’ ছড়ানোর ঘটনায় পাঁচ শিক্ষকের দোষ খুঁজে পেয়েছে তদন্ত কমিটি। একই সঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে অপরাধের ধরন অনুযায়ী শাস্তির সুপারিশও করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার তদন্ত কমিটির এক সদস্য জনকণ্ঠকে এ তথ্য জানান। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, অপরাধের বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করা হয়েছে। এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ব্যবস্থা নেবে।

জানতে চাইলে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয়ক ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান তপন কুমার সরকার জনকণ্ঠকে বলেন, তারা যে প্রশ্ন করেছেন তা দিয়েই শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিয়েছে। তদন্তে যে তাদের অভিযোগ প্রমাণিত হবে এ নিয়ে সংশয় ছিল না। রিপোর্টে কী এসেছে তা আমি এখনো দেখিনি। মাউশি মহাপরিচালক এ বিষয়ে বলতে পারবেন। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেবে বলে জানান। 

দোষী শিক্ষকদের কী ধরনের শাস্তি হতে পারে, এমন প্রশ্নে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ বলেন, বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের এমপিও বাতিলসহ সরকারী প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের লঘু ও গুরু যে কোন শাস্তি হতে পারে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। 

এর আগে গত ৮ নভেম্বর প্রশ্নপত্রে ‘সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষমূলক’ প্রশ্ন রাখার ঘটনায় জড়িত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তিন সদস্যবিশিষ্ট কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন যশোর শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক এ কে এম রব্বানী। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন বিদ্যালয় পরিদর্শক মোঃ সিরাজুল ইসলাম ও উপ-কলেজ পরিদর্শক মদন মোহন দাশ।

গত ৬ নভেম্বর সারাদেশে এইচএসসির বাংলা প্রথমপত্রের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকা বোর্ডে নাটক সিরাজউদ্দৌলা অংশের ১১ নং প্রশ্নে সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষের বিষয়টি উঠে আসে। এর দুদিন পর গত ৮ নভেম্বর এ ঘটনায় জড়িত যশোর শিক্ষা বোর্ডের পাঁচ শিক্ষককে চিহ্নিত করে শিক্ষামন্ত্রণালয়। বাংলা প্রথম পত্রের বিতর্কিত প্রশ্নটি করেছেন ঝিনাইদহের মহেশপুরের ডা. সাইফুল ইসলাম ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক প্রশান্ত কুমার পাল। আর প্রশ্নপত্রটি পরিশোধনের (মডারেশন) দায়িত্বে ছিলেন নড়াইলের সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজের সহযোগী অধ্যাপক সৈয়দ তাজউদ্দীন শাওন, সাতক্ষীরা সরকারি মহিলা কলেজের সহযোগী অধ্যাপক মো. শফিকুর রহমান, মির্জাপুর ইউনাইটেড কলেজের সহকারী অধ্যাপক শ্যামল কুমার ঘোষ ও কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা আদর্শ কলেজের সহকারী অধ্যাপক  মোঃ রেজাউল করিম।

প্রসঙ্গত, করোনা ও বন্যার কারণে পিছিয়ে যাওয়া এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার প্রথম দিনেই প্রশ্ন বিতর্ক শুরু হয়। বাংলা প্রথমপত্রে সাম্প্রদায়িক উস্কানি ও দ্বিতীয়পত্রে একজন কথাসাহিত্যিককে নিয়ে কটূক্তির কারণে নানা পর্যায়ে চলে সমালোচনা। এছাড়াও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের প্রথম দিনের পরীক্ষা এক ঘণ্টা চলার পর স্থগিত করা হয়। পৃথক তিন ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। বাকি দুই ঘটনার তদন্ত খুব শীঘ্রই প্রকাশ করা হবে।

×