ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২

এনবিআরের প্রাক-বাজেট আলোচনায় বিসিআই

করমুক্ত আয়সীমা ৫ লাখ টাকা করার সুপারিশ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার

প্রকাশিত: ০০:৪৯, ২১ মার্চ ২০২৫

করমুক্ত আয়সীমা ৫ লাখ টাকা করার সুপারিশ

বৃহস্পতিবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সঙ্গে প্রাক-বাজেট আলোচনায় বিসিআইয়ের নেতৃবৃন্দ

ব্যক্তি শ্রেণির করদাতাদের জন্য বার্ষিক করমুক্ত আয়সীমা পাঁচ লাখ টাকার প্রস্তাব করেছে বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজ (বিসিআই)। এ ছাড়া প্রাইভেট কোম্পানির ক্ষেত্রে করপোরেট কর শর্তহীনভাবে ২৫ শতাংশ এবং শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির ক্ষেত্রে তা ২০ শতাংশ করার প্রস্তাব করেছে। বৃহস্পতিবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সঙ্গে প্রাক-বাজেট আলোচনায় বিসিআইয়ের পক্ষ থেকে এই সুপারিশ করা হয়।

বিসিআইয়ের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন সংগঠনের সভাপতি আনোয়ার উল আলম চৌধুরী। এনবিআর সভাপতি আবদুর রহমান খান এতে সভাপতিত্ব করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিসিআইয়ের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও এফবিসিসিআইয়ের সাবেক পরিচালক প্রীতি চক্রবর্তী।

এসময় ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চেয়ারম্যান প্রীতি চক্রবর্তী এনবিআর চেয়ারম্যানকে উদ্দেশ্য করে বলেন, মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান। কিন্তু সরকার এসব হাসাপাতালে বিভিন্ন পর্যায়ে ১০ শতাংশ পর্যন্ত ভ্যাট ও কর নিয়ে থাকে যা গ্রহণযোগ্য নয়। 
তিনি বলেন, মেডিকেল যন্ত্রপাতি আমদানিতে উচ্চহারে ভ্যাট আদায় করা হয়। অথচ কম খরচে চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে হলে এসব যন্ত্রপাতি ভ্যাট মুক্ত সুবিধায় আমদানির সুযোগ দিতে হবে। তিনি আরও বলেন, নারী উন্নয়নয়ে তাদের কর মুক্ত আয়সীমা বাড়াতে হবে। শুধু কর ও ভ্যাটের হার বাড়িয়ে তিনি এর আওতা বাড়ানোর পরামর্শ দেন এনবিআরকে।

বিসিআই তাদের বাজেট প্রস্তাবে বলেছে, ভারতে বার্ষিক করমুক্ত আয়সীমা ১২ লাখ রুপি। মূল্যস্ফীতি ও জীবনযাত্রার ব্যয় বিবেচনায় ২০২৫-২৬ করবছরের জন্য বর্তমান ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের করমুক্ত সীমা ও বিদ্যমান আয়করের হার পুনর্নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে এ সংগঠন। বিসিআই মনে করে, এ দেশে উচ্চ করহার নতুন বিনিয়োগে নিরুৎসাহিত করে। দেশী-বিদেশী বিনিয়োগ বাড়াতে ব্যবসাবান্ধব ও সহনশীল করপোরেট করের হার নির্ধারণ জরুরি।

বাংলাদেশের করপোরেট করহার আশপাশের দেশের তুলনায় অনেক বেশি। বিসিআই কোনো শর্ত ছাড়াই আড়াই শতাংশ হারে কমিয়ে প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানির জন্য ২৫ শতাংশ এবং পাবলিক ট্রেডেড কোম্পানির জন্য ২০ শতাংশ করার প্রস্তাব করেছে বিসিআই। এতে স্থানীয় পর্যায়ে ব্যবসা উৎসাহিত হবে, দেশে বিনিয়োগ বাড়াতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
এনবিআরে জমা দেওয়া বাজেট প্রস্তাবে একাধিক প্রস্তাব করেছে বিসিআই। এরমধ্যে অন্যতম হলো বার্ষিক টার্নওভার ১৫ কোটি টাকার নিচে এমন প্রতিষ্ঠানকে ৮ বছর মেয়াদ পর্যন্ত আয়কর অবকাশ এবং বিশেষ রেয়াতি ১ শতাংশ হারে টার্নওভার কর, ১ থেকে ৩ শতাংশ হারে পণ্যের কাঁচামাল, উপকরণ, মেশিনারিজ ও যন্ত্রপাতি আমদানির সুবিধা দেওয়া, যেসব খাতের বার্ষিক টার্নওভার ৫০ কোটি টাকার নিচে তাদের পণ্য খাতে ৩ শতাংশ ও সেবা খাতে ৫ শতাংশ রেয়াতি হারে মূসক এবং ১ থেকে ৩ শতাংশ হারে পণ্যের কাঁচামাল, উপকরণ, মেশিনারিজ ও যন্ত্রপাতি আমদানির সুবিধা দেওয়া, যাদের বার্ষিক টার্নওভার ৩০০ কোটি টাকার নিচে তাদের পণ্য খাতে ৪ শতাংশ ও সেবা খাতে ৫ শতাংশ রেয়াতি হারে মূসক এবং ১ থেকে ৩ শতাংশ হারে পণ্যের কাঁচামাল, উপকরণ, মেশিনারিজ ও যন্ত্রপাতি আমদানির সুবিধা দেওয়া, যাদের বার্ষিক টার্নওভার ৩০০ কোটি টাকার ওপরে তাদের ওপর সাধারণভাবে প্রযোজ্য মূসকের হার এবং ১ থেকে ৩ শতাংশ হারে পণ্যের কাঁচামাল, উপকরণ, মেশিনারিজ ও যন্ত্রপাতি আমদানির সুবিধা দেওয়া।

×