এস আলম গ্রুপ
সিঙ্গাপুরের আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (এফআইইউ) বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) কাছে এস আলম গ্রুপ ও এর মালিকদের দেশে-বিদেশে থাকা সম্পদের বিস্তারিত তথ্য জানতে চেয়েছে।
দ্বীপ রাষ্ট্রটির আর্থিক গোয়েন্দা বিভাগ এফআইইউ সম্প্রতি বিএফআইইউয়ের কাছে একটি ই-মেইল পাঠিয়েছে। এ ব্যাপারে গ্রুপটির বিস্তারিত তথ্য সিঙ্গাপুরের কাছে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা বিভাগ বিএফআইইউয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা এস আলম গ্রুপ ও এর মালিকদের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য প্রস্তুত করছি এবং সেই তথ্য সিঙ্গাপুরের ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের কাছে পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছি।
বিএফআইইউ-এর একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, সিঙ্গাপুরের আর্থিক গোয়েন্দা বিভাগসহ বিভিন্ন দেশের গোয়েন্দা সংস্থাকে মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসী কর্মকা-ে অর্থায়ন সংক্রান্ত তথ্য পাঠানো আমাদের দায়িত্ব।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কয়েকটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনের পর সিঙ্গাপুরসহ বিদেশে এস আলমের বিপুল সম্পদের তথ্য প্রকাশ্যে আসে।
এসব প্রতিবেদনে বলা হয়, এস আলম গ্রুপের মালিক সাইফুল আলম সিঙ্গাপুরে প্রায় এক বিলিয়ন ডলারের ব্যবসা সা¤্র্রাজ্য গড়ে তুলেছেন।
গত এক দশক ধরে সিঙ্গাপুরে সাইফুল আলম হোটেল, বাড়ি, রিটেইল স্পেসসহ অন্যান্য সম্পত্তি কিনেছেন এবং সাইফুল আলম বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি ছাড়াই বিদেশে ব্যবসা করেছেন।
বাংলাদেশে এস আলম গ্রুপ ছয়টি ব্যাংক ও একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান নিয়ন্ত্রণ করত। তবে গত ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের মুখে পদত্যাগ করে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পর এস আলম গ্রুপ অর্ধডজন ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ হারায়। বাংলাদেশ ব্যাংক এসব ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করেছে।
অভিযোগ আছে, এস আলম গ্রুপ ওই ব্যাংকগুলো থেকে এক লাখ কোটি টাকার বেশি ঋণ নিয়েছে। বিতর্কিত এস আলম গ্রুপের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে বর্তমান সরকার, বাংলাদেশ ব্যাংক, বিএফআইইউ ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
বিএফআইইউ ব্যবসায়ী গ্রুপটির সঙ্গে সম্পৃক্ত বেশ কয়েকজনের ব্যক্তিগত ব্যাংক হিসাব জব্দ করেছে। তবে গত ১২ সেপ্টেম্বর এস আলম গ্রুপ বিভিন্ন ব্যাংক হিসাব জব্দের কারণে ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে আর্থিক, সামাজিক ও আইনি সহায়তা দিতে সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতি অনুরোধ জানায়। এরপর কয়েকটি ব্যাংক এস আলম গ্রুপের ব্যবসায়িক হিসাব আনব্লক করছে বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।