ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১

রিহ্যাব নির্বাচনে বারবার ভেন্যু পরিবর্তনে সুষ্ঠু ভোট নিয়ে সংশয়

প্রকাশিত: ২২:২১, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

রিহ্যাব নির্বাচনে বারবার ভেন্যু পরিবর্তনে সুষ্ঠু ভোট নিয়ে সংশয়

রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব)।

আবাসন ব্যবসায়ীদের সংগঠন রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (রিহ্যাব) নির্বাচন হতে যাচ্ছে দীর্ঘ প্রায় এক যুগ পর। কিন্তু এই নির্বাচনের জন্য বার বার পরিবর্তন করা হচ্ছে ভোটের ভেন্যু। আর এই ভেন্যু পরিবর্তনের ফলে নির্বাচনে সুষ্ঠু ভোট গ্রহণ নিয়ে সংশয় দেখা গিয়েছে রিহ্যাবের সদস্যদের মাঝে। 

রিহ্যাবের নির্বাচনে ভোট গ্রহণের জন্য প্রথমবার ভেন্যু ঠিক করা হয়েছিল বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র। পরে সেই ভেন্যু পরিবর্তন করে গুলশান শুটিং ক্লাবে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে বাংলাদেশ শুটিং স্পোর্টস ফেডারেশনের নির্বাহী কমিটির যুগ্ম সম্পাদক ইন্তেখাবুল হামিদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় আপত্তি ওঠে। পরে সেই ভেন্যুও পরিবর্তন করে ১৪ ফেব্রুয়ারি আনা হয় খামারবাড়ির কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (কেআইবি) মিলনায়তনে।

এদিকে, ভোট গ্রহনের জন্য কেআইবি মিলনায়তন ঠিক করা হলেও এই ভেন্যু নিয়ে প্রশ্ন তোলেন দুই প্যানেলের নেতারা। তারা স্হান পরিবর্তনের জন্য নির্বাচন পরিচালনা বোর্ডর চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত আবেদন জানানো হয়। আবেদনে বলা হয়, এই ভেন্যুতে সুষ্ঠু ভোট করা সম্ভব না। এছাড়া কর্যদিবসে এই এলাকায় প্রচন্ড জ্যাম থাকে।জ্যামের কারনে ভোটার উপস্হিতি কম হবে।নিরাপত্তাও বিঘ্নিত হতে পারে। তারা পাঁচ তারকা হোটেলকে ভেন্যু করার অনুরোধ জানান। আবেদন অনুযায়ী নির্বাচনে চতুর্থ দফায় ভেন্যু পরিবর্তন করে হোটেল র‍্যাডিসন ব্লু ওয়াটার গার্ডেন করা হয়। সে অনুযায়ী হোটল কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি দেওয়া হয়। হঠাৎ করে গত বৃহস্পতিবার অদৃশ্য কারনে আবার ভেন্যু পরবর্তন করে কেআইবিতে নেয়া হয়েছে। এই পরিবর্তনে নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার হবে কিনা এনিয়ে ভোটারদের মধ্যে আতংক দেখা দিয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রিহ্যাবের প্রশাসক হিসেবে দায়িত্বরত বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব জান্নাতুল ফেরদৌস জনকণ্ঠকে বলেন, ‘রিহ্যাব নির্বাচনে ভেন্যু পরিবর্তনে কারো মাঝে কোনো ধরণের প্রভাব পরবে না। শিডিউল অনুযায়ী এই নির্বাচনটি আমরা সম্পন্ন করতে যাচ্ছি। আশা করছি খুব সুন্দরভাবে রিহ্যাব নির্বাচনটি আমরা শেষ করতে পারবো।’

রিহ্যাব নির্বাচনে এবার চারটি প্যানেল ভোটের লড়াইয়ে প্রতিদ্বন্ধিতা করছে। নির্বাচনী তফশিল ঘোষণার পর তিনটি প্যানেল মাঠে সক্রিয় থাকলেও প্রভাবশালীদের দেন দরবারে হঠাৎ করেই আরেকটি প্যানেল ভোটের লড়াইয়ে আবির্ভূত হয়েছে। আর এতে করে প্রার্থীদের একটি অংশ অন্য দুটি প্যানেল থেকে এসে নতুন এই প্যানেলে অন্তর্ভূক্ত হচ্ছেন। সংগঠনটির সাধারণ ভোটাররা বিষয়টিকে ভালভাবে দেখছেনা বলে জানা গেছে। ভোটারদের মাঝে এটি নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে। সংগঠনটিতে ২৯ পদের বিপরীতে প্রার্থী হয়েছেন ৯৩ ব্যবসায়ী আর ভোট দিবেন ৪৭৬ জন সদস্য। এরমধ্যে ঢাকার ২৯ পরিচালক পদের বিপরীতে চারটি প্যানেল থেকে ৮৬ প্রার্থী আছেন। আর চট্টগ্রামের তিনটি পরিচালক পদের বিপরীতে আছেন সাতজন প্রার্থী। সব প্রার্থী এখন ভোটের জন্য গণসংযোগে রয়েছেন। 

প্যানেল চারটি হচ্ছে- সংগঠনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও জাপান গার্ডেন সিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. ওয়াহিদুজ্জামানের নেতৃত্বাধীন আবাসন ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদ, সেঞ্চুরি রিয়্যালটির চেয়ারম্যান এম জি আর নাসির মজুমদারের নেতৃত্বে ডেভেলপারস ফোরাম, রিহ্যাবের সাবেক সহসভাপতি নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে নবজাগরণ প্যানেল এবং সাবেক জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ও হামিদ রিয়েল এস্টেট কনস্ট্রাকশনের এমডি ইন্তেখাবুল হামিদের নেতৃত্বে জয় ধারা নামে একটি প্যানেল হয়েছে। ইন্তেখাবুল হামিদ বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের ভাই।

উল্লেখ্য, রিহ্যাবের এই নির্বাচন গত বছরের সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। সেই নির্বাচনের কমিশন গঠন এবং ভোটার তালিকায় অনিয়ম নিয়ে পাল্টাপাল্টি মামলার ঘটনাও ঘটে। একপর্যায়ে নির্বাচন স্থগিত হয়। এ ছাড়া উচ্চ আদালতের নির্দেশে স্থগিত হয় সংগঠনটির সব ব্যাংক হিসাব। একই সঙ্গে নভেম্বরের শেষ দিকে রিহ্যাবের তৎকালীন কমিটির বর্ধিত মেয়াদ স্থগিত করে প্রশাসক বসায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এরপর নতুন করে নির্বাচন কমিশন গঠন ও তফসিল ঘোষণা হয়। আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (রিহ্যাব) এর ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

এম হাসান

×